আজ খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন (ক্রিসমাস)। বছর ঘুরে আবার এলো তাদের সবচেয়ে খুশির দিন। আনন্দ-হাসি-গানে আজ প্রাণ মিলবে প্রাণে। গির্জায় গির্জায় হবে প্রার্থনা। মানবতার কল্যাণে যিশুখ্রিস্টের শান্তির বাণী ছড়িয়ে যাবে মানুষে মানুষে। আলোকসজ্জা, ক্রিসমাস ট্রি আর সান্তাক্লজের উপহারে মেতে উঠবে শিশুরা।
বড়দিন উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। তারা খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষকে শুভেচ্ছা জানান। বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। সকল শ্রেণি-পেশার জনগণের উন্নয়নই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব সম্প্রদায়ের মানুষের মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি।
দুই হাজার বছর আগে এ শুভ দিনেই জš§গ্রহণ করেন খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্ট। বেথেলহেমের এক গোয়ালঘরে কুমারী মাতা মেরির কোলে জš§ হয়েছিল তার। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, মানবজাতিকে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতে যিশুর জš§ হয়। ‘ঈশ্বরের আগ্রহে ও অলৌকিক ক্ষমতা’য় মা মেরি কুমারী হওয়া সত্ত্বেও গর্ভবতী হন।
ঈশ্বরের দূতের কথামতো শিশুটির নাম রাখা হয় যিশাস, বাংলায় বলা হয় ‘যিশু’। শিশুটি কোনো সাধারণ শিশু ছিল না। ঈশ্বর যাকে পাঠানোর কথা বলেছিলেন মানবজাতির মুক্তির জন্য। যিশু নামের সেই শিশুটি বড় হয়ে পাপের শৃঙ্খলে আবদ্ধ মানুষকে মুক্তির বাণী শোনান। তাই তার জš§দিনটিকে ধর্মীয় নানা আচার ও উৎসবের মধ্য দিয়ে উদযাপন করেন তারা। এটি তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব।
আজ বিশ্বের নানা দেশের মতো বাংলাদেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ও পালন করছে এ উৎসব। বড়দিন উপলক্ষ্যে গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে রঙিন বাতিতে। সকালে সেখানে বিশেষ প্রার্থনা দিয়ে দিনের শুরু হবে আজ। গির্জায় ধর্মীয় গান হবে। এছাড়া নানা আয়োজন করেছেন যিশুভক্তরা। ঘরে ঘরে জ্বালানো হয়েছে রঙিন আলো। সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। যিশু গোয়ালঘরে জšে§ছিলেন বলে তার অনুসারীরা ঘরে ঘরে প্রতীকী গোশালা তৈরি করেছেন। পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় মেলবন্ধনের এদিনে অনেকে বেড়াতে যাবেন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে।
বড়দিনের উৎসব ঘিরে আনন্দমুখর আয়োজনে পিছিয়ে নেই ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরের অভিজাত হোটেলগুলো। রঙিন বাতি, ফুল আর প্রতীকী ক্রিসমাস ট্রিতে সাজানো হয়েছে বড়দিন। দিবসটি উপলক্ষ্যে আজ সরকারি ছুটির দিন। সংবাদপত্রগুলো দিনটিতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, সরকারি-বেসরকারি টিভি ও রেডিওতে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হচ্ছে।