গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বাড়ছে মসলা পণ্যের দাম। সর্বশেষ এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজ, আদা-রসুন, হলুদ ও জিরার দাম ফের বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি ব্রয়লার মুরগি ও ডিম খুচরা বাজারে বাড়তি দরেই বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে ভোজ্যতেল। ফলে বাজারে এসব পণ্য কিনতে ক্রেতার ভোগান্তি বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার, শান্তিনগর, কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিন প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৭০-৮০ টাকা; যা সাত দিন আগেও ৬৫-৭৫ টাকা ছিল। দেশি রসুন ২২০ টাকায় বিক্রি হয় টাকা; যা এক সপ্তাহ আগেও ২০০-২১০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি আমদানিকরা আদা বিক্রি হয় ২৪০ টাকা; যা সাত দিন আগে ২৩০ টাকা ছিল। তবে নয়াবাজারে এই আদা কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ২৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি হলুদ বিক্রি হয় ৩৫০-৪০০ টাকা; যা এক সপ্তাহ আগেও ৩০০-৩২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর প্রতি কেজি ধনে বিক্রি হয় ৩০০ টাকা; যা আগে ২৬০ টাকা ছিল।
এছাড়া খুচরা বাজারে এদিন প্রতি কেজি শুকনা মরিচ বিক্রি হয় ৪০০ টাকা। জিরা প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৭০০-৮৫০ টাকা। দারুচিনি প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৫০০-৫৮০ টাকা। লবঙ্গ বিক্রি হয় ১৭০০-১৮০০ টাকা। প্রতি কেজি ছোট দানার এলাচ বিক্রি হয় ৩৮০০-৪০০০ টাকা। প্রতি কেজি তেজপাতা বিক্রি হয় ২০০ টাকা।
নয়াবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. আকরাম বলেন, বাজারে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। তারপরও দেখলাম দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য মসলা পণ্যের দামও বাড়তি। বিক্রেতারা কুরবানির ঈদ ঘিরে এখনই সব ধরনের মসলা পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু বাজার তদারকিতে যেসব সংস্থা আছে তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয় ২২০ টাকা; যা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই দামেই বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি হালি ফার্মের ডিম বিক্রি হয় ৫০-৫৫ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি দেশি মুরগি বিক্রি হয় ৬০০-৭০০ টাকা। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয় ৭৮০ টাকা। প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হয় ১১০০ টাকা।
কাওরান বাজারের ব্রয়লার মুরগি বিক্রেতা জহিরুল বলেন, পাইকারি বাজারে মুরগির দাম এখনও বাড়তি। কাপ্তান বাজারে ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট আছে। তারা রাতেই মুরগির দাম নির্ধারণ করে। সকাল থেকে সারা দিন সেই দামেই বিক্রি হয়। এখন মুরগির দাম বেশি হওয়ার কথা না। তারপরও তারা বাড়তি মুনাফা করতে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়তি রাখছেন। তাই আমরা বেশি দমে কিনে বেশি দামেই বিক্রি করছি। কিন্তু পকেট কাটা যাচ্ছে ভোক্তার।
একই বাজারের ডিম বিক্রেতারা মাইনুল হক বলেন, আমরা খুচরা ডিম বিক্রেতারা তেজগাঁও আড়ত থেকে ডিম কিনে এনে বিক্রি করি। সেখানকার আড়তদাররা ডিমের বাড়তি দাম হাঁকাচ্ছেন। তাদের কারসাজিতে খামারিদের সর্বোচ্চ একটি ডিম উৎপাদন করতে ৮ টাকা খরচ হলেও ক্রেতার প্রায় ১৪ টাকা দিয়ে ডিম কিনতে হচ্ছে; যা কোনোভাবে কাম্য নয়। তিনি জানান, ডিমের দাম বাড়ানোর পর এখন পর্যন্ত তারা সেই বাড়তি দামেই বিক্রি করছে। কিন্তু তদারকি সংস্থাগুলো আড়তে অভিযান পরিচালনা করছে না। যে কারণে ডিমের দাম কমছে না।
খুচরা বাজারে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের দাম কেজিতে ৩ টাকা কমে ৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি সরু চালের মধ্যে মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা। এছাড়া মাঝারি চাল বিআর ২৮ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা। প্রতি কেজি প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা। প্রতি কেজি খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৬০ ও প্যাকেট ময়দা ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ছোট দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা, মাঝারি দানা ১২০ ও মোটা দানার মসুর ডাল ১১০-১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা। ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৭৯০-৮১৫ টাকা, যা সাত দিন আগেও ৭৮০-৮১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।