ফিলিস্তিনিদের জন্য সারা দেশে মসজিদে বিশেষ দোয়া, শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৩, ১০:০০ পিএম
ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলায় নারী-শিশুসহ নিহত ও আহত ফিলিস্তিনিদের জন্য রাজধানীসহ সারা দেশের মসজিদগুলোতে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার মসজিদে-মসজিদে জুমার নামাজ শেষে এ দোয়ার আয়োজন করা হয়।
মোনাজাতে ইসরাইলের বর্বর সেনাদের হাতে নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের জন্য আল্লাহর রহমত কামনা করা হয়। সেই সঙ্গে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও আহতদের দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া করা হয়। গাজায় ইসরাইলের হামলায় শুক্রবার পর্যন্ত চার হাজার ১৩৭ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে শিশুই হলো ১ হাজার ৬৬১ জন।
এদিকে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বাহিনীর হামলা ও ফিলিস্তিনি নাগরিক হতাহতের ঘটনায় শনিবার ১ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গাজাসহ ফিলিস্তিনজুড়ে ইসরাইলি বাহিনীর সাম্প্রতিক বর্বরোচিত হামলায় ফিলিস্তিনি নাগরিকদের মৃত্যুতে এ রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে। শনিবার দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব ভবন এবং বিদেশের বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে বাদ জুমা ফিলিস্তিনিদের জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন। মোনাজাতে গাজাসহ ফিলিস্তিনের অন্যান্য স্থানে নিহত নাগরিকদের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়। এ সময় খতিবসহ মসজিদের মুসলিরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সবাই চোখের পানিতে নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের জন্য আল্লাহর রহমত কামনা করেন।
যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে বাইতুল আমান (চানবানু) জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি আজিজুল ইসলাম কাসেমী জুমার খুতবার আগে সবাইকে রাতে দুই রাকাত নামাজ পড়ে ফিলিস্তিনিদের জন্য দোয়া করার অনুরোধ জানান। জুমার ফরজ নামাজ শেষে মোনাজাতে তিনি ফিলিস্তিনিদের জন্য দোয়া করেন। এ সময় খতিবসহ মসজিদের মুসলিরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপর থেকে গাজায় নির্বিচারে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। এতে প্রাণ হারিয়েছেন নারী-শিশুসহ কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি। ইসরাইলি বিমান হামলা থেকে হাসপাতালও রক্ষা পাচ্ছে না।
হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন : ফিলিস্তিনের জনগণ ও সংবেদনশীল স্থাপনার ওপর ইসরাইলের বর্বরোচিত, অমানবিক হামলায় অসংখ্য নিরীহ শিশু ও নাগরিকদের হত্যার প্রতিবাদে ‘মানববন্ধন’ হয়েছে। গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের উদ্যোগে শুক্রবার বেলা ১১টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
পরিষদের সভাপতি কাজী মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি লেখক-গবেষক গোলাম কুদ্দুছ। আরও বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতিসহ নাট্যজন ঝুনা চৌধুরী, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার সহসভাপতি অধ্যাপক নিগার চৌধুরী, বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সহসভাপতি ফকির সিরাজুল ইসলাম, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজহারুল হক আজাদ এবং গৌরব ৭১-এর সাধারণ সম্পাদক এফএম শাহীন।
প্রতিবাদী মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত হতে হবে। অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। এ ব্যাপারে বিশ্বের মোড়লখ্যাত দেশগুলোকে জাতিসংঘের মাধ্যমে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। আরব বিশ্বকে এক হয়ে এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে আমেরিকা, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সব দেশকে ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। মানববন্ধনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়।