৩১ মে থেকে মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মী নিয়োগ বন্ধ
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৪, ১০:৪৫ পিএম
মালয়েশিয়া আগামী ৩১ মে থেকে বাংলাদেশসহ সব বিদেশি কর্মী নিয়োগ বন্ধ করবে। ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাশিম এ কথা জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ ১৫টি সোর্স কান্ট্রি থেকে কর্মী নিয়োগ করে মালয়েশিয়া। এই ডেডলাইনের পর কোনো দেশ থেকেই কর্মী নেবে না তারা। অবৈধ বিদেশি কর্মী নিয়ন্ত্রণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর ভবিষ্যতে চাহিদার ভিত্তিতে বাংলাদেশসহ ১৫টি উৎস দেশ থেকে কর্মী নেবে। মালয়েশিয়া অভিবাসন ব্যয় কমানোর পদক্ষেপ গ্রহণে বদ্ধপরিকর। স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নৈতিক মানদণ্ড বজায় রেখে কর্মী নিয়োগে মালয়েশিয়া অঙ্গীকার করেছে।
হাইকমিশনার বুধবার রাজধানীর বারিধারার একটি হোটেলে কূটনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ডিকাবের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এই মন্তব্য করেন। ডিকাব সভাপতি নূরুল ইসলাম হাসিব ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
হাইকমিশনার হাজনাহ বলেন, বিদেশি কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আরও নিয়ম-শৃঙ্খলা আনার লক্ষ্যে ৩১ মে থেকে এটা বন্ধ করা হচ্ছে। এখন ওপেন সিক্রেট যে, মালয়েশিয়ায় অনেক অবৈধ বিদেশি অভিবাসী রয়েছেন। তারা সবাই যে বাংলাদেশি কর্মী এমন নয়। বরং ১৫টি সোর্স দেশ থেকেই এসব অবৈধ অভিবাসীরা গেছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার প্রয়োজনে বিদেশি কর্মী নিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদেশি কর্মী নিয়োগ বন্ধের ডেডলাইন দেওয়া হয়েছে। ৩১ মে এই ডেডলাইন শেষ হওয়ার পর আমরা অভ্যন্তরীণভাবে যা করার করব। আমরা অবৈধ অভিবাসীদের ৭০০ রিঙ্গত জরিমানা দিয়ে মালয়েশিয়া ছেড়ে নিজ দেশে ফিরে যাবার সুযোগ দিচ্ছি। আমরা তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছি না। এই সুবিধা চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত বহাল থাকবে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ অনেকটা বেকায়দায় পড়েছে। সেটা আমরা অনুধাবন করতে পারি। আমরাও ১৫টি সোর্স কান্ট্রি থেকে অবৈধ লোকজনকে নিয়ে কতটা বেকায়দায় আছি সেটা আপনারা নিজেরাই অনুধাবন করতে পারেন। তাই আমাদের কিছুটা সময় দেন। আমরা অভ্যন্তরীণভাবে জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর বাংলাদেশসহ ১৫টি সোর্স কান্ট্রি থেকে চাহিদার ওপর ভিত্তি করে কর্মী নিয়োগ করব। কুয়ালালামপুরে অনেক বাংলাদেশি আছেন যাদের কোনো চাকরি নেই। আমরা বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের আগে তাদের জন্য চাকরি নিশ্চিত করতে চাই।
মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পর্যটন খাতসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অপরাপর নানা দিক নিয়েও আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে চায় মালয়েশিয়া। আসিয়ান দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র মালয়েশিয়া। ফলে মুক্ত বাণিজ্য করলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য অনেক বৃদ্ধি পাবে। থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের তুলনায় মালয়েশিয়ায় চিকিৎসা ব্যয় অনেক কম। কারণ মালয়েশিয়ায় আইন করে চিকিৎসার সর্বোচ্চ ব্যয় সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু চিকিৎসার মানে আমরা কোনো আপস করি না। তিনি বাংলাদেশি রোগীদের মালয়েশিয়ায় চিকিৎসা নেওয়ার অনুরোধ করেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রীরা মালয়েশিয়ায় গিয়ে বা বাংলাদেশে অবস্থান করে সেদেশের উচ্চশিক্ষা নিতে পারেন। বাংলাদেশি পর্যটকদের স্বাগত জানায় মালয়েশিয়া। তিনি উল্লেখ করেন, মালয়েশিয়া বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানকারী প্রথম মুসলিম দেশ।