ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু, বাসে চাপ কম রেলে জনশূন্য
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:০৪ পিএম
রাজধানীর গাবতলীতে কাউন্টারে ভোগান্তি ছাড়া ঈদের অগ্রিম বাসের টিকিট পেয়ে দারুণ খুশি যুবক ও জনশূন্য কমলাপুর রেলস্টেশন (ডানে)।
শুক্রবার রেলে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছে। ওই দিন ১০৪টি আন্তঃনগর ট্রেনের শতভাগ টিকিট অনলাইনে ছাড়া হয়। দীর্ঘ ১৬১ বছর পর এই প্রথম ৪৬৬টি স্টেশনে আন্তঃনগর কাউন্টার বন্ধ ছিল।
যুগের পর যুগ সাধারণ মানুষ ঈদের অগ্রিম টিকিট কাটতে দিন-রাত অপেক্ষা করত কাউন্টারে। শুক্রবার চিরচেনা ওই চিত্র গণমাধ্যমকর্মী তথা সাধারণ মানুষের চোখে পড়েনি। কাউন্টার ছিল জনশূন্য। ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। সেই থেকেই কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হচ্ছিল। গত কয়েক বছর ধরে মোট টিকিটের ৫০ শতাংশ অনলাইন এবং বাকি ৫০ শতাংশ কাউন্টারে বিক্রি হতো। শুক্রবার থেকে যা শতভাগ অনলাইনে বিক্রি শুরু হয়।
এদিকে বাসে অগ্রিম টিকিট কাটতে কিছুটা ভিড় চোখে পড়লেও রেলওয়ে স্টেশন কাউন্টারে কোনো সাধারণ মানুষ চোখে পড়েনি।
ঢাকা রেলওয়ে বিভাগীয় প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মো. শাহ আলম কিরণ শিশির যুগান্তরকে জানান, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনসহ কোনো স্টেশনেই শুক্রবার কাউন্টার থেকে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়নি। অগ্রিম টিকিট বিক্রির কাউন্টারগুলো শূন্য ছিল। আমরা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রির ব্যবস্থা করেছি। সাধারণ মানুষ অনলাইন থেকেই টিকিট কেটেছেন। সীমিত টিকিট থাকায় পশ্চিমাঞ্চলে চলা আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে।পূর্বাঞ্চলে চলা আন্তঃনগর ট্রেনের বেশ কিছু টিকিট অবিক্রিত আছে। কোনো অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ছিল না।
শিশির বলেন, শুক্রবার অগ্রিম টিকিট বিক্রির প্রথম দিন ছিল। এদিন ১৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়। শনিবার দেওয়া হবে ১৮ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট। গত ঈদে অগ্রিম টিকিট কাটতে স্টেশনে হাজার হাজার মানুষ দিন-রাত অবস্থান করেছে। কেউ পেয়েছে, কেউ পায়নি। এবার এমন দৃশ্য নেই। তবে স্টেশনে আমরা সাধারণ যাত্রীদের সহায়তা করছি। যারা নিবন্ধন করতে পারছেন না কিংবা বুঝতে পারছেন না- তাদের নিবন্ধন করে দিচ্ছি।
রেলওয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করছি। যে সংস্থা দ্বারা টিকিট বিক্রির কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে, তা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। আমরা কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি, টিকিট বিক্রয়ে কোনো অব্যবস্থাপনা সহ্য করা হবে না। সাধারণ মানুষ যাতে কোনো ভোগান্তি না পোহাতে হয়। সাধারণ মানুষের কল্যাণেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিগত ঈদগুলোতে হাজার হাজার মানুষ স্টেশনে অপেক্ষা করতো। কেউ টিকিট পেত, কেউ পেত না। এবার এমনটা হচ্ছে না।’
এদিকে রাজধানীতে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রিও শুক্রবার শুরু হয়েছে। বাস যাত্রীরাও সহজে বাসের টিকিট কাটতে পারছেন। অন্যান্য বছরগুলোর চেয়ে এবার তুলনামূলক ভিড় কম- এমনটা বলছেন সাধারণ যাত্রীরা। গাবতলীতে হানিফ কাউন্টারে টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা ইসমাইল খান বলেন, ভোর থেকেই আমরা টিকিট বিক্রি শুরু করে দিয়েছি। অন্যবারের তুলনায় এবার কাউন্টারগুলোয় ভিড় কিছুটা কম। পূর্বের ঈদে ভিড় ছিল। তবে সামনের দিনগুলোতে ভিড় বাড়বে। ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে শুক্রবার থেকে বেসরকারি বাস অপারেটরগুলো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করে।