সুন্দরবনের দুবলার চরে ‘ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:০৭ পিএম
প্রতীকী ছবি
সুন্দরবনের দুবলার চর মৎস্য আহরণের কেন্দ্রবিন্দু। হিন্দুধর্মের পুণ্যস্নান, রাসমেলা ও হরিণের জন্য পরিচিত হওয়ায় প্রতি বছর এখানে কয়েক লাখ মানুষের সমাগম হয়। কিন্তু চরে বিশুদ্ধ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা না থাকায় মাওয়ালি, বাওয়ালি, বনজীবী, মৎস্যজীবীসহ দুবলার চরে আগত পর্যটকরা প্রায়ই চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েন। জনবিচ্ছিন্ন বালুময় এ চরে ছোট ছোট কূপ খনন করে পানি তুলে স্থানীয়দের ব্যবহার করতে হয়- যা স্বাস্থ্যসম্মত না। বিশুদ্ধ ও সুপেয় পানির দীর্ঘদিনের এ সংকট নিরসনে দুবলার চরে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করেছে র্যাব।
র্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন রোববার প্লান্টটি উদ্বোধন করবেন।
র্যাব জনিয়েছে, সুন্দরবন দস্যুমুক্ত হওয়ায় উপকূলীয় এলাকায় চুরি, ডাকাতিসহ অন্যান্য অপরাধ অনেকাংশে কমেছে। ফলে সেখানে মাওয়ালি, বাওয়ালি, বনজীবী, মৎস্যজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ নির্ভয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারছে। এছাড়াও সুন্দরবনের মনোরম পরিবেশ উপভোগ করতে আগের তুলনায় দেশি-বিদেশি পর্যটকের সংখ্যাও বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় র্যাবের তত্ত্বাবধানে সুন্দরবনের দুবলার চরে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়। দুবলার চরে পানিতে অতিমাত্রার লবণাক্ততা পরিলক্ষিত হয় এবং পানির লেয়ার অনেক নিচু হওয়ায় দক্ষ ইঞ্জিনিয়ারদের সহায়তায় কয়েক বারের চেষ্টায় এ পানি পরিশোধনাগার স্থাপন করা হচ্ছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন যুগান্তরকে জানান, র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) কর্নেল মো. মাহাবুব আলম সম্প্রতি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে সুন্দরবনের দুবলার চর পরিদর্শন করেছেন। উন্নতমানের এ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে ২৪ হাজার লিটার পানি পরিশোধন করা যাবে। পানি সংগ্রহের স্থান থেকে ১৫টি ডিস্ট্রিবিউশন পয়েন্টের মাধ্যমে লক্ষাধিক মানুষ বিশুদ্ধ ও সুপেয় পানির সুবিধা ভোগ করবেন।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সুন্দরবনকে জলদস্যু থেকে বাঁচাতে ২০১২ সালে র্যাব ফোর্সেসকে লিড অ্যাজেন্সি করে তৈরি হয় টাস্কফোর্স। একের পর এক র্যাবের অভিযানে জলদস্যুরা আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। ২০১৬ সালের ৩১ মে থেকে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনের ৩২টি দস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন সদস্য ৪৬২টি অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করে।