ফাইল ছবি
আসন্ন ঈদুল আজহা হবে বর্ষায়। আষাঢ়ের এই ঈদে শেকড়মুখো মানুষকে আবহাওয়া দেখে নৌপথে চলাচলের অনুরোধ জানিয়েছে নৌপুলিশ। পাশাপাশি ঈদকে সামনে রেখে সূর্যাস্তের পর বালুবাহী বাল্কহেড ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধসহ বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নৌপথে কুরবানির গরু পরিবহণে সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। তাছাড়া নৌযান চলাচলের পথে মাছ শিকারের জন্য জাল বিছানো প্রতিরোধ করতে বলেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার নৌপুলিশ সদর দপ্তরে নৌপথে আইনশৃঙ্খলা ও নৌ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় নৌপুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজি মো. শফিকুল ইসলাম সভাপতির বক্তব্যে এসব নির্দেশনা দেন।
নৌপুলিশের সব অঞ্চলের পুলিশ সুপার সরাসরি এবং নৌপুলিশের ১৪২টি থানা-ফাঁড়ির কর্মকর্তারা অনলাইনে এতে যুক্ত ছিলেন।
সভার শুরুতে একটি ভিডিও এবং পাওয়ার পয়েন্ট প্রদর্শনের মাধ্যমে ঈদুল আজহা উদ্যাপনে নৌপুলিশের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। সভায় বক্তারা নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ নৌপথ নিশ্চিতে বিভিন্ন বিষয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
মতবিনিময় সভায় যেসব বক্তব্য উঠে এসেছে তার মধ্যে রয়েছে- লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ থেকে বিরত থাকা, ছোট ও ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চে যাত্রী পরিবহণে বিরত থাকা, লঞ্চে যাত্রীর আনুপাতিক হারে লাইফ জ্যাকেট ও বয়া প্রভৃতির ব্যবস্থা রাখা। আরও আছে- সরকার নির্ধারিত সময়ে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা, চাঁদাবাজি, চুরিসহ যে কোনো হয়রানি বন্ধে বিশেষ নজরদারি বৃদ্ধি, বৈধ কাগজপত্রবিহীন কোনো নৌযান না চালানো, ন্যায্যমূল্যে ভাড়া আদায়ে তদারকি।
সভায় নৌপুলিশ প্রধান বলেন, পবিত্র ঈদে নৌযাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে নৌপুলিশ সব নৌঘাট, নৌ-টার্মিনালে দায়িত্ব পালন করবে। কোনো নৌযান যেন প্রতিযোগিতামূলকভাবে বেশি যাত্রী বোঝাই করে অতিরিক্ত স্পিডে নৌযান না চালায়। নদীতে নৌযানগুলো সঠিকভাবে নোঙর করে না রাখা নৌদুর্ঘটনার অন্যতম একটি কারণ। তিনি নৌযানকে সুশৃঙ্খলভাবে নোঙর করার জন্য ‘বার্দিং প্লেস’ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান।
অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তেল, গ্যাস ও সিমেন্টের কার্গো জাহাজ পার্কিং থাকায় সমস্যা হচ্ছে। ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের লঞ্চ চলাচল করে থাকে ফতুল্লা-মুন্সীগঞ্জ নৌপথে। এলোমেলোভাবে কার্গো জাহাজ পার্কিং করে রাখার কারণে বিভিন্ন সময়ে এ রুটে নৌদুর্ঘটনা দেখা যায়।
নৌপুলিশ প্রধান বলেন, কুরবানির গরুসহ অন্যান্য পণ্যবাহী নৌযান নৌপথে যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকে নৌপুলিশের বিশেষ নজরদারি থাকবে। নৌপথে যেকোনো সমস্যায় নৌপুলিশের কন্ট্রোল রুমের নম্বর-০১৩২০১৬৯৫৯৮ অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধম্যে নৌপুলিশকে জানালে সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সভায় বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল সংস্থা- বাঅনৌচ (যাত্রী পরিবহণ), লঞ্চ মালিক সমিতি, নৌ-পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ নৌ-পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশন, কার্গো ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ জাহাজি শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন, বাংলাদেশ কার্গো ট্রলার বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।