‘রাজপথ থেকে আদালত পর্যন্ত সহিংসতা ছড়াচ্ছে বিএনপি’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৩৩ পিএম
পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, দেশ অস্থিতিশীল করতে বিএনপি রাজপথ থেকে আদালত পর্যন্ত সহিংসতা ছড়াচ্ছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে বানচাল বা প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিচারহীনতা ও মানবাধিকারের ধোঁয়া তুলে দেশি-বিদেশি শক্তি সক্রিয় রয়েছে।
শনিবার রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ডা. কামরুল হাসান খান।
পেশাজীবীরা বলেন, নির্বাচন বানচালের জন্য দেশি-বিদেশি শক্তি সচল। ড. ইউনূস, বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকারের কথা বলে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি সক্রিয়। নির্বাচনে যোগ্য ও সৎ প্রার্থী মাঠে থাকা দরকার বলেও মন্তব্য করেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ইনডেমনিটি দেওয়ায় বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছিল। তারাই আবার এখন বিচারহীনতার কথা বলছে! যারা বাংলাদেশকে বটমলেস বাস্কেট বলেছিল, তারাও ষড়যন্ত্রে যোগ দিয়েছে।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম. হামিদ পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট যখন বোমা হামলা করে বিরোধী দলের নেতাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়, সেই বিষয়ে কি বিদেশি শক্তি নিন্দা করেছে? ১৯৭১ সালে হত্যাযজ্ঞ নিয়ে কি তারা নিন্দা করেছেন? অতীতের অপকর্মগুলোতে নিন্দা জানাতে তারা সামনে এসেছিলেন?
পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোই বিশ্বের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বড় উৎসাহদাতা বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের দেখে সাধারণ মানুষ ভয় পাবে, তা কখনোই ভালো নয়। সংকটজনক সময়ে যেন পেশাজীবীরা মাঠে নামেন। না হলে যত উন্নয়ন নিয়ে কথা বলি, ভোটে তা বড় প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু দলের ভেতরের নেতাদের খারাপ কাজ ভোটে প্রচণ্ড প্রভাব ফেলবে। নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়াকে ভালো করতে না পারলে, ভালো মানুষ নির্বাচনে নামবে না।
আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু বলেন, বিএনপির আইনজীবীরা আদালতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। এজন্য ভাড়াটে লোক দিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে সহিংসতা ছড়ানো হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা বলেন, শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন মডেলকে সামনে নিয়ে আসতে হবে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের দেশি-বিদেশি অপশক্তি। বৈশ্বিক শক্তির সঙ্গে স্থানীয় শক্তির অপপ্রচারের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, আগামী নির্বাচনকে নিয়ে আত্মসমালোচনা করা প্রয়োজন। নতুবা রণকৌশলে পিছিয়ে পড়বে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি। যারা মানবাধিকারের কথা বলছে, তারা কিভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে তা মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে, নতুবা আবার সাম্প্রদায়িক শক্তি ক্ষমতা দখল করবে। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে পণ্যের দাম হাতের নাগালের বাইরে, যা সরকারের সব উন্নয়নকে ধূলিসাৎ করে দিচ্ছে।
বর্তমান মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সমালোচনা করে অর্থনীতিবিদ আবুল বারাকাত বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে গণতন্ত্র শিখিয়ে যাচ্ছে।
আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন- অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, আইইবির প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসস’র এমডি সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ, নাট্যকার ও অভিনেতা পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিক গোলাম কুদ্দুস, ডুয়েটের ভিসি অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজে’র একাংশের মহাসচিব সাংবাদিক দীপ আজাদ প্রমুখ।