সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সংবাদ সম্মেলন
একাত্তরে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৩৮ পিএম
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংগঠিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিসহ আট দফা দাবি জানিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস্ ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১। সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এসব দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের মহাসচিব হারুন হাবীব বলেন, শতাব্দী প্রাচীন আর্মেনিয়া গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে ইউরোপে নির্মম গণহত্যার শিকার লাখো ইহুদি জনগোষ্ঠীর নিধনের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিককালের রুয়ান্ডা, কম্বোডিয়া, সিয়েরা লিওন, বসনিয়ার গণহত্যাকেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি! তিনি আরও বলেন, তথ্য উপাত্তসহ শিগগিরই আমাদের দাবিগুলো রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপস্থাপন করা হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
সংগঠনের কার্যনির্বাহী সভাপতি নূরুল আলমের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম হামিদ, মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, সাবেক আইজিপি কেএম শহিদুল হক, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারী, আবদুল মাবুদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু প্রমুখ।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের ঘাতক দোসরদের সংগঠিত নিষ্ঠুরতম গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া; জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কুশীলবদের চিহ্নিত করতে অবিলম্বে জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন এবং তদন্তের ফলাফল স্বেতপত্র আকারে প্রকাশ করা; যুগ যুগ ধরে নতুন প্রজন্মের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পৌঁছে দিতে দেশের সব অঞ্চল এবং প্রধান প্রধান যুদ্ধক্ষেত্র-বধ্যভূমিতে ‘মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভ’ নির্মাণ করা; মুক্তিযুদ্ধের বন্ধুরাষ্ট্র ভারতীয় মিত্র বাহিনীর আত্মত্যাগকারী সদস্যদের প্রতি সম্মান জানাতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা; সংবিধানে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ’ ও ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দগুলো সংযোজন করা; জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ‘ভিআইপি’ মর্যাদা নিশ্চিত করা; দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সরকারি খরচে অগ্রাধিকারভিত্তিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা; বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতার অঙ্ক প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণ করা; ১৯৭২ সালের সংবিধান পুনরুদ্ধার করা; উগ্র সাম্প্রদায়িক ও ধর্মান্ধ দলকে নিষিদ্ধ করা; সব অঞ্চলে বাঙালি সংস্কৃতিচর্চার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা করা এবং সব পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের হাতে মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিকৃত ইতিহাস সরবরাহ করা এবং দেশের সব অভ্যন্তরীণ সংকটের সমাধান অবশ্যই দেশের ভেতর থেকে করা, বাইরের হস্তক্ষেপে নয়।