ফাইল ছবি
ইসরাইলের দুদিনের হামলায় লন্ডভন্ড হয়ে গেছে জেনিন শরণার্থী শিবির। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই শুধু বিধ্বস্ত আর পুড়ে যাওয়া বাড়ি। রাস্তগুলো ধ্বংসস্তূপে ঢাকা। জায়গায় জায়গায় কাচ আর বুলেটের আবরণ।
জেনিনের ডেপুটি গভর্নর কামাল আবু আল-রুব আনাদোলু নিউজ এজেন্সিকে বলেন, ‘ইসরাইলের আক্রমণে বাড়িঘর ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেনিন শরণার্থী শিবিরের প্রায় ৮০ শতাংশ বাড়ি ধ্বংস, ক্ষতিগ্রস্ত অথবা পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।’ কয়েক ডজন যানবাহন ও ইউটিলিটি লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথাও জানান তিনি।
জেনিন থেকে ইসরাইলের সেনা প্রত্যাহারের পর বাসিন্দারা নিজ বাসভবনের ধ্বংসযজ্ঞে ফিরতে শুরু করেছে। বুধবার জেনিন শরণার্থী শিবিরে নিজ অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে আসেন সিহাম আল-নাজা (৫৩)। এসেই দেখেন অ্যাপার্টমেন্টটির জানালা ভাঙা, আসবাবপত্র উলটানো, দেওয়াল থেকে থেকে ছবি পড়ে গেছে। মেঝেতে ছড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন জিনিসপত্র। তিনি বলেন, ‘কোনো বিদ্যুৎ নেই, জল নেই, কিছুই নেই।’ ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে তিনি পরিবারের অর্থ এবং সোনা চুরির অভিযোগ করেন। যদিও ইসরাইলি সেনাবাহিনী তার অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি। ইসরাইলের হামলায় বিশেষত শিশু ও বয়স্কদের শারীরিক ও মনস্তাত্ত্বিক ক্ষতির কথাও উল্লেখ করেন অনেকে।
জেনিনে ব্যর্থ হয়েছে জাতিসংঘ
ফিলিস্তিন উদ্বাস্তুদের সহযোগিতায় ব্যর্থ হয়েছে জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থা (ইউএনআরডব্লিওএ)। জেনিনের মেয়র নিদাল ওবেদি আল জাজিরাকে এ কথা বলেন। জেনিনের প্রধান প্রশাসক হিসাবে তারা ইসরাইলের বড় আকারের অভিযানের মুখে কোনো সহায়তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, ‘জাতিসংঘ ব্যর্থ হয়ে আমাদের হতাশ করেছে। সংস্থটি দায়িত্ব থেকে তাদের হাত গুটিয়ে নিয়েছে।’
নিদাল ওবেদি আরও বলেন, জেনিনের অনেক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। বিভিন্ন অবকাঠামোসহ পাইপলাইন, সুয়্যারেজ সিস্টেম, এমনকি বৈদ্যুতিক লাইন ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংস হয়ে যাওয়া শরণার্থী শিবির পুনর্র্নির্মাণে জেনিনের পৌরসভা দায়িত্ব নিয়েছে বলে জানান তিনি। আরও বলেন, ক্রুদের সঙ্গে পাশাপাশি তিনিও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ চলছে জেনিনে
শরণার্থী শিবিরের ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো মেরামতসহ বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে জেনিনে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের স্থানীয় সরকারের মন্ত্রী মাজদি আল-সালেহ একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে এ কথা বলেন বলে জানিয়েছে ওয়াফা বার্তা সংস্থা। আল-সালেহ বলেন, ‘নাগরিকদের মৌলিক পরিষেবাগুলো পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে ক্রুরা সম্ভাব্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’