ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে সেলিব্রেটিরা বিভক্ত
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৩০ পিএম
ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা সেলিব্রেটিরা বিভক্ত। তারা দুই দেশ নিয়ে নিজস্ব বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। খবর মিডেল ইস্ট আই।
ফ্যাশন মোগল কাইলি জেনার সোশ্যাল মিডিয়ায় ইসরাইলের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করেন। যদিও পরে তিনি পোস্টটি মুছে ফেলেন।
ইনস্টাগ্রামে লেখা বার্তার পাশে ইসরাইলি পতাকা দেখানো হয়েছে। তিনি লেখেন, ‘এখন এবং সর্বদা আমরা ইসরাইলের জনগণের সঙ্গে আছি।’
জেনারের এ ধরনের মন্তব্য ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। অনেকে প্রশ্ন তুলেন, ইসরাইল ৭৫ বছর ধরে ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড দখল করে আছে- এ বিষয়ে তার জ্ঞানের কমতি আছে।
একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘একটি মানচিত্রে মধ্যপ্রাচ্য কোথায় তা জানেন না কাইলি জেনার। এই মডেল তার ৪০০ মিলিয়ন ইনস্টাগ্রাম অনুসারীদের জানাচ্ছেন তিনি ইসরাইলের সঙ্গে দাঁড়িয়েছেন।’
চলমান এ সংকট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন হলিউডের ইসরাইলি অভিনেত্রী গাল গ্যাডট। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস শনিবার ইসরায়েলে আক্রমণ শুরু করার পরে অভিনেত্রী তার ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন, এ বিধ্বংসী ঘটনার কারণে তার হৃদয় ভেঙে গেছে।
‘ওয়ান্ডার ওমেন’ খ্যাত অভিনেত্রী ইসরাইলের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ইনস্টাগ্রামে গাজায় হামলার সংবাদ প্রতিবেদনগুলো শেয়ার করেছেন। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘ফিলিস্তিনি সামরিক গোষ্ঠী হামাসের হাতে গাজায় অন্তত ছয় শতাধিক ইসরাইলিকে হত্যা করা হয়েছে এবং কয়েক ডজন নারী শিশু ও বৃদ্ধকে জিম্মি করা হয়েছে।
ইসরাইলি অভিনেত্রী এবং ওয়ান্ডার ওম্যানের তারকা গাল গ্যাডট, যিনি আগে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর প্রতি সমর্থন দেখিয়েছেন, সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রতি তার প্রতিক্রিয়ার জন্যও সমালোচিত হয়েছিল।
‘আমি ইসরাইলের সঙ্গে আছি আপনারও উচিত’ গ্যাডট ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন।
কৌতুক অভিনেতা সারাহ সিলভারম্যান তার বোন, ভাতিজি এবং ভাগ্নেদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যারা কয়েক মাস ধরে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিতর্কিত বিচারিক সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন।
তিনি বলেন, দুই রাষ্ট্র গঠনের জন্য লড়াই করুন। ইসরাইলিরা হলো ইহুদি ও আরব এবং বিভিন্ন বর্ণের।
ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনকে দোষারোপ করার জন্য সমালোচিত হয়েছেন হাল্ক সিনেমায় অভিনয় করা মার্ক রাফালো।
এক্সের সাংবাদিক এবং লেখক নাথান থ্রালের একটি বার্তা শেয়ার করেছেন ফিলিস্তিনপন্থি এই অভিনেতা। তিনি বলেন, ‘নিরাপরাধ বেসামরিক লোকদের হত্যা এবং জিম্মি করা ভয়ংকর দেখায় এবং এর কোনো যুক্তি নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাদের নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করি, যেমন আমরা গাজার নিরীহ মানুষদের নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করি যারা বোমাবর্ষণ ও অবরোধের শিকার হচ্ছে।’
পেশাদার বক্সার এবং মডেল ইউনেস বেন্ডজিমা উভয় পক্ষকেই দোষারোপ করার জন্য সমালোচিত হয়েছেন। লিখেছেন, ‘আমি পছন্দ করি, কিন্তু আমি পারি না... শুধুমাত্র একটি পক্ষ আছে।’
তিনি ফিলিস্তিনের ভূমি দখল, চলাচলে বিধিনিষেধ, চেকপয়েন্টে ফিলিস্তিনিদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ এবং দখলকৃত অঞ্চলে ইসরাইলি স্নাইপারদের উপস্থিতি তুলে ধরেন।
বেন্ডজিমা আন্তর্জাতিক বৈষম্যের ওপরও জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিরা যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন মানেন না।
ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া ইসরাইলি যুদ্ধবিমানগুলোর ওপরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। এই মডেল বলেন, ‘শিশুরা ভয়ে বিছানায় প্রস্রাব করে দিচ্ছে।’
নিউজিল্যান্ডের সাবেক রাগবি খেলোয়াড় সনি বিল উইলিয়ামস গাজার জন্য প্রার্থনা করেন। তার লেখার সঙ্গে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা।
ইউএস অলিম্পিক ফেন্সার ইবতিহাজ মুহাম্মদ ম্যালকম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন- আপনি যদি সচেতন না হন, তবে গণমাধ্যমগুলো নিপীড়িত লোকদের ঘৃণা করতে এবং যারা নিপীড়ন করছে তাদের ভালোবাসতে শেখাবে।
এদিকে আর্সেনালের ইউক্রেনীয় ফুটবলার ওলেক্সান্ডার জিনচেনকো নিজেকে বিতর্কের মধ্যে ফেলেছিলেন যখন তিনি ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টার অব ডেভিড সমন্বিত একটি ছবি পুনরায় পোস্ট করেন।
ছবির পাশাপাশি তিনি লেখেন, ‘আমি ইসরাইলের সঙ্গে আছি।’
এতে তিনি ভক্তদের কাছ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হন। পরে জিনচেনকো তার পোস্ট সরিয়ে ফেলেন।