Logo
Logo
×

অন্যান্য

‘পাহাড়ের ১০ শতাংশ মানুষকে পেছনে ফেলে উন্নয়ন সম্ভব নয়’

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:০৭ পিএম

‘পাহাড়ের ১০ শতাংশ মানুষকে পেছনে ফেলে উন্নয়ন সম্ভব নয়’

পাবর্ত্য চটগ্রামের তিন অঞ্চলের (বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে) কর্মস্থান কম সৃষ্টি হচ্ছে। শিক্ষার অগ্রগতি হলেও টেকসই শিক্ষার অভাব আছে। পানি ব্যবস্থাপনায় রয়েছে সমস্যা। জমির জটিলতা নিরসনে ভূমি কমিশন গঠন হলেও এটি নিষ্ক্রিয়। এসব সমস্যা সমাধানের তাগিদ দেওয়া হয়েছে পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৬ বছর পূর্তিতে আয়োজিত এক সেমিনারে।

শনিবার রাজধানীর বেইলী রোডে শেখ হাসিনা পাবর্ত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য ও গবেষণা কেন্দ্র অডিটোরিয়ামে বক্তারা এ তাগিদ দেন। সেখানে আরও বলা হয়, ১০ শতাংশ মানুষকে পেছনে ফেলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ সেন্টার ফর ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্স-এর যৌথ উদ্যোগে সেমিনারের আয়োজন করা হয়। 

‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ১৯৯৭ এবং ঐক্য’ শীর্ষক সেমিনারে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে মূল্য প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম।  তিনি পাহাড়ে উন্নয়নের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পানির সমাধানে আধুনিক পদ্ধতি সমন্বয় করতে হবে। তরুণদের মতামতের গুরুত্ব দিতে হবে। উন্নয়নে তাদের ভাবনা কাজে লাগাতে হবে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মশিউর রহমান বলেন, শান্তি চুক্তির ৭২টি দফার মধ্যে ৬৫টি বাস্তবায়ন হয়েছে। ৭টি বাস্তবায়নাধীন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এ চুক্তির কারণে মন্ত্রণালয়ের জন্ম ও প্রশাসনিক সংস্কার হয়েছে। নেতৃত্বের বিকাশ হচ্ছে।  শান্তি ফিরেছে। পাহাড়ে সরকারিভাবে প্রতিবছর বিশেষ বরাদ্দ ৮০ হাজার টন খাদ্য দেওয়া হচ্ছে। এ বছর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪৯০ কোটি টাকা। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। এই তিন জেলায় এখন ১৮ লাখ মানুষ বাস করছে। তিনি আরও বলেন, কৃষিতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। ৭ হাজার মিশ্র একর জমিতে আবাদ হচ্ছে। পানি ব্যবস্থাপনায় ১৩০০ কোটি টাকা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

সাবেক তথ্য কমিশনার (সচিব) সুদত্ত চাকমা বলেন, স্থানীয় মানুষদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন দরকার। বর্তমান ভূমি কমিশনকে সক্রিয় করতে হবে। এটি নিষ্পত্তি করা না হলে চুক্তি সফল হবে না। তিনি আরও বলেন, উন্নয়নকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাতে হবে। তাদের পিছিয়ে থাকার কারণ জানতে হবে। পাহাড়ে কর্মসংস্থান কমছে। প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বিভেদ ভুলে গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে চুক্তির অবাস্তবায়িত শর্তকে বাস্তবায়ন করতে হবে।

সেমিনারে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মুজাহিদ বলেন, শান্তি চুক্তি না হলে এ উন্নয়ন হতো না। এখন রিসোর্স ব্যবহারের সুযোগ হয়েছে। উন্নয়ন ধরে রাখতে হবে।  

অন্য বক্তারা বলেন, শান্তি চুক্তিটি ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট কাগজ নয়, এটি রাজনৈতিক দলিল। এ চুক্তি বাস্তবায়নে পদে পদে বাধা ছিল। এখনো আছে। এই চুক্তির বড় অর্জন হলো তৃতীয় কোনো পক্ষের সহায়তা ছাড়াই এটি হয়েছে। 

সেমিনারে জমির জটিলতা নিরসনে ভূমি কমিশনকে পাবর্ত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের আওতায় আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীব চাকমা বলেন, নেটওয়ার্কের আওতায় পাহাড়ি অঞ্চলকে আনতে হবে। সেখানে শিক্ষার অগ্রগতি হচ্ছে কিন্তু গুণগত শিক্ষা নেই। এসব নিয়ে চিন্তার দরকার আছে। 

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, অধ্যাপক ড. মো. মোজাহিদুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক মুস্তাকিম বিন মোতাহার এবং সেমিনারে জিজ্ঞাসা পর্বে অংশ নেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক ছিলেন শাহ আলম খান।

এর আগে সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বেইলী রোডে শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র প্রাঙ্গণে ফেস্টুন উড্ডয়ন ও কবুতর অবমুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি দিবসের শুভ সূচনা করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিয়ষক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মশিউর রহমান। এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমাসহ পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারি ও ঢাকায় বসবাসরত তিন পার্বত্য জেলার অধিবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম