Logo
Logo
×

অন্যান্য

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি

তড়িঘড়ি করে ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন’ পাশ হলে সুফল মিলবে না

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৫২ পিএম

তড়িঘড়ি করে ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন’ পাশ হলে সুফল মিলবে না

‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন-২০২৩’ দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাইবার নিরাপত্তা আইনের মতো এটিও তড়িঘড়ি করে পাশ হলে এর সুফল মিলবে না। এজন্য বোর্ডকে সম্পূর্ণ স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রাখতে হবে।

বুধবার রাজধানীর নিজস্ব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এ কথা বলেছে। 

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিআইবির ডেটা প্রটেকশন অফিসার ড. তারিকুল ইসলাম। এ সময়ে আইনটির নাম পরিবর্তনের আহ্বান জানায় টিআইবি। 

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের জন্য যেভাবে তড়িঘড়ি করা হয়েছে, খসড়া উপাত্ত সুরক্ষা আইনের এমনটি করা ঠিক নয়। কারণ এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আইন। সরকার এরই মধ্যে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আইন তৈরির ক্ষেত্রে অংশীজনের অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। সেই সুযোগটা যেন শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। আর চূড়ান্ত খসড়া সংসদে উপস্থাপনের আগে সবার সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। 

তিনি বলেন, দেশের সংবিধানে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার যে বিধান আছে, সেটিকে রেফারেন্স হিসাবে থাকলে আইনটি আরও বেশি মানবাধিকারকেন্দ্রিক হবে। ড. 

তারিকুল ইসলাম বলেন, এর আগে ব্যক্তিগত উপাত্তের সংজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছিলাম। আইনটি শুধু ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষার আইন হলেও এতে এ বিষয়ে অর্থবহ সংজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত হয়নি। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, টিআইবি বেনামি এবং ছদ্মনামযুক্ত উপাত্তের মধ্যে পার্থক্য করার পরামর্শ দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক চর্চা অনুযায়ী আইনটি পাশের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য অন্তত দুই বছর গ্রেস পিরিয়ডের সুপারিশ আগের খসড়ায় থাকলেও নতুনটিতে নেই। এছাড়া আইনের খসড়াতে ‘ডেটা সাবজেক্ট’র একটি পূর্ণাঙ্গ সংজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছিল টিআইবি। কিন্তু তা আমলে নেওয়া হয়নি। 

সংস্থাটি জানায়, উপাত্ত সুরক্ষা আইন কেবল প্রাকৃতিক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, কিন্তু খসড়া আইনে তার প্রতিফলন নেই। আবার সংজ্ঞা ধারা পুনর্গঠনের জন্য টিআইবির সুপারিশ যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি।

টিআইবির পর্যালোচনায় আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক চর্চা অনুযায়ী ‘প্রোফাইলিং’ পুনরায় সংজ্ঞায়িত করার বিষয়ে সংস্থার পরামর্শ ছিল এবং তার প্রয়োজন এখনো বিদ্যমান এবং আলোচ্য সংজ্ঞাটি অপূর্ণাঙ্গ। এছাড়া একটি স্বাধীন উপাত্ত সুরক্ষা প্রতিষ্ঠা সংস্থা সম্পর্কিত টিআইবির পরামর্শ যথাযথভাবে মূল্যায়িত হয়নি। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। 

পর্যালোচনায় বলা হয়, ওইসিডি গোপনীয়তা নির্দেশিকাগুলোর আলোকে উপাত্ত সুরক্ষার নীতিমালা প্রণয়ন সংক্রান্ত টিআইবির সুপারিশ অনুসৃত হয়নি। সংবেদনশীল ব্যক্তিগত উপাত্ত প্রসেসিংয়ের জন্য আইনি বাধ্যবাধকতা স্থাপনে টিআইবির পরামর্শ গ্রহণ করা হয়নি। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা, আইনগত কার্যধারার মতো প্রয়োজন ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিগত উপাত্তের প্রসেসিং নিষিদ্ধের সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। 

টিআইবির পর্যালোচনায় আরও বলা হয়, অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণের সম্মতির বয়স সামঞ্জস্যের জন্য সংস্থাটির সুপারিশ বিবেচনা করা হয়নি। ১৮-এর পরিবর্তে ১৩-১৬ এই বয়সক্রমের পরামর্শ দিয়েছিল টিআইবি। কিন্তু তা আমলে নেওয়া হয়নি। উপাত্ত সংশোধন এবং প্রত্যাখ্যানের আগে উপাত্তধারীর আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে টিআইবির প্রস্তাব স্বীকার করা হয়নি। বিদেশি নাগরিকদের উপাত্ত সংরক্ষণের অধিকারের বিষয়ে সুপারিশে যথাযথ মনোযোগ দেওয়া হয়নি। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দ্বারা গোপনীয়তা এবং ব্যক্তিগত উপাত্তের সুরক্ষা সীমাবদ্ধ না করার জন্য টিআইবির পরামর্শ বিবেচনা করা হয়নি। সংস্থাটি আশা করছে, নতুন এই আইন সংসদে পাশ হওয়ার আগে সময় নিয়ে পর্যালোচনা করে যেন পাঠানো হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম