ব্যর্থ জলবায়ু সম্মেলন, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারে সময়সীমা চূড়ান্ত হয়নি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:১৭ পিএম
বৈশ্বিক জলবায়ু সমঝোতা সম্মেলনে (কপ-২৮) রাষ্ট্রগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে সরে আসার আহ্বান জানানো হলেও সময়সীমা বেঁধে দিতে পারেনি। অভিযোজন অর্থায়ন দ্বিগুণকরণ এবং ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়ন বাস্তবায়নের কোনো রোডম্যাপ গৃহীত হয়নি। এমনকি জলবায়ু অর্থায়নের সংজ্ঞায়নের বিষয়েও আলোচনা হয়নি। ফলে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত এবারের সমোঝতা সম্মেলনটি ব্যর্থ হয়েছে।
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ‘বৈশ্বিক জলবায়ু সমঝোতা সম্মেলন ২৮ (কপ-২৮): প্রত্যাশা বনাম প্রাপ্তি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব মন্তব্য করেন। ৩০টি নাগরিক সংগঠন ও উন্নয়ন সহযোগী সংগঠনের জোট ‘ক্লাইমেট জাস্টিস অ্যালাইয়েন্স’-এর পক্ষে ‘সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি)’ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এবারের সম্মেলনে প্রত্যাশা ছিল বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা। বৈশ্বিক জ্বালানিব্যবস্থা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা। উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোয় অনুদানভিত্তিক অর্থায়ন এবং বিনামূল্যে প্রযুক্তি হস্তান্তর ব্যাপক মাত্রায় বাড়ানো। গ্লোবাল স্টকটেক প্রণয়ন, কয়লাভিত্তিক নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ বন্ধ করা। ২০৪০ সালের মধ্যে সব উন্নত রাষ্ট্রে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে সব রাষ্ট্রে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ করা। কিন্তু সম্মেলনটি বিশ্বসম্প্রদায়ের অধিকাংশ প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি।
সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, সমঝোতা সম্মেলনে জলবায়ু অর্থায়নের জন্য আমরা একটি সুস্পষ্ট সংজ্ঞার দাবি করেছিলাম। সেই সঙ্গে জলবায়ু অর্থায়নকে স্বীকৃতি দিতে এবং প্রয়োজনভিত্তিক, জরুরি ও একটি বাধ্যতামূলক পরিপূরক হিসাবে প্রণয়নের দাবি জানিয়েছিলাম। একটি নতুন তহবিলও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা একটি বোর্ডের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। প্রথম ৪ বছরের পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে বিশ্বব্যাংক। তবে এ তহবিল থেকে অর্থায়নের কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সম্মেলনে ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা তিনগুণ করার ব্যাপারে রাষ্ট্রগুলোকে আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু স্বল্পোন্নত এবং উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোর জন্য কোনো অর্থায়নের কথা বলা হয়নি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহাম্মেদ কামরুজ্জমান মজুমদার। ডিয়াকোনিয়ার কান্ট্রি ডিরেক্টর খোদেজা সুলতানা লোপা, সিসিডিবির নির্বাহী পরিচালক জুলিয়েট কেয়া মালাকার, এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন, কোস্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক সৈয়দ আমিনুল হক, সুন্দরবন ও উপকূল রক্ষা আন্দোলন সমন্বয়ক নিখিল ভদ্র। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিআরডির গবেষণা কর্মকর্তা শেখ নূর আতায়ে রাব্বি এবং প্রেজেন্টেশন করেন গবেষণা সহকারী ইলমী তাবাসসুম।