এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:০৬ পিএম
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং পরিবেশগত সুরক্ষা থেকে নিরাপত্তা পর্যন্ত জটিল সব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। তাই এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শনিবার বিআইআইএসএস মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক : অপরচুনিটিস অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং বিআইআইএসএস-এর চেয়ারম্যান এএফএম গৌসল আজম সরকার। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ এবং বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর রিজিওনাল স্টাডিজ দিনব্যাপী এ সেমিনারের আয়োজন করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কৌশলগত দিক থেকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল বাংলাদেশ এবং বিশ্বের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গোপসাগরের একটি উপকূলীয় দেশ হিসাবে বাংলাদেশ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হওয়ার জন্য, ‘ভিশন ২০৪১’ বাস্তবায়নের জন্য ইন্দো-প্যাসিফিকের স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া, সহযোগিতা এই অঞ্চলের বিশেষ করে বৃহত্তর বিশ্বের স্থিতিশীলতা, শান্তি এবং সমৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। সংযোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক এবং উপ-আঞ্চলিক একত্রীকরণের জন্য আমাদের আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যৌথভাবে আমরা জলবায়ু পরিবর্তন এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তার মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি।
এ সময় তিনি বলেন, মহাসড়ক, অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় জলপথ, রেলপথ এবং বিমানপথের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান মাল্টিমোডাল সংযোগ, ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর বিচ্ছিন্ন সংযোগ পুনরুদ্ধার, ডিজেল পরিবহণের জন্য ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের মতো প্রকল্পের মাধ্যমে জ্বালানি সংযোগ, আন্তঃসীমান্ত পাওয়ার গ্রিড সংযোগ, ডিজিটাল কানেকটিভিটি রয়েছে। বিআইএন এমভিএ (বাংলাদেশ ইন্ডিয়া নেপাল মোটর ভেহিক্যাল অ্যাগ্রিমেন্ট) এবং এর মতো ব্যবস্থার মাধ্যমে অন্য প্রতিবেশীদের সঙ্গে এ ধরনের সংযোগের উপ-আঞ্চলিক সম্প্রসারণ আঞ্চলিক একত্রীকরণের প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ একটি কানেকটিভিটি হাবে পরিণত হয়েছে। কারণ আমরা বিশ্বাস করি, সংযোগই উৎপাদনশীলতা।
আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের ‘ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক’ সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়। জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সাম্যের প্রতি সম্মান, রাজনৈতিক স্বাধীনতা, অন্যের আন্তর্জাতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক আইন ও নীতির প্রতি শ্রদ্ধা আমাদের দীর্ঘদিনের নীতি থেকে গৃহীত।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয় অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। আমাদের ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক বিশ্বকে জানানোর একটি প্রচেষ্টা যে এই অঞ্চলের অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য নয়, কেবল যারা এখানে বাস করে, শুধু তাদের জন্যও নয়, বরং পুরো বিশ্বের জন্য।
শাহরিয়ার আলম বলেন, একটি মুক্ত, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল এবং এর বাইরে শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। সুতরাং আমাদের ইন্দো-প্যাসিফিক দৃষ্টিভঙ্গি নিরাপত্তাকেন্দ্রিক নয়, বরং আমরা এই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করি।