রিমালের তথ্য দিতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের গড়িমসি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম
ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি তথ্য প্রদানে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো গড়িমসি করছে। ক্ষয়ক্ষতি তথ্য না পাওয়ায় পুনর্বাসন সংক্রান্ত কোনো সুপারিশ প্রণয়ন করা যাচ্ছে না।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৯ জুন রিমালের আঘাতে ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করার কথা ছিল। তথ্য না আসায় তা দুদিন পিছিয়ে মঙ্গলবার নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সভায় বেশ কিছু মন্ত্রণালয় ও বিভাগের তথ্য পাওয়া যায়নি। ফলে ক্ষতির পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রম গ্রহণের সুপারিশ প্রণয়ন পিছিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সভাপতি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য না করে এখন কথা বলব না বলে জানান।
মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো তথ্য না দিলে আমরা কি করতে পারি। তারা আরও জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাজ জরুরি সহায়তা, উদ্ধার ও চিকিৎসাসেবা দেওয়া। এখনতো পুনর্বাসন করার সময়। যার ক্ষতি সে এগিয়ে না এলে উপযাচক হয়ে কিছু বললে কু-তর্ক সৃষ্টি হবে।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় নতুন কিছু তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে রিমালে মারা গেছেন ১৮ জন। আহত হয়েছেন ২ হাজার ৫০৩ জন। আগে মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেলেও এবার আহত ব্যক্তির সংখ্যা জানা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৮১৫ জন। ৩৩ লাখ ৭৫ হাজার ৫৯৯ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। ২০টি জেলা আক্রান্ত হয়েছে।
আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় জানানো হয় কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রায় এক হাজার ৫৯ কোটি ৫০ লাখ ৯৮ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইতঃপূর্বে জানানো হয়েছে প্রায় দেড় লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। সেতু বিভাগের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যে বলা হয়েছে, তাদের ৫০০ এমএম সিএফডি রিগ্যাস ক্ষমতা সম্পন্ন ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সভায় জানানো হয়, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ১ কোটি ৮৩ লাখ ৮৭ হাজার ১২৮ টাকা ক্ষতি হয়েছে। একটি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সীমানা দেওয়াল ভেঙে গেছে। আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সিং ডরমেটরির জানালার কাচ ভেঙে গেছে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের ১ কোটি ৬৪ লাখ ৯০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় জানানো হয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ২২৮ কোটি ১২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে বাঁধ ভেঙে গেছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ক্ষতি হয়েছে ৫৩ কোটি ৭৮ লাখ ৬৮ টাকা।
বৈঠকে উপস্থিত একজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, প্রায় ১৭ দিন আগে রিমাল আঘাত হেনেছে, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এখনও তথ্য দিয়ে সহায়তা না করা দুঃখজনক। তথ্যের অভাবে কোথাও কোনো বরাদ্দ দেওয়া যাচ্ছে না। অথচ সাধারণ মানুষ ঠিকই কষ্ট করছেন।