Logo
Logo
×

অন্যান্য

ইন্টারনেট বন্ধ নিয়ে পলকের যত কথা, আসল তথ্য এলো তদন্ত প্রতিবেদনে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৩২ পিএম

ইন্টারনেট বন্ধ নিয়ে পলকের যত কথা, আসল তথ্য এলো তদন্ত প্রতিবেদনে

জুনাইদ আহমেদ পলক। ফাইল ছবি

ইন্টারনেট বন্ধ নিয়ে তৎকালীন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক নানা কথা বললেও অন্তর্বর্তী সরকারের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে আসল তথ্য। 

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত ১৮ জুলাই প্রথম দফায় সারা দেশে ইন্টারনেট শাটডাউন করা হয়েছিল তৎকালীন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদের নির্দেশনায়। আর মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিল ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালকের নির্দেশে।

পলক ইন্টারনেট বন্ধ নিয়ে ডেটা সেন্টার পুড়ে যাওয়াসহ নানা গল্প ফেঁদেছিলেন। মূলত এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। পলক নিজে ও বিটিআরসি এবং এনটিএমসি ইন্টারনেট বন্ধে জড়িত। 

মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের নির্দেশনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রাথমিকভাবে এ তথ্য পেয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১৫-১৬ জুলাই সময়কালে মোবাইল ইন্টারনেট ও ১৮ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত এবং ৫ আগস্ট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ ও চালু করার বিষয়টি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রশাসনিক অনুমোদন ব্যতিরেকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের মৌখিক নির্দেশক্রমে বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদের নির্দেশনায় সম্পন্ন করা হয়। অন্যদিকে ১৭ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত এবং ৫ আগস্ট মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ও চালু করার বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) নির্দেশনায় সম্পন্ন করা হয়।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায় যে, ওই সময়ে ডাটা সেন্টারে আগুন লাগার সঙ্গে ইন্টারনেট বন্ধের কোনো সম্পর্ক ছিল না। ইন্টারনেট বন্ধের সঙ্গে ডাটা সেন্টারে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি সম্পৃক্ত করে প্রচারণার মাধ্যমে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জাতির সঙ্গে মিথ্যাচার ও প্রতারণা করেছেন। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত চলমান।’

ইন্টারনেট বন্ধ নিয়ে পলকের যত কথা
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারা দেশকে ইন্টারনেটবিহীন করে রাখার বিষয়ে নানা কথা বলেন তৎকালীন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ডেটা সেন্টারে আগুন, সাবমেরিন কেবলের তার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ নানা বক্তব্য দেন তিনি।

এ ছাড়া তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে তখন জনগণের মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়েছিল, ‘সন্ত্রাসীদের আগুনের কারণে ডেটা সেন্টার পুড়ে যাওয়া এবং আইএসপির তার পুড়ে যাওয়ার কারণে সারা দেশে ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত, মেরামত করতে সময় লাগবে।’

পরিস্থিতির প্রয়োজনীয়তায় ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে: প্রতিমন্ত্রী পলক

এরপর বন্ধ করা হয় মোবাইল ইন্টারনেট। তাতে সমালোচনা শুরু হলে ১৮ জুলাই প্রতিমন্ত্রী পলক বলেছিলেন, জাতীয় ও নাগরিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে। তখন তিনি এও বলেছিলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো সহযোগিতা করলে সরকারকে কঠোর অবস্থানে যেতে হতো না।

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে পলক বলেছিলেন, ১৮ জুলাই বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অগ্নিসংযোগের কারণে মহাখালীতে অবস্থিত ডেটা সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে। তিনি সারা দেশে শত শত কিলোমিটার ফাইবার কেবল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। এ ছাড়া গত ২৩ জুলাই মহাখালীতে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, অগ্নিসংযোগের কারণে ডেটা সেন্টার পুরোপরি বন্ধ হয়ে যায়। তখন তারা ইন্টারনেট বন্ধ করতে বাধ্য হন।

তবে ২৮ জুলাই পলক জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ পুরোপুরি ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন ছিল না। সরকারের কেপিআইভুক্ত যেসব প্রতিষ্ঠান ও জরুরি সেবা রয়েছে, সেখানে সব সময়ই ইন্টারনেট চলমান ছিল।

ইন্টারনেট বন্ধ ছাড়াও সামাজিক যোগযোগমাধ্যম টানা ১৩ দিন বন্ধ ছিল। এ নিয়ে পলকের ভাষ্য ছিল, ফেসবুক কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল আচরণ ও দেশের আইন মেনে চললে চালু হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম