প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি এ লক্ষ্যে তিন ধাপে কাজ করার কথাও জানিয়েছেন। এ ধারাবাহিকতায় তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তামাক নিয়ন্ত্রণ কনভেনশনের (এফসিটিসি) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ছয়টি ধারা সংশোধন তথা শক্তিশালী করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ভবনে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ হার্ট ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএইচআরএফ) সেমিনারের আয়োজন করে।
হার্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভীর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল, হার্ট ফাউন্ডেশনের এপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন বিএইচআরএফের সভাপতি রাশেদ রাব্বি। এছাড়াও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের যে ৬টি ধারা সংশোধন বা শক্তিশালী করতে বলা হয়েছে সেগুলো হলো- বর্তমান আইনের ধারা ৪ ও ৭ বিলুপ্ত করা। অর্থাৎ সব পাবলিক প্লেসে ও পাবলিক পরিবহণে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান (ডিএসএ)’ নিষিদ্ধ করা। তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা। তামাক কোম্পানির যে কোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা। ই-সিগারেটের মতো এমার্জিং টোব্যাকো পণ্যসমূহ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা। তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট অথবা কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা। বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা। আলোচনায় এই ৬টি ধারা পরিবর্তনে বিশদ আলোচনা করা হয়।
সেমিনারে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, জনস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার। তামাকের ক্ষতি থেকে সাধারণ মানুষের সুরক্ষায় বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উপনীত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, ক্যাম্পেইন ফর ট্যোবাকো ফ্রি কিডস্-এর লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক মো. ইউনুছুর প্রমুখ।