Logo
Logo
×

অন্যান্য

ভারতে প্রধানমন্ত্রীর সফর, কী কথা হলো জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৪, ১০:৪২ পিএম

ভারতে প্রধানমন্ত্রীর সফর, কী কথা হলো জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে দেশটিতে দুদিনের সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দর ত্যাগ করে এবং ফ্লাইটটি রাত ৮টা ২৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

ভারতে সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। এরপর স্বাক্ষরিত হয়েছে ১০টি সমঝোতা স্মারক। যার মধ্যে ৩টি সমঝোতা নবায়ন করা হয়েছে৷ হায়দরাবাদ হাউসে দুই দেশের সরকার প্রধানের বৈঠকে এই সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে দুই দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরের বিষয়ে গণমাধ্যমকে ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক স্বার্থের অনেক বিষয় রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ৫৪টি অভিন্ন নদীর যৌথ ব্যবস্থাপনা, পানি বণ্টন, কনেকটিভিটি, বাণিজ্য, নিরাপত্তা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, ভারত থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের জন্য কোটা প্রবর্তন, বাংলাদেশিদের জন্য দ্রুত চিকিৎসা এবং অংশীদারিত্বের উন্নয়ন।

বৈঠকে গত ১৫ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং গত ১০ বছরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার ও নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাওয়ায় উভয়পক্ষই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘উভয়পক্ষই সম্পর্ককে আরও উন্নত করতে তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন’।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্য হওয়ার জন্য ভারতের কাছে সমর্থন চেয়েছে। তিনি বলেন, যদি ব্রিকস নতুন সদস্য বা অংশীদার নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আমরা ব্রিকসের অংশ হতে চাই। এই লক্ষ্যে ভারতের কাছে সমর্থন চেয়েছি (প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনার সময়)।

উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর গ্রুপ ব্রিকস (বিআরআইসিএস) এর সংক্ষিপ্ত রূপটি হলো ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। নদীগুলোর জন্য যৌথ নদী ব্যবস্থাপনা গঠনের বিষয়টি প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যৌথ নদী ব্যবস্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করতে আমাদের সাহায্য করতে পারে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভুটান ও নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে প্রস্তুত এবং এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ভুটানের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়েছে।বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছে এবং ভারত খুবই ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।

হাছান বলেন, শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনই যথেষ্ট নয়, বিদ্যুৎ বিতরণের জন্য ট্রান্সমিশন লাইনেরও প্রয়োজন হয়। ভারত বর্তমানে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ করছে এবং এ প্রান্তে বাংলাদেশকে ট্রান্সমিশন লাইন থেকে সুবিধা পাবে।

সীমান্ত হত্যার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত উভয়েই সীমান্ত হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে রাজনৈতিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। উভয় দেশই সীমান্তে হত্যাকাণ্ড কমাতে কাজ করছে।

তিনি বলেন, তারা (ভারত) পেঁয়াজ, তেল, গম এবং চিনির মতো প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের জন্য কোটা চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা এই উদ্দেশ্যে একটি নির্দিষ্ট কোটা চেয়েছি। কারণ তারা যেন বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় জিনিস রপ্তানি বন্ধ না করে।

এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিস্তা প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারত বাংলাদেশকে সহায়তা করার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, অন্যান্য দেশও এ বিষয়ে তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে এবং উভয় দেশের কারিগরি কমিটি বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসবে। ভারত এ ব্যাপারে চীনকে নিয়ে কোনো আপত্তি জানায়নি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ ভারতের কাছে সাহায্য চেয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ লক্ষ্যে চীনকে ভূমিকা রাখতে হবে।

উত্তরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি চীন সরকারের কাছে তুলে ধরবেন। কারণ তিনি শিগগিরই চীন সফরে যাচ্ছেন বলে জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মেডিকেল ভিসা প্রদানের সময় কমিয়ে বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় মেডিকেল ভিসা নিয়ে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের বিষয়টি তিনি (নরেন্দ্র মোদি) নিজেই সামনে এনেছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশিরা বর্তমানে মেডিকেল ভিসা পেতে দীর্ঘ সময় লাগে বলে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সমস্যার সমাধান করতে বলেছেন। সমস্যা সমাধানের জন্য ভারত তাদের সফটওয়্যার আপডেট এবং ই-ভিসা ইস্যু করার জন্য কাজ করছে।

ব্রিফিংয়ে ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম