মধুখালী পঞ্চপল্লীতে নিহতদের বাড়িতে ধর্মমন্ত্রী
ফরিদপুর ব্যুরো ও হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১১ পিএম
ফরিদপুর মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে মন্দিরের প্রতিমায় আগুন লাগার ঘটনায় পিটুনিতে নিহত ২ শ্রমিকের বাড়িতে সান্ত্বনা জানাতে যান ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার চোপেরঘাটে ওই বাড়িতে যান তিনি। সেখানে তিনি নিহত এ দুই ভাইয়ের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান। এ সময় নিহতদের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন এবং ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আশ্বাস দেন। তিনি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ টাকা সহায়তা দেন।
পরে মন্ত্রী কবরস্থানে গিয়ে নিহত আশরাফুল ও আরশাদুলের কবর জিয়ারত করেন। এ সময় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু আ হামিদ জমাদ্দার, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ-সদস্য ঝর্ণা হাসান, জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. ইশতিয়াক আরিফসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগের নেতারা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর মন্ত্রী পঞ্চপল্লী গ্রামে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। পরিদর্শন শেষে বিকাল সাড়ে ৪টায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে সম্প্রীতি রক্ষা কমিটির বিশেষ সভায় অংশ নেন।
এদিকে এ ঘটনায় পৃথক ৩টি মামলা হয়েছে। নিহতদের বাবা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশের কাজে বাধা ও হামলায় অপর মামলাটি করেন পুলিশের এসআই শংকর কুমার বালা। এছাড়া প্রতিমায় আগুনের ঘটনায় মন্দিরের সেবায়েত তপতী রানী মামলা করেছেন। হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।
এর আগে শুক্রবার রাতে জেলা পুলিশের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোর্শেদ আলম জানান, মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নির্মাণ শ্রমিকদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে আগুন যেভাবেই লাগুক তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।
বিচার বিভাগীয় তদন্ত চায় হেফাজতে ইসলাম : মধুখালীর এ ঘটনায় জড়িতদের তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এজন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছে সংগঠনটি। শনিবার গণমাধ্যমে সংগঠনের প্রচার সম্পাদক মুফতী কিফায়াতুল্লাহ আজহারীর পাঠানো বিবৃতিতে এ দাবি জানান হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান।
বিবৃতিতে হেফাজত নেতারা বলেন, এ দেশের অধিবাসীদের ধর্মীয় বিশ্বাসে বৈচিত্র্য থাকলেও আবহমানকাল থেকেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিদ্যমান। কিন্তু মধুখালীর ওই মন্দিরে আগুনের ঘটনায় সন্দেহের বশে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় দুই মুসলিম শ্রমিককে হত্যা ও পাঁচজনকে আহত করার জঘন্যতম ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।