‘রমজানে মোবাইল কোর্টের নামে হয়রানি বন্ধ করতে হবে’

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৩, ০৬:৪৯ পিএম

ফাইল ছবি
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেছেন, নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তরের অসহযোগিতা ও সমন্বয়হীনতা।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলা বলেন।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমানে ১২টি অধিদপ্তর আমাদেরকে মনিটরিং করে যাচ্ছে। বছরের পর বছর বলে আসছি আমরা ১টি অধিদপ্তরের অধীনে কাজ করতে চাই। কিন্তু এর কোনো লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। তাই সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মোবাইল কোর্টে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধিত্ব রাখতে হবে। অযাচিতভাবে মোবাইল কোর্ট বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে রামজানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নামে হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতিতে রমজানে রেস্তোরাঁয় ন্যায্যমূল্যে স্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি, বিভিন্ন নেতিবাচক প্রচারণা এবং সরকারি সংস্থার অভিযানের নামে হয়রানি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি ওসমান গনিসহ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ইমরান হাসান বলেন, প্রত্যেকটা অধিদপ্তর বিক্ষিপ্তভাবে তাদের অযাচিত হস্তক্ষেপ/ক্ষোভ ঝাড়ছে রেস্তোরাঁ মালিকদের ওপর। পান থেকে চুন খসলেই কোনো বিশেষজ্ঞ লোক ছাড়াই যে যেভাবে পারছে জরিমানার নামে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আমাদের ব্যবসার সুনাম নষ্ট এবং আর্থিক ক্ষতিসাধন করছে। এভাবে নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমরা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছিলাম। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা অনুরোধ করেছিলাম যে, আমাদের সেক্টরের ৯৫ শতাংশ কর্মী অদক্ষ ও স্বল্প-শিক্ষিত। তাদেরকে আগে ট্রেনিংয়ের আওতায় নিয়ে আসেন এবং আন্তঃমন্ত্রণালয়ে বৈঠক করে আমাদেরকে একটি মন্ত্রণালয়/অধিদপ্তর/সংস্থার অধীনে নিয়ে আসেন। আমাদেরকে একটি গ্রহণযোগ্য এসওপি প্রদান করেন। যার গাইডলাইনে আমরা চলতে পারব। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো সংস্থাই আমাদেরকে সুনির্দিষ্ট কোনো এসওপি দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা মহানগরের দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র তাদের টিম দিয়ে আমাদের পরিচালনার/মনিটরিং করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। যেখানে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও আইসিডিডিআরবিকে যুক্ত করেছেন। কিন্তু প্রধান স্টেক হোল্ডার হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতিকে যুক্ত করা হয়নি। এভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কোনোদিনই সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। বর্তমানে যে পরিস্থিতি, তাতে আমরা ভয় পাচ্ছি, প্রতিবারের মতো এবারো রমজানে আমাদের ওপর বিশাল খড়গ নেমে আসবে। তাই আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে ৯ দফা দাবির তুলে ধরে সংগঠনটি। এরমধ্যে রয়েছে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মোবাইল কোর্টে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধিত্ব রাখতে হবে। হাইকোর্টের অনেক নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও অযাচিতভাবে মোবাইল কোর্ট চলছে, এটা বন্ধ করতে হবে। করোনা মহামারিতে প্রায় ৩০ শতাংশ রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়েছে, যারা টিকে আছে তারাও ধুঁকে ধুঁকে চলছে। এ অবস্থায় ব্যবসায় টিকে থাকতে এ খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতি সরকারের সহযোগিতা জরুরি। সাম্প্রতিক সময়ে চড়া মূল্যস্ফীতিতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। এর মধ্যে বাজারে বেশিরভাগ পণ্যের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে রেস্তোরাঁ খাতে। ব্যবসায় টিকে থাকতে খাবারের দাম বৃদ্ধির বিকল্প নেই। খাবারের দাম বৃদ্ধি করলে ভোক্তারা রেস্তোরাঁয় খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে রাজার নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে রেস্তোরাঁ খতিটি বড় সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে।