জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মো. মুজিবুল হক চুন্নু বেইলি রোডে আগুনে প্রাণহানির প্রসঙ্গে বলেছেন, একেকটা ঘটনা হয় আর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় তদন্ত করা হবে। তদন্ত টিম করা হলো, তারপর কোনো ফলোআপ নেই। এভাবে তো দেশ চলতে পারে না, সরকারের জবাবদিহি করা দরকার, অ্যাকশন নেওয়া দরকার। 

তিনি বলেন, দেশের জনগণ ট্যাক্স দেয় সরকার পরিচালনার জন্য। সরকারের দায়িত্ব হলো দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদান। সরকারের ছয়টি সংস্থার ভবন তৈরিতে ক্লিয়ারেন্স লাগে। ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার পর ভবনের সুপারভিশন নেই। রাজউকের প্রত্যেকটি এলাকায় অফিসার থাকে, সেই অফিসাররা কোথায়? একটা পারপাসে বিল্ডিং করে, যায় অন্য পারপাসে। এই যে মানুষগুলো মারা গেল এর জবাব দেবে কে? এর দায়দায়িত্ব তো সরকারের, সরকারি সংস্থার, সরকারি অফিসের। 

শনিবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলেন মুজিবুল হক চুন্নু। 

চুন্নু বলেন, সরকারের কাছে দাবি, দায়দায়িত্ব নিয়ে এ ঘটনার জন্য কারা কারা দায়ী- রাজউক হোক, ফায়ার ব্রিগেড হোক, পরিবেশ অধিদপ্তর হোক- তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের আর কোনো ঘটনা না হয়। 

তিনি আরও বলেন, বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২২ জন। যে ভবনে আগুন লেগেছে সেটিতে কোনো রেস্টুরেন্টের অনুমতি ছিল না। অথচ ভবনে আটটি রেস্টুরেন্ট ছিল। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানের (ড্যাপ) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন ভবনের একতলা থেকে সাততলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক অনুমোদন দেওয়া ছিল। তবে তা শুধু অফিসকক্ষ হিসাবে ব্যবহারের জন্য। রেস্তোরাঁ, শোরুম বা অন্য কিছুর অনুমোদন ছিল না।

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালককে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ভবনে কোনো ধরনের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থাই ছিল না, কোনো নিরাপত্তা সিঁড়িও ছিল না। নিমতলী, চকবাজার, বনানীতে টাওয়ারে আগুন ধরে মানুষ মারা যায়। ভবনটির যিনি ডিজাইন করেছিলেন, তিনি বলেছেন, ডিজাইন করা হয়েছিল সেখানে বাণিজ্যিক অফিস থাকবে। সেখানে যখন হোটেল করা হয় তখন তিনি ডেভেলপার ও জমির মালিককে বারবার চিঠি দেন- এই বিল্ডিংয়ে যেভাবে ডিজাইন করা হয়েছে রেস্তোরাঁ দেওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু তার কথা কেউ শোনেনি।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ধানমন্ডি সাত মসজিদ রোডে একটা বিল্ডিংয়ে ১৫টা রেস্টুরেন্ট। অথচ এ রেস্টুরেন্টের কোনো অনুমতি নেই। ধানমন্ডি সাত মসজিদ রোডে প্রতিটি রাস্তার পাশে কয়েকশ দোকান। বিল্ডিংয়ে বিল্ডিংয়ে রেস্টুরেন্ট, একটারও অনুমতি নেই। আরও এরকম ঘটনা ঘটবে সরকার যদি এ বিষয়ে সচেতন না হয়।