মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিকদের মৃত্যু নিয়ে যা বললেন প্রতিমন্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৪, ০৫:২৮ পিএম
মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা। এ নিয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ-জার্মান কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠানে জাপানগামী ২৫ জন কর্মীর হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেওয়া হয়।
এ সময় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল আলম, বিএমইটি’র মহাপরিচালক সালেহ আহমেদ মোজাফফর, বাংলাদেশ-জার্মান কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ফৌজিয়া শাহনাজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিকদের হায়াত-মউত আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের হাতে। শ্রমিকদের নিরাপত্তা রক্ষার্থে বর্তমান সরকার অনেক আন্তরিক। আমাদের মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া অ্যাম্বাসিও (দূতাবাস) কাজ করে যাচ্ছে।’
মাত্র ৫ হাজার ১৫০ টাকা খরচে সরকারিভাবে জাপানে দক্ষ কর্মী যাচ্ছে। এ খরচে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ২৫ জন টেকনিক্যাল ইন্টার্ন টোকিওর উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন।
তিনি জানান, চলতি বছর এ পর্যন্ত জাপানি ভাষায় পারদর্শী ৪৬ জন কর্মী জাপান গেছেন, যা ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ২০৮ জন।
অবৈধপথে বিদেশগামীদের তথ্য প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে নেই জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী শফিকুর বলেন, ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে নিহত বাংলাদেশিদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেবে মন্ত্রণালয়।
এ সময় মালয়েশিয়ায় কর্মী যেতে না পারার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২৪ জুন তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
জাপানগামী টেকনিক্যাল ইন্টার্নদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা এককেকজন দেশের প্রতিনিধি, বাংলাদেশের অ্যাম্বাসেডর। আপনাদের কাজ, চলাফেরা, ব্যবহারে দেশের সুনাম হবে। খারাপ কাজ করলে নিজের, পরিবার, দেশের দুর্নাম।
জাপানগামী টেকনিক্যাল ইন্টার্নরা বাংলাদেশের সুনাম বয়ে আনবে প্রত্যাশা করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেশের সুদিন-দুর্দিনে মানুষের পাশে থাকবেন। বিনা খরচে, বৈধভাবে জাপানে যাচ্ছেন, বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাবেন। আপনাদের রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যারা বিদেশ যেতে চায় তাদের জন্য আপনারা অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবেন। আপনারা তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করবেন, যাতে সবাই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ হয়ে বিদেশে যায়।
বিএমইটি’র মহাপরিচালক সালেহ আহমেদ মোজাফফর বলেন, যাদের ভাষাগত যোগ্যতা আছে তারা ইন্টার্ন হিসেবে বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় ইন্টার্ন করে দক্ষতা অর্জন করে। ৩ বছরের সফল ইন্টার্ন শেষে জাপানি কোম্পানিতে ৫ বছরের জন্য দক্ষ কর্মী হিসেবে কাজ করতে পারবে। এই ৫ বছর শেষ হলে সারাজীবন দক্ষ কর্মী হিসেবে কাজ করতে পারবে সে সুযোগ রয়েছে।
সভায় জানান হয়, এ প্রোগ্রামের আওতায় বিএমইটির মাধ্যমে ইতোপূর্বে ৫৮৪ জন টেকনিক্যাল ইন্টার্ন (কর্মী) সম্পন্ন করে বিনা অভিবাসন ব্যয়ে জাপানে গেছেন। তারা জাপানের বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে জাপানের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কাজ করে দক্ষতা অর্জন করেছেন। বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর মাধ্যমে এ দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিনা খরচে আজ (২০ জুন) আরও ২৫ জন টেকনিক্যাল ইন্টার্ন (কর্মী) জাপানে যাবেন।