Logo
Logo
×

অন্যান্য

বেসরকারি মেডিকেলে শিক্ষার্থীর সংকট অটোমেশনের কারণে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৪, ১০:২০ পিএম

বেসরকারি মেডিকেলে শিক্ষার্থীর সংকট অটোমেশনের কারণে

দেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ায় অটোমেশন শিক্ষার্থী সংকটের প্রধান কারণ বলে উলে­খ করেছে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ)। 

তারা বলেছে, দেশকে ডিজিটালাইজেশনের ধারাবাহিকতায় ভর্তি প্রক্রিয়া অটোমেশন করা হয়েছে। কিন্তু এ পদ্ধতি হিতে বিপরীত হয়েছে। কারণ বাংলাদেশের বাস্তবতায় এর পরিবর্তন ও পরিবর্ধন প্রয়োজন। 

তবে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা শুধু অটোমেশনকে শিক্ষার্থী না পাওয়ার কারণ হিসাবে মানতে রাজ নন জানিয়ে বেসরকারি মেডিকেলের মানোন্নয়নের তাগিদ দিয়েছেন।

শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিপিএমসিএ আয়োজিত ‘বেসরকারি স্বাস্থ্য শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং ভর্তি প্রক্রিয়ায় চলমান শিক্ষার্থী সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব তথ্য উঠে আসে।

সভায় লিখিত বক্তব্যে বিপিএমসিএ সভাপতি এমএ মুবিন খান বলেন, অটোমেশন প্রক্রিয়ায় মেধাবী ছাত্রছাত্রী ঝরে যাচ্ছে। অনেকের ইচ্ছার বিপরীতে বিভিন্ন জায়গায় ভর্তি করায় ছাত্রছাত্রীরা তাদের মনোযোগ হারিয়ে পড়াশোনা থেকে ঝরে যাচ্ছে। ভর্তি প্রক্রিয়া ডিজিটাল করতে গিয়ে অনেক জটিল প্রক্রিয়ার অবতারণা করা হচ্ছে, যার বলি হচ্ছে স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যবস্থা।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতি বছর এমবিসিএস কোর্সে ১১ হাজার ৫৮৮টি আসনে ছাত্রছাত্রী ভর্তি হচ্ছে। এর মধ্যে ৩৮টি সরকারি মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা ৫ হাজার ৩৮০টি। ৬৭টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা ৬ হাজার ২০৮টি। এর মধ্যে দেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ৩ হাজার ৬৫৭টি আসন বরাদ্দ আছে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আসন বরাদ্দ আছে ২ হাজার ৫৫১টি। 

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, অটোমেশনের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারে না। অটোমেশন চালুর দু’বছরে বেসরকারি কলেজে আবেদন পড়েছে মোট আসনের সমপরিমাণ বা তার কিছু বেশি। এমনিতে বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তিচ্ছুক ছাত্রছাত্রীর আবেদনের সংখ্যা কম, তাহলে অটোমেশনের যৌক্তিকতা কি? বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির কোটা ৫০ শতাংশে উন্নীত করা গেলে ২০০ কোটি টাকার অধিক রেমিট্যান্স আসবে বলে দাবি তাদের।

সভাপতি এমএ মুবিন খান বলেন, বাংলাদেশে প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য মাত্র ৭ দশমিক ২৬ জন ডাক্তার আছেন। যা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় নিচের দিক থেকে দ্বিতীয়। এ স্বল্প সংখ্যক ডাক্তার তৈরিতে বেসরকারি খাতের বড় অবদান রয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি পদ্ধতিগত ভুলের কারণে বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তিতে চরম বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে।

অটোমেশনের নামে প্রাইভেট মেডিকেল সেক্টর ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, চলতি বছর বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ১ হাজার ২০০ আসন খালি রয়েছে। গত দু’বছরে ২০ শতাংশের ওপরে আসন খালি। এমনকি গরিব মেধাবী কোটায়ও ছাত্রছাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। অটোমেশনের কারণে শিক্ষার্থীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।

এ সময় কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছে বিপিএমসিএ। বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার গুণমান মূল্যায়নে নিয়মিত মনিটরিং ও মূল্যায়ন পদ্ধতি নিশ্চিত করা এবং ঘাটতিগুলো সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। অবকাঠামো উন্নত করতে, আধুনিক শিক্ষাদান প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ এবং যোগ্য অনুষদ সদস্যদের নিয়োগের জন্য বেসরকারি আর্থিক সহায়তা দানের কথা বলেন।

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, শুধু অটোমেশনের জন্য শিক্ষার্থী আসছে না, তা হতে পারে না। এর অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। আমি তাদের ঘাটতিগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য কাজ করার পরামর্শ দেব।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি মেডিকেল করতে হলে আগে হাসপাতাল তৈরি করতে হবে। রোগীরা মেডিকেল শিক্ষার্থীর শেখার ল্যাবরেটরি। হাসপাতাল ঠিকমতো রান করলে পরে মেডিকেল কলেজের অনুমতি হওয়া উচিত। যাদের পড়াবো তারা মানসম্মত চিকিৎসক তৈরি হবে কি না তা লক্ষ্য রাখতে হবে।

এ সময় বেসরকারি মেডিকেলে শিক্ষায় নানা সমস্যা ও করণীয় নিয়ে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে এম আব্দুল মোমেন, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের প্রতিনিধি, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, বেসরকারি মেডিকেল মালিক ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম