অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি: ভূমিমন্ত্রী
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
![অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি: ভূমিমন্ত্রী](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2024/05/17/image-806176-1715962428.jpg)
‘বর্তমান সরকারের সময় সংখ্যালঘুদের অধিকার বিষয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ আইন করে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা সেগুলো বাস্তবায়নের ব্যাপারে প্রচন্ড আন্তরিক হলেও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। কিছু আইন সংসদে উত্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছে। সেগুলো ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন হবে। সর্বোপরি আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক একটি বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখি।’
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এসব কথা বলেন।
সংগঠনের অন্যতম সভাপতি ঊষাতন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার, সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দ্র মজুমদার, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সংসদীয় ককেসাস’র সদস্য সচিব ড. মেজবাহ কামাল, সংগঠনের সভাপতি ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক প্রমুখ। সবায় স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।
মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে আমরা যেসব প্ল্যাটফর্মে আছি, সেখান থেকে সংযোগ ঘটাতে হবে। রবীন্দ্র সংগীত, পহেলা বৈশাখসহ সব ক্ষেত্রে সরকার সহযোগিতা করছে, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ করছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ি। রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের সঙ্গে অন্য ধর্মকে পৃথক না করে সংঘবদ্ধভাবে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি।
তিনি বলেন, অর্পিত সম্পত্তি আইন বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয় আন্তরিক। এর জন্য দুটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। অর্পিত সম্পত্তিতে যাদের মালিকানা রয়েছে, তাদের আলাদা খতিয়ান খুলে খাজনা নিতে হবে ও যেসব সম্পত্তির ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক রায় হয়েছে, সেগুলোকে ছেড়ে দিতে হবে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আমাদের প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। এই অভাব দূর করার জন্য আমি ইতোমধ্যে খুলনাসহ কয়েকটি বিভাগে সভা করেছি।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, সরকার জনগণের দ্বারা জনগণের সরকার। সরকারি কর্মকর্তারা ও জনগণের প্রতিনিধি আমরা উভয়েই জনগণের সেবক। অতএব এটা (অর্পিত সম্পত্তি) সরকারের ইন্টারেস্ট বলে আপনি হ্যাঙ্গিং করবেন, এটা চলতে দেওয়া হবে না। এই আইন বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুব আন্তরিক। তিনি বলেছেন ‘খ’ তফশিল বলে কিছু থাকবে না। হয়ত মালিক পাওয়া না গেলে সেটা খাস জমিতে রূপান্তরিত হবে। তাছাড়া দেবোত্তর সম্পত্তির বিষয়টি দেখার দায়িত্বে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের। এ বিষয়ে একাধিকবার ধর্মমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে কাজ করছি।
তিনি বলেন, সরকার জনসাধারণের মতামতের ভিত্তিতে একটি আইন বাস্তবায়ন করে। এটা ইচ্ছা করলে রাতারাতি পরিবর্তন করে দেওয়া সম্ভব নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একাত্তরের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে সব সময় অবিচল ছিলেন এবং থাকবেন।
মন্ত্রী বলেন, সাম্প্রদায়িকতা আমাদের ভেতরেও কিছু কিছু লোকের ভেতর প্রকাশ পাচ্ছে। আমরা সমালোচনাকে স্বাগত জানাই। কিন্তু অধিকারের নামে একটি পক্ষ প্রধানমন্ত্রীকে দোষারোপ করছে। তাছাড়া কে কয়জনকে ধর্মান্তরিত করল, কে কোথায় আসল- এগুলো কোনো খবরের বিষয় হতে পারে না। এটাও এক ধরনের সাম্প্রদায়িকতা। অনেকে হিন্দু সংগঠনের নাম দিয়ে সাম্প্রদায়িকতা করছেন। তাদের এক নম্বর টার্গেট হচ্ছে শেখ হাসিনা।
কারো নাম প্রকাশ না করে তিনি বলেন, অনলাইন মিটিংয়ের মধ্যে একজন ঢুকে এদেশে হিন্দুদের দুর্গতির জন্য বঙ্গবন্ধুকে দোষারোপ করছে। ৭৫-এর আগে কী ছিল, এখন কী হয়েছে, সেটা বুঝতেই চায় না। যারা বিভ্রান্তিতে রয়েছে তাদেরকে আমরা যেমন প্রশ্রয় দেইনি, তেমনি আমাদের দাবি বাস্তবায়নে কাজ করে যাব। আমরা চাই, ৭১-এর চেতনা আসুক, বঙ্গবন্ধুকন্যার হাত ধরে আসুক। প্রধানমন্ত্রী সব সম্প্রদায়ের প্রতি আন্তরিক।
অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত তার স্বাগত বক্তব্যে সরকারি দলের নির্বাচনি ইশতেহারে প্রতিশ্রুত সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব অঙ্গীকারগুলো যথার্থ অর্থে বাস্তবায়নের জন্য ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর জনজীবনের বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আজ ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তোলা প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।