ভোজ্যতেলের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজার দর বেশি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৭ পিএম
রোজার আগে কমালেও ফের ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার। প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ৪ টাকা ও পাঁচ লিটারে ১৮ টাকা বাড়ানো হয়েছে। আর বোতলজাত পাম তেলের দাম ধরা হয়েছে ১৩৫ টাকা। নতুন সিদ্ধান্ত শুক্রবার থেকে কার্যকর হবে। তবে বাজারে বিক্রি হচ্ছে আরও বেশি দামে। এ ছাড়া বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে আটা, পেঁয়াজ, আদা-রসুনের দামও বেড়েছে। ফলে এসব পণ্য কিনতে ক্রেতাকে ফের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে বৃহস্পতিবার বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম জানান, বোতলজাত তেলের দাম বাড়ানো হলেও খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ২ টাকা কমানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রতি লিটার খোলা তেলের দাম ১৪৯ থেকে কমে ১৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর নতুন সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রতি লিটার বোতলজাত তেলের দাম ১৬৩ টাকা থেকে বেড়ে ১৬৭ টাকা করা হয়েছে। ৫ লিটার বোতলজাত তেলের দাম ৮০০ টাকা থেকে বেড়ে ৮১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বোতলজাত পামতেলের লিটার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩৫ টাকা।
তবে এদিন রাজধানীর কাওরান বাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার, নয়াবাজারসহ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে বিক্রোদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি লিটার পামতেল সুপার ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৫৫ টাকা। আর পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮২০ টাকা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ফেব্রুয়ারিতে আলাদা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্ক-কর কমানোর ঘোষণা দেয়। এতে স্থানীয় পর্যায়ে পরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের উৎপাদন এবং ব্যবসা পর্যায়ে ভ্যাট পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়। ৫৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়ার পর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১০ টাকা কমিয়ে ১৬৩ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তখন ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮০০ টাকা। আর এই ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ ১৫ এপ্রিল শেষ হয়েছে। ফলে সোমবার বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর এক চিঠিতে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১৭৩ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, ভোজ্যতেলের কাঁচামাল আমদানি, উৎপাদন পর্যায়ে ৭ ফেব্রুয়ারি জারি করা এসআরও দুটির মেয়াদ ১৫ এপ্রিল শেষ হচ্ছে বিধায় ১৬ এপ্রিল থেকে বাজারে ভোজ্যতেল (পরিশোধিত পাম তেল ও পরিশোধিত সয়াবিন তেল) ভ্যাট অব্যাহতির আগের দামে সরবরাহ হবে। চিঠিতে ১৬ এপ্রিল থেকে বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৭৩ টাকা, পাঁচ লিটার ৮৪৫ টাকা এবং খোলা এক লিটার পাম তেলের দাম ১৩২ টাকা প্রস্তাব করা হয়। সরকারের পক্ষে ট্যারিফ কমিশন প্রস্তাব নাকচ করায় এ দাম কার্যকর হয়নি। পাশাপাশি সয়াবিনের মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ নেই বলে সরাসরি জানিয়েছিলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ দিন প্রতি কেজি খোলা আটা ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা ৭ দিন আগেও ৪৫ টাকা ছিল। পাশাপাশি প্যাকেটজাত আটা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। যা আগে ৫৫ টাকা ছিল। এ ছাড়া দেশি পেঁয়াজ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা ৭ দিন আগেও ৫৫-৬৫ টাকা ছিল। আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা। যা আগে ৬০-৬৫ টাকা ছিল। প্রতি কেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৭০ টাকা। যা আগে ১৫০ টাকা ছিল। আমদানি করা আদা কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৪০ টাকা। যা আগে ১৯০-২৩০ টাকা ছিল।