Logo
Logo
×

অন্যান্য

‘৫ শতাংশ প্রণোদনা কর্মচারীদের বৈষম্য আরও বাড়বে’

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৩, ০৮:১৯ পিএম

‘৫ শতাংশ প্রণোদনা কর্মচারীদের বৈষম্য আরও বাড়বে’

সরকারের ঘোষিত ৫ শতাংশ প্রণোদনা অসন্তোষ্ট প্রকাশ করেছে সরকারি কর্মচারীরা। তাদের অভিযোগ, এ প্রণোদনা ১১-২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য আরও বাড়বে। তাই প্রণোদনা না দিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী পর্যায়ে গ্রেড সংখ্যা কমিয়ে বেতন বৈষম্যমুক্ত নতুন পে-স্কেল দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। 

শনিবার রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলেন ধরে ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ’ নামে একটি সংগঠন। মহার্ঘ্য ভাতা, গ্রেড বৈষম্য কমানো, নতুন পে-স্কেলসহ নানা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে সংগঠনটি। 

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মুখ্য সমন্বয়ক মো. ওয়ারেছ আলী বলেন, ঐক্য পরিষদের ৯ম পে-স্কেলসহ ৭ দফা দাবি বাস্তবায়ন না করে অর্থ মন্ত্রণালয় ৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা দেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছে তা বর্তমান বাজার ব্যবস্থার ও মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এতে প্রজাতন্ত্রের ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারিরা চরমভাবে হতাশ ও ক্ষুদ্ধ। আমাদের মূল দাবি কর্মচারীদের বৈষম্য দূর করা। কিন্তু তা না হয়ে ৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধায় ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের বৈষম্য আরও বাড়বে। কারণ ১১-২০ গ্রেডের অধিকাংশ কর্মচারিদের মূল বেতন ২০ হাজার টাকার নিচে। তাদের আগামী ৪ থেকে ৫ বছরেও বিশেষ সুবিধা সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে উঠবে না। অথচ প্রথম থেকে ৯ম গ্রেডের কর্মচারীদের এ সুবিধা চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়বে। আমরা এ ধরনের বিশেষ সুবিধা চাইনি। আমরা চেয়েছি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের মূল বেতন বৃদ্ধি করা হবে। যাতে কর্মচারিরা পরবর্তীতে এর সুবিধা পেতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই প্রণোদনা মূল বেতনের সঙ্গে যোগ না হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কর্মচারীরা। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন পে-স্কেল ঘোষণা করে বেতন বৈষম্য কমাতে ১০ ধাপে বেতন-ভাতা নির্ধারণ, পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখা, সচিবালয়ের মতো সব দপ্তর ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের পদ এবং পদবি এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন, টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড, বেতন জ্যেষ্ঠতা পুনর্বহাল এবং সব স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে গ্র্যাচুইটির পরিবর্তে পেনশন প্রবর্তনসহ বিদ্যমান আনুতোষিকের হার ৯০ শতাংশের স্থলে ১০০ শতাংশ নির্ধারণ। এই দাবি আদায় না হওয়া পযন্ত আমরা সন্তষ্ট হবো না।   

আন্দোলনের নানা প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ওয়ারেছ আলী বলেন, ২০১৯ সাল থেকে এসব দাবিতে মাঠে রয়েছি। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রী, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের মন্ত্রী, সচিবকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। দাবি না মানায় সর্বশেষ ২৬ মে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। একসময়ে প্রধানমন্ত্রী প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন বাড়ানোর জন্য সংসদে বক্তব্য দেন এবং জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বেতন বাড়ানো এবং বিদ্যমান অসঙ্গতি দূর করার আশ্বাস দেন। এই প্রেক্ষিতে মহাসমাবেশের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। ৫ শতাংশ প্রণোদনায় আমাদের বেতন-ভাতাদি বৃদ্ধি সব আশাকে নিরাশায় পরিণত করেছে। 

সরকারি কর্মচারীরা বলেন, ৮ম পে-স্কেলে প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি পায়। এ পে-স্কেলে বলা ছিল, মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে বেতন-ভাতা সমন্বয় করে বৃদ্ধি করা হবে। কিন্তু গত আট বছরে বাজারে পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেলেও বেতন বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশের ঘরেই রয়েছে। ২০১৫ সালে ৫ শতাংশের মুদ্রাস্ফীতি এখন ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। এরপরও ৫ শতাংশ হারেই বেতন বৃদ্ধি হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঐক্য পরিষদের নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবিদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরামের সভাপতি মো. নুরে রহমান, বাংলাদেশ ১৭-২০ গ্রেড কর্মচারি সমিতির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন হাওলাদার, বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি জিয়াউল হক, বাংলাদেশ ৩য় শ্রেণি সরকারি কর্মচারী সমিতির সমন্বয়ক মো. ছালজার রহমানসহ কেন্দ্রীয় কমিটি নেতারা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম