
প্রিন্ট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০৫ এএম
কুদস দিবস: আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এক প্রতিরোধের প্রতীক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৫, ০৮:০৮ পিএম

আরও পড়ুন
মরহুম ইমাম খোমেনি যখন রমজানের শেষ শুক্রবারকে আন্তর্জাতিক কুদস দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন, তখন তার লক্ষ্য ছিল ইসলামি বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে ইহুদিবাদের বিরুদ্ধে সুসংহত ফ্রন্টে রূপান্তরিত করা। এই ঘোষণার মাধ্যমে তিনি ফিলিস্তিন মুক্তির ভিত্তি গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন এবং ইসরাইলি দখলদারিত্বের ক্যান্সার দূর করে মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।
আল-আকসা অভিযান এবং প্রতিরোধের নতুন অধ্যায়
বর্তমান সময়ের ‘আল-আকসা ফ্লাড’ (Al-Aqsa Flood) অভিযান প্রমাণ করেছে, ফিলিস্তিনের জন্য জনগণের জাগরণ কেবল ইসলামি বিশ্বেই নয়, বরং পশ্চিমা বিশ্বেও ক্রমবর্ধমান। যদিও বিভিন্ন সরকার এই প্রতিরোধকে দুর্বল করতে চেয়েছে, নিরাশার বীজ বপন করেছে, বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। তবুও প্রতিরোধ অব্যাহত রয়েছে।
ইমাম খোমেনি বিশ্বাস করতেন, কুদস দিবস শুধু ফিলিস্তিনের জন্যই নয়, বরং সমস্ত মুসলিম জাতির মুক্তির দিন। তিনি তার ভাষণে উল্লেখ করেছিলেন, ‘আমি আশা করি বিশ্বব্যাপী একটি ‘বঞ্চিতদের দল’ (Party of the Oppressed) গঠিত হবে, যেখানে সমস্ত নির্যাতিতরা একত্রিত হবে এবং নিজেদের মুক্তির পথে অগ্রসর হবে’।
ইসলামি সংহতি ও প্রতিরোধের শক্তি
ইমাম খোমেনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, মুসলিমদের বড় ভুল ছিল ইসরাইলের জন্মের সময় এটি প্রতিহত না করা। ১৯৭৯ সালে তিনি বলেছিলেন, ‘আরব সরকার ও জাতিগুলোর সবচেয়ে বড় ভুল ছিল তারা ইসরাইলকে জন্মলাভের সুযোগ দিয়েছিল। ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে তারা শুরুতেই এটি ধ্বংস করতে পারেনি, যার ফলে এটি শক্তিশালী হওয়ার সময় পেয়েছে’।
তিনি বারবার ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। বলেছেন, ‘ইসরাইল কুরআন, ইসলামিক আইন এবং আলেমদের উপস্থিতি সহ্য করতে পারে না, কারণ এগুলো তাদের লক্ষ্য অর্জনে বাধা সৃষ্টি করে’।
কুদস দিবস: নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও ভবিষ্যৎ কৌশল
কুদস দিবস মুসলিম সংহতিকে শক্তিশালী করেছে এবং ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আল-আকসা ফ্লাড অপারেশনের পরে, ফিলিস্তিন ইস্যু আবারও মুসলিম উম্মাহর কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে।
মুসলমানদের একত্রিত হয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার এই আহ্বান জানিয়েছিলেন ইমাম খোমেনি।
আজকের পরিস্থিতিতে, কুদস দিবসকে শুধু স্লোগান বা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, এটি থেকে বাস্তব কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। মুসলিম উম্মাহর জন্য ফিলিস্তিন রক্ষার লড়াই সম্মান ও মর্যাদার লড়াই—এটি একটি অস্তিত্বের প্রশ্ন।
(বার্তা সংস্থা মেহের-এ প্রকাশিত নাজাহ মোহাম্মদ আলীর লেখা অবলম্বনে)
ঘটনাপ্রবাহ: হামাস ইসরাইল যুদ্ধ
আরও পড়ুন