দুটি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনসহ ২২ প্রস্তাব অনুমোদন

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ১০:০২ পিএম

সরকারের শেষ সময়ে আরও দুটি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো জামালপুর (১৮০ মে.ও) ও মুন্সীগঞ্জে (১৩০ মে.ও) স্থাপন করা হবে।
বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত্র মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ২৫ হাজার ১২৫টি ল্যাপটপ এবং বিদ্যুৎ বিতরণের জন্য ৪৮ হাজার খুঁটি কেনাসহ ২২টি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ১৪ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
পৃথক বৈঠকে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে দুটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক দুটিতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে বিস্তারিত তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।
জামালপুর সদরে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের দর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা প্রায় ১১ টাকা হিসাবে ২০ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কেনা হবে। এতে সরকারের প্রায় ৬ হাজার ৪১০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের দর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১১ টাকা হিসাবে ২০ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কিনবে সরকার। এতে সরকারের ৪ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এছাড়া ওয়ালটন থেকে ২৫ হাজার ১২৫টি ল্যাপটপ কিনবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর। প্রতিটির মূল্য ৬৫ হাজার টাকা। এগুলো প্রযুক্তিতে নারীর ক্ষমতায়নে ব্যবহার করা হবে। হার পাওয়ার প্রকল্পের আওতায় এসব ল্যাপটপ কেনা হচ্ছে। এজন্য ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ‘বাপবিবো’র বিদ্যুৎ বিতরণের জন্য ৪৮ হাজার ৫৯৭টি এসপিসি পোল কেনায় ১৩৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
রাশিয়া থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানি করা হবে। প্রতি মেট্রিক টন ৩৩৪ ডলার হিসাবে ১০৭ কোটি টাকা মোট ব্যয় হবে। এছাড়া ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানি করা হবে। প্রতি মেট্রিক টন ৪১২ ডলার হিসাবে ১৩৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) আমদানি করবে। বিসিআইসি কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (কাফকো) কাছ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার। এতে ১৩২ কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম ৩৯৮ ডলার। আর চট্টগ্রামের টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের (টিএসপিসিএল) জন্য ২৫ হাজার মেট্রিক টন রক ফসফেট কেনা হবে। এতে প্রায় ৯৬ কোটি টাকা ব্যয় হবে। বৈঠকে ‘দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন (এসসিআরডি)’ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ২৪১ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করা হবে। ১৬৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে। চট্টগ্রাম সাইলোর বিএমআরইকরণ কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। এতে ৬৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তিন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে টিসিবি দেশের ভেতর থেকে ৬ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কিনবে। প্রতি কেজি ১১০ টাকা মূল্যে সাবনাম ভেজিটেবল ওয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের কাছ থেকে কেনা হবে। এতে ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় ৬৭ কোটি টাকা। পাশাপাশি মজুমদার ব্র্যান অয়েল মিলস থেকে ৪০ লাখ লিটার রাইস ব্র্যান তেল কেনা হবে। ১৫৬ টাকা লিটার দরে ব্যয় হবে ৬৩ কোটি টাকা। আর সিটি এডিবয়েল থেকে কেনা হবে ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল। ব্যয় হবে ১২৫ কোটি টাকা।
এদিকে মহেশখালীতে বিদ্যমান এলএনজির রিগ্যান ক্যাপাসিটি ৫০০ এমএমসিএফডি থেকে ৬০০ এমএমসিএফডি বৃদ্ধি চুক্তিপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পেট্রোবাংলা এক্সেলেটর গ্যাস মার্কেটিং লি. পার্টনারশিপ থেকে ১৫ বছর মেয়াদে (২০২৬-২০২৭ সাল পর্যন্ত ০.৮৫ এমটিপিএ এবং ২০২৮-২০৪০ সাল পর্যন্ত ১ এমটিপিএ এলএনজি আমদানির নেগোসিয়েশন দর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা হবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১৭.৫৫ মার্কিন ডলার হিসাবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ কেনা হবে। এতে ব্যয় হবে ৭৬২ কোটি টাকা।
ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) নবম ও দশম শ্রেণি এবং শিক্ষক সহায়িকার (৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম ও ৯ম শ্রেণি) জন্য ৫ কোটি ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৫৭৩টি বই মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে ১৯৫ কোটি টাকা। এছাড়া ‘পানগুচি নদীর ওপর সেতু নির্মাণ’ এবং ‘ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট (বাংলাদেশ)’ প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছে। প্রথম প্রস্তাবে ব্যয় হবে প্রায় ৭৫ কোটি টাকা।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে অতিরিক্ত ব্যয় হবে ৫২ কোটি টাকা। ‘মোংলা বন্দর চ্যানেলের ইনারবারে ড্রেজিং’ প্রকল্পের কাজের ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে বাড়তি ব্যয় হবে ১৯৫ কোটি টাকা। চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে আরসিসি জেটিসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ পূর্ত কাজ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৩৫৬ কোটি টাকা। এছাড়া ঘোড়াশাল রি-পাওয়ার্ড কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাস টারবানের ক্ষতিগ্রস্ত কম্প্রেসর মেরামত সেবা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনা হবে। এতে ব্যয় হবে ১৬৮ কোটি টাকা।
অর্থনৈতিক ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক : ১৫ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অপরটি হচ্ছে কাওরান বাজারে স্মার্ট টাওয়ার পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় অপারেটর নিয়োগের নীতিগত অনুমোদন।