ট্রেনে ঠেকানো যায়নি বিনা টিকিটে ভ্রমণ, নৌ-সড়কপথে বাড়ছে ভিড়
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৩, ১০:৩৬ পিএম
ঈদযাত্রার প্রথম দিনেই লোকাল-মেইল ট্রেনে ঠাঁই ছিল না। আন্তঃনগরেও আসনসংখ্যার চেয়ে ২৫ শতাংশ যাত্রী আসনবিহীন টিকিট কেটে ভ্রমণ করেছেন। এছাড়া প্রায় সমপরিমাণ যাত্রী গেছেন বিনা টিকিটে। রোধ করা যায়নি বিনা টিকিটে ভ্রমণ।
শনিবার ভোর থেকে ট্রেনে ঈদযাত্রা শুরু হয়। ১৪ জুন অগ্রিম টিকিট কাটা যাত্রীরা এদিন ভ্রমণ করেন। এদিন ৭৬টি আন্তঃনগর ও ৭২টি লোকাল-মেইল ও কমিউটার ট্রেন ঢাকা থেকে ছেড়ে গেছে। সকাল ৬টায় রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ট্রেনে ঈদযাত্রা। এর পরপর পারাবত, মহানগর প্রভাতী, নীলসাগর এক্সপ্রেসসহ অন্যান্য ট্রেন ঘরমুখী মানুষকে নিয়ে রওয়ানা হয় গন্তব্যে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, শুধু যাত্রার দিন মোট আসনের বিপরীতে ২৫ শতাংশ সিটবিহীন টিকিট দেওয়া হচ্ছে। কমলাপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহী স্টেশনে নিরাপত্তা কিংবা বিনা টিকিটে ভ্রমণ রোধে কমবেশি ব্যবস্থা থাকলেও বাকি ৯০ শতাংশ স্টেশন প্রায় উন্মুক্ত। এসব স্টেশনে খুব সহজেই ঢোকা ও বের হওয়া যায়। ঈদযাত্রায় প্রচণ্ড ভিড় থাকায় এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে বিনা টিকিটের যাত্রীরা। যাত্রীসেবায় তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবু বিনা টিকিটে ভ্রমণ রোধ করা যাচ্ছে না। ট্রেনের ছাদ, দরজা, ইঞ্জিন, দুই বগির সংযোগস্থল ও ভেতরে ঝুলে-দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন এসব যাত্রী।
কর্তৃপক্ষের ভাষ্য- ২৬, ২৭ ও ২৮ জুন কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া ১৪৮টি যাত্রীবাহী ট্রেন আসনসংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি যাত্রী নিয়ে চলবে। তবে যাত্রীরা সচেতন না হলে আইন দিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী রোধ করা সম্ভব নয়। ঈদ ধর্মীয় উৎসব। ইচ্ছে করলেই অবৈধ যাত্রীদের জোর করে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া সম্ভব হয় না।
চট্টগ্রাম ব্যুারো জানায়, শনিবার চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ১০টি আন্তঃনগর ট্রেনে প্রায় ৭ হাজার আসনের টিকিটধারী যাত্রী ভ্রমণ করেছেন। এছাড়া আসনবিহীন আরও ২৫ শতাংশ যাত্রী ভ্রমণ করেছেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আবিদুর রহমান যুগান্তরকে জানান, শনিবার শিডিউলের কোনো হেরফের হয়নি। ২৬ জুন ১০টি আন্তঃনগর, মেইল ও ঈদ স্পেশাল মিলে মোট ১৭টি এবং ২৭ ও ২৮ জুন ময়মনসিংহগামী একটি স্পেশালসহ ১৮টি ট্রেন চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ঈদযাত্রীদের নিয়ে যাবে।
নৌপথ: রাজধানী থেকে নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রা নিশ্চত করতে ঢাকা নদীবন্দরে শতাধিক বিলাসবহুল লঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে। শনিবার সদরঘাটে ভিড় বাড়লেও যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে গন্তব্যে যাত্রা করেছেন। তবে অধিকাংশ লঞ্চের কেবিন অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। ভোলার ইলিশা ও চাঁদপুর রুটে প্রতি ঘণ্টায় লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে। ইলিশা রুটে ডেক যাত্রীপ্রতি পাঁচশ, সিঙ্গেল কেবিন এক হাজার, ডবল কেবিন ২ হাজার ও ভিআইপি কেবিন ৫ হাজার টাকা করে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ঈদে ৩০ লাখ যাত্রী নৌপথে যাতায়াত করবেন। ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক (ট্রাফিক) কবির হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সড়কপথ: অন্য দিনের তুলনায় শনিবার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুরে যানবাহনের চাপ বেশি ছিল। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্বিতীয় মেঘনা-গোমতী সেতু চালুর ফলে যানজটের বিড়ম্বনা আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। দীর্ঘ যানজটে আটকে থাকার ঝুঁকি না থাকায় ওই অঞ্চলের মানুষকে ঈদযাত্রায় সড়কপথকেই বেছে নিতে দেখা গেছে। এছাড়া রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ মহাসড়কের অবস্থা ভালো হওয়ায় এবারের ঈদযাত্রায় দীর্ঘ যানজটের আশঙ্কা কম বলেও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।