খতনায় ‘ভুল অ্যানেসথেসিয়া’, ৪ দিনেও জ্ঞান ফেরেনি শিশু আয়ানের
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪০ পিএম
রাজধানীর বাড্ডায় বেসরকারি ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনার সময় ‘ভুল অ্যানেসথেসিয়া’ দেওয়ায় মৃত্যুর মুখে পড়েছে ৫ বছরের শিশু আয়ান। ৪ দিনেও তার জ্ঞান ফেরেনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে গুলশান-২ নম্বরের ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
শিশুর বাবা শামীম আহমেদ বলেন, ৩১ ডিসেম্বর ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাচ্চাকে (আয়ান) সুন্নতে খতনা করাতে নিয়ে যাই। সেখানে তাকে প্রথমে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়। তাকে ওই অবস্থায় রেখে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ঘণ্টা দুয়েকের মতো ক্লাস নেওয়া হয়। শেষের দিকে যখন তারা আয়ানের পালস পাচ্ছিল না, তখন তার বুকে প্রেসার দিতে থাকে। আমরা বুঝতে পারি- ভুল কিছু একটা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়, উন্নত চিকিৎসার জন্য আয়ানকে গুলশান-২ ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। পরে সেখানে নেওয়া হয়।
শিশুর বাবা আরও বলেন, আজকে ৪ দিন হলো তাকে পিআইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু তার কোনো রেসপন্স পাওয়া যাচ্ছে না। সকাল থেকে ডাক্তাররা আমাদের সঙ্গে যেভাবে কথা বলছেন, আমরা বুঝতে পারছি- বাচ্চা হয়তো আর বেঁচে নেই। আমার আর কোনো চাওয়া নেই। সন্তানকে আমি জীবিত ফেরত চাই। অ্যানেসথেসিয়া প্রয়োগে ভুলের কারণেই শিশু আয়ান মৃত্যুর মুখোমুখি বলে দাবি করেন তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শিশুটিকে অ্যানেসথেসিয়া প্রয়োগ করেন ডা. সাব্বির আহমেদ। আর সার্জারি করেছেন ডা. মেহজাবীন।
শিশু আয়ানের স্বজন হাবিবুর রহমান বলেন, খতনা কী এমন জিনিস, যেটা করতে গেলে বাচ্চাটিকে একেবারে পিআইসিইউতে নিয়ে যেতে হয়? তার মানে নিশ্চয়ই তার সঙ্গে খারাপ কিছু হয়েছে। তারা তাদের শিক্ষার্থীদের শেখাবে, এজন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে ফেলে রাখবে, আমরা তো এজন্য হাসপাতালে যাইনি।
তিনি বলেন, আমরা রিপোর্ট-কাগজপত্রসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) একজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছি। এরপর তিনি তাৎক্ষণিক ইউনাইটেড হাসপাতালে কর্তব্যরত অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের সেই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি শিশুটির ক্ষেত্রে ভুল অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন বলে আমরা জেনেছি। আমাদের বাচ্চার যদি এখন কিছু হয় তাহলে এর পুরো দায় ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করে তিনি বলেন, পরিবার মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সবাই সহযোগিতা করবেন, যেন ক্ষমতাবলে ছাড় না পেয়ে যায়।
এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. সাব্বির আহমেদ ও ডা. মেহজাবীনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।