Logo
Logo
×

অন্যান্য

সরকারি কেনাকাটায় দরপত্র প্রক্রিয়া সংস্কারের তাগিদ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৪০ পিএম

সরকারি কেনাকাটায় দরপত্র প্রক্রিয়া সংস্কারের তাগিদ

প্রতীকী ছবি

সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দেওয়া অথবা ব্যাপক প্রাতযোগিতা মানেই ভালো দরপত্র প্রক্রিয়া- এটা বলার কোনো সুযোগ নেই। কারণ অনেক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বেশি হলে কাজের মান খারাপও হতে পারে। সেজন্য বর্তমান সরকারি কেনাকাটায় দরপত্র প্রক্রিয়ায় ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন। বিশেষ করে কোরিয়াসহ উন্নত দেশগুলো যেসব পদ্ধতি অনুসরণ করে সেগুলো কাজে লাগানো যেতে পারে। 

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত সেমিনারে এমন তাগিদ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইডিএস সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সংস্থাটির মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ফাহাদ খলিল। ‘কম্পিটিটিভ প্রকিউরমেন্ট উইথ এক্স পোস্ট মোরাল হ্যাজার্ড’ শীর্ষক সেমিনারে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আবদুস সাত্তার মন্ডল এবং বিআইডিএসের গবেষকরা বক্তব্য দেন।

ফাহাদ খলিল বলেন, সরকারি কেনাকাটায় দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধের অন্যতম উপায় হলো পদ্ধতিগত সংস্কার। এক্ষেত্রে কোরিয়ার মডেল হলো- দরপত্র জমা হওয়ার পর সব খুলে দামগুলোর গড় করা হয়। এরপর গড়ের কাছাকাছি যার দাম- সেই প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়। এছাড়া আরেকটি কাজ করা হয়। সেটি হলো- একটি নির্দিষ্ট দর বেঁধে দিয়ে এর নিচে যারা দরপত্র উল্লে­খ করবে তাদেরটা বাদ দিয়ে এরপর সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দেওয়া। প্রচলিত ধারণা হলো- দরপত্রে বেশি প্রতিযোগিতা হলেই ভালো। কিন্তু এটা সব সময় ভালো নাও হতে পারে। এর ফলে যে কাজ পাবে তিনি পরে মানসম্মত কাজ নাও করতে পারেন। তাই শুধু কাজ দিয়ে বসে থাকলে হবে না- তদারকিও বাড়াতে হবে। ঠিকাদার বাছাইয়ের সঙ্গে তদারকিরও ভূমিকা ব্যাপক। 

তিনি আরও বলেন, সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দিতে হবে- এ ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কেননা কাজ পাওয়ার জন্য ঠিকাদার কম দাম দিতে পারেন। পরবর্তী সময়ে কাজের মান খারাপ হবে। অথবা প্রকল্পের ক্ষেত্রে টাইম ওভাররান ও কস্ট ওভাররান হতে পারে। পাশাপাশি ঠিকাদারের জন্য ভালো কাজের প্রণোদনা এবং খারাপ কাজের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা রাখতে হবে।

ড. বিনায়ক সেন বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধির ঘটনা ঘটছে। এক্ষেত্রে ঘুরেফিরে একই ঠিকাদার কাজ পাচ্ছেন। কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে লো কস্ট বিবেচনা বড় হওয়া উচিত নয়। প্রকিউরমেন্ট রুল সংস্কারের সুযোগ আছে। এটি সরকার ভেবে দেখতে পারে। অনেক দেশের দরপত্র পদ্ধতির মডেল উপস্থাপন করেছেন প্রফেসর ফাহাদ খলিল। সেগুলোও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা দরকার।

ড. আবদুস সাত্তার মন্ডল বলেন, দুর্নীতি বন্ধে ইজিপি ভালো কাজ করছে। তবে প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়েও আমাদের চিন্তা-ভাবনা প্রসারিত করা দরকার। ফাহাদ খলিলের দেওয়া উদাহরণগুলো ভেবে দেখা প্রয়োজন। তবে দরপত্র প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা যুক্ত থাকেন তাদেরও সৎ ও স্বচ্ছ হতে হবে। স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি থেকে দূরে থাকতে হবে সবাইকে। 

সেমিনারে চিলি, চীন, ইতালি, জাপান, পেরু ও সুইজারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের দরপত্র প্রক্রিয়া তুলে ধরেন প্রফেসর ফাহাদ খলিল।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম