Logo
Logo
×

অন্যান্য

এশিয়ায় প্রবৃদ্ধির দৌড়ে ভারতের পরেই বাংলাদেশ: আইএমএফ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৪৮ পিএম

এশিয়ায় প্রবৃদ্ধির দৌড়ে ভারতের পরেই বাংলাদেশ: আইএমএফ

মোট দেশ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির দৌড়ে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। এক্ষেত্রে চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। তবে মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণের দিক থেকে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির দিক থেকে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের পরেই রয়েছে বাংলাদেশ।

শুক্রবার প্রকাশিত আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) রিজিওনাল ইকোনমিক আউটলুক অক্টোবর ২০২৩ বা আঞ্চলিক অর্থনৈতিক পূর্বাভাস অক্টোবর ২০২৩ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদিন প্রতিবেদনটির এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অংশ বিশেষ প্রকাশিত হয়েছে। ১৮ অক্টোবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হবে এবং ওই দিন আইএমএফের সিঙ্গাপুর অফিস থেকে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হবে। 

এর আগে ওই প্রতিবেদনের বিভিন্ন অঞ্চলের অংশ প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে প্রকাশিত আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকের উদ্ধৃতি দিয়ে বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

শুক্রবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি গত দুই বছর ধরে কমছে। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছরেও বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমে ৩ শতাংশ হতে পারে। ২০২৪ সালে তা আরও কমে ২ দশমিক ৯ শতাংশের পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি। এর ধারাবাহিকতায় এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চলতি বছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। আগামী বছরে তা কমে ৪ দশমিক ২ শতাংশ হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি। ভারতের প্রবৃদ্ধির হার অপরিবর্তিত রাখা হলেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার কমানো হয়েছে।

প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, এশিয়ার দেশগুলোতে প্রবৃদ্ধির দৌড়ে ভারতের পরেই রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ শতাংশ। ভারতে হবে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। এর আগে আইএমএফ বলেছিল বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে সাড়ে ৬ শতাংশ। ওই প্রাক্কলন থেকে দশমিক ৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। ২০২৩ সালে চীনের প্রবৃদ্ধি হবে ৫ শতাংশ। ২০২৪ সালে তা আরও কমে হবে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। এছাড়া এশিয়ার অন্য দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের নিচে থাকবে।

এতে বলা হয়, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবণতা বেড়েছে। এর মধ্যে চীন, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলহানির প্রবণতা বেড়েছে। এসব দেশে জলবায়ুর প্রভাব প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে বড় ঝুঁকি হিসাবে দেখা দিয়েছে।

আগামী বছরে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে ভুটানের ৩ শতাংশ, মালদ্বীপের ৫ শতাংশ, নেপালের ৫ শতাংশ, পকিস্তানে ২.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। শ্রীলংকার প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে আইএমএফ কোনো পূর্বাভাস দেয়নি। তবে ৩ অক্টোবর প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের রিজিওনাল ইকোনমিক আপডেট প্রতিবেশনে বলা হয়েছে, শ্রীলংকার ১ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।

আইএমএফের প্রতিবেদনে এশিয়ার অন্য দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে বলা হয়েছে- ইন্দোনেশিয়ার ৫ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ৪ দশমিক ৩ শতাংশ, মিয়ানমারের ২ দশমিক ৬ শতাংশ, থাইল্যান্ডের ৩ দশমিক ২ শতাংশ, ভিয়েতনামের ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, লাউসের ৪ শতাংশ, ফিলিপাইনে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে ইরানে ২ দশমিক ৫ শতাংশ, ইরাকে ২ দশমিক ৯ শতাংশ, কুয়েতে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ, ওমানে ২ দশমিক ৭ শতাংশ, কাতারে ২ দশমিক ২ শতাংশ, সৌদি আরবে ৪ শতাংশ, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। এছাড়া ফুটবলের দেশ বলে পরিচিতি আর্জেন্টিনার প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২ দশমিক ৮ শতাংশ, ব্রাজিল ১ দশমিক ৫ শতাংশ।

প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ বেশ পিছিয়ে রয়েছে। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে। বর্তমানে এ হার প্রায় ১০ শতাংশের কাছাকাছি। অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া শ্রীলংকা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। তাদের মূল্যস্ফীতির হারও কমছে। এ হার সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশে ওঠেছিল। চলতি বছর তা কমে ৪৫ দশমিক ২ শতাংশ নেমেছে। এটি আগামী বছর আরও কমতে পারে। পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতির হারও কমে ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে। এর আগে তা ৪৬ শতাংশে ওঠেছিল।

এছাড়া ভুটানের মূল্যস্ফীতির হার ৪ দশমিক ৪ শতাংশ, চীনের ১ দশমিক ৭ শতাংশ, ভারতের ৪ দশমিক ৬ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ২ দশমিক ৫ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ২ দশমিক ৭ শতাংশ, মালদ্বীপের ২ দশমিক ৮ শতাংশ, মিয়ানমারের ৭ দশমিক ৮ শতাংশ, নেপালের ৬ দশমিক ৭ শতাংশ, ফিলিপাইনের ৩ দশমিক ২ শতাংশ, থাইল্যান্ডের ১ দশমিক ৬ শতাংশ, ভিয়েতনামের ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, আর্জেন্টিনার ৯৩ দশমিক ৭ শতাংশ, ব্রাজিলের ৪ দশমিক ৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হতে পারে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম