দেশে উন্নয়নের পথে প্রধান বাধা ‘দুর্নীতি’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৩, ১০:০২ পিএম
দেশের মোট জনসংখ্যার ৩০ ভাগ যুবসমাজ। সম্প্রতি এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফরম ৫ হাজার ৭৫ জন যুবককে নিয়ে একটি অনলাইন জরিপ পরিচালনা করেন। এতে ৬৯ দশমিক ৪ শতাংশ তরুণের মতে, বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে প্রধান বাধা দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি।
এছাড়া অন্য বাধাগুলো হলো স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব (৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ)। এর পরে রয়েছে স্বজনপ্রীতির প্রবণতা (৩২ দশমিক ৬ শতাংশ) এবং প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বা সমন্বয়ের অভাব (২৮ দশমিক ১ শতাংশ)। এর মধ্যে স্থায়ীভাবে বিদেশ চলে যেতে চায় ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা ৬৬ শতাংশ শিক্ষার্থী বেকার। এছাড়া জাতীয় নির্বাচনে কখনো ভোট দেয়নি এমন সংখ্যা ৫৩ দশমিক ৮ শতাংশ। রাজনীতিতে যুক্ত ৬৭ শতাংশ যুবারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা করে থাকে। জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সি যুবারা অংশ নেন।
রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের অডিটোরিয়ামে শনিবার এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফরম আয়োজিত ‘যুব সম্মেলন-২০২৩’-এ জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘দেশ হোক তেমন, যুবরা চায় যেমন’। চারটি অধিবেশনে এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফরমের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মোশরেকা অদিতি হক, বিএনপির সাংগঠিনক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সংসদ-সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু, সংসদ-সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, সংসদ-সদস্য আদেলুর রহমান ও নাগরিক প্ল্যাটফরমের সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।
নাগরিক প্ল্যাটফরমের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের জনসংখ্যা এখন প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি। এদের বড় একটি অংশই হচ্ছে তরুণ, যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫-এর মধ্যে। প্রতি দশকে এ বয়সিদের সংখ্যা ও অনুপাত বাড়ছে। ২০০১ সালে তরুণের সংখ্যা ছিল ২৯ শতাংশ, ২০১১ সালে ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ২০২২ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর নতুন ভোটার হয়েছে ৩ দশমিক ৫ কোটি যুব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের এখন সবচেয়ে বড় সম্ভাবনাময় জনশক্তি হচ্ছে যুবারা। এ যুবসমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রতিফলন ঘটাতে হবে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, সামনের নির্বাচনে আমরা যুবসমাজের অংশগ্রহণকে আরও জোরদারভাবে দেখতে চাই। নির্বাচন নিয়ে যেসব সংশয়, বিভ্রান্তি বা যেসব উদ্বেগ আছে, সেগুলো আগামী দিনে কেটে যাবে।
অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় অধিবেশনে একটি সংসদীয় বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এ বিতর্কের বিষয় ছিল আজকের যুবসমাজ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের দায়িত্ব নিতে হবে। এ সময় পক্ষে-বিপক্ষে যুব বিতার্কিকরা বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেন। তৃতীয় অধিবেশনে যুব চাহিদা ও প্রত্যাশা নিয়ে ১৪টি বিষয়ে আলোচনা করেন সম্মেলনে অংশ নেওয়া যুবারা। এতে গুরুত্বপূর্ণ যুব-চাহিদা বিষয় নিয়ে অনলাইনে ভোটিং করা হয়। এতে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছে যুব বেকারদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে নিবন্ধনব্যবস্থা চালু করা।