মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক নিরাপত্তায় এমআরটি পুলিশ
সিরাজুল ইসলাম
প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৩৮ পিএম
মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক নিরাপত্তায় নেমেছে এমআরটি (ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট) পুলিশ। গত ৯ অক্টোবর উত্তরা নর্থ, উত্তরা সাউথ এবং উত্তরা সেন্ট্রাল স্টেশনে এবং ১৬ অক্টোবর আগারগাঁও, কাজী পাড়া এবং শেওড়া পাড়া স্টেশনে এমআরটি পুলিশ ট্রায়াল ডেপ্লয়মেন্ট শুরু করে। একজন পরিদর্শকের নেতৃত্বে প্রতিটি স্টেশনে তিন পালায় ১১ জন করে এমআরটি পুলিশ মেট্রোরেলের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে।
গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের উত্তরা উত্তর অংশ থেকে আগারগাঁও অংশ উদ্বোধনের পর থেকে এর নিরাপত্তা দিচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। চলতি মাসের শেষ অথবা আগামী মাসের শুরুতে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে। এরপরই শুরু হবে এমআরটি পুলিশের মূল অপারেশনাল কার্যক্রম। ইতোমধ্যেই ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ট্রেনিং সেন্টার এবং উত্তরা দিয়াবাড়ী ডিএমপি পুলিশ লাইন্সে এমআরটি পুলিশের মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। এমআরটি পুলিশের সংশ্লিষ্ট সূত্র যুগান্তরকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় ডিএমপির প্রায় সাড়ে পাঁচশ সদস্য কাজ করছেন। বিশেষায়িত ইউনিট হিসেবে এমআরটি পুলিশ পুরোপুরি দায়িত্ব নেওয়ার পর ডিএমপি তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেবে। ২১ মে এমআরটি পুলিশের জন্য একজন ডিআইজির নেতৃত্বে বিভিন্ন পদবির ২৩১ জনবল মঞ্জুর করে সরকার। ডিআইজি জিহাদুল কবিরের নেতৃত্বে এই বাহিনীর প্রশাসনিক ও অবকাঠামোগত কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট থেকে বাছাই করে যোগ্যতাসম্পন্ন পুলিশ সদস্যদের এমআরটি পুলিশে পদায়ন করা হয়েছে। তবে যে জনবল মঞ্জুর করা হয়েছে, তা মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত না। তাই নতুন এই ইউনিটে আরও জনবল পদায়নের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৫৩৭ জন পুলিশ সদস্যকে এমআরটি পুলিশে পদায়ন করা হচ্ছে।
এই মুহূর্তে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এমআরটি পুলিশের কার্যক্রম চলছে। শিগগিরই এমআরটি পুলিশের প্রধান কার্যালয় স্থানান্তর হবে উত্তরার দিয়াবাড়ীতে। ডিএমটিসিএল ডিপো রোলিং স্টক ভবনে হবে এ কার্যালয়। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল পুরোদমে চালু হলে ১৭টি স্টেশনে নিরাপত্তা দেখভাল করবে এমআরটি পুলিশ। রূপগঞ্জসহ অন্যান্য স্থান থেকে মেট্রোরেল চালু হলে স্টেশনের সংখ্যা আরও বাড়বে।
এমআরটি পুলিশের প্রধান ডিআইজি জিহাদুল কবির যুগান্তরকে বলেন, মেট্রোরেল, যাত্রী, এমআরটি স্থাপনা, স্টেশন, ডিপোসহ অধিভুক্ত এলাকার সার্বিক নিরাপত্তায় আমাদের ট্রায়াল ডেপ্লয়মেন্ট চলছে। পরীক্ষামূলক কার্যক্রমে নামার পর থেকে মেট্রোরেল এলাকায় এ পর্যন্ত কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শিগগিরই পূর্ণাঙ্গভাবে দায়িত্ব পালন করব। এ জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ডিএমপির বিভিন্ন ক্রাইম বিভাগ, ট্রাফিক বিভাগ এবং ইন্টেলিজেন্স শাখাসহ অন্যান্য শাখার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে এমআরটি পুলিশ। এমআরটি পুলিশে ইতোমধ্যে ২৫৭ জন সদস্য যোগদান করেছে। তারা ইতোমধ্যে অপারেশনার ট্রেনিংসহ যাবতীয় প্রশিক্ষণ শেষ করেছে। টেকনিক্যাল বেল্ট, বডি ওর্ন ক্যামেরা, ব্যাটন ওয়াকিটকির ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ তারা নিয়েছে।
এমআরটি পুলিশের পরিদর্শক (শিফট ইনচার্জ) রোকনুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, আমরা পরীক্ষামূলক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নামার পর তেমন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। তবে মাঝে মধ্যেই দলবেঁধে ছেলেমেয়েরা টিকটক ভিডিও বানায়। এটা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে আমরা তাদের নিষেধ করি।