Logo
Logo
×

সাহিত্য

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার দাবির জ্বলন্ত মশাল ‘নিরস্ত্র পদাবলী’ কাব্যগ্রন্থ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৩ পিএম

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার দাবির জ্বলন্ত মশাল ‘নিরস্ত্র পদাবলী’ কাব্যগ্রন্থ

কখনো কখনো কাব্যের ভাষা অস্ত্রের চেয়েও শক্তিশালী হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে কবিতার ভাষাও জনগণের হৃদয় ছুঁয়ে গণদাবিতে পরিণত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।ফলে কবি হেলাল মুহাম্মদের পঁচিশে ফেব্রুয়ারির কাব্যকথন ‘নিরস্ত্র পদাবলী’ বাংলা সাহিত্য ও বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উজ্জ্বল পালক হিসেবে উচ্চারিত হবে। এই বইয়ে শহিদ সেনাদের স্মরণে ভাবের প্রকাশ ও ভ্রাতৃত্ববোধের যেই শব্দজাল কবি বুনেছেন, তা অনন্য। 

শোক-ভালোবাসার পাশাপাশি বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচারের দাবির জ্বলন্ত মশাল এই কাব্যগ্রন্থ। পঁচিশে ফেব্রুয়ারির স্মরণ আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার তীব্র আকাঙ্ক্ষার দীপশিখাকে জ্বালিয়ে রাখবে অনাগত প্রজন্মের জন্য। ওই মতামতগুলো উঠে এসেছে পঁচিশে ফেব্রুয়ারির পূর্বাহ্নে কবি হেলাল মুহাম্মদের কাব্যগ্রন্থ ‘নিরস্ত্র পদাবলী’র মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে। 

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক মোস্তফা মামুন এবং সঞ্চালক ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান।

বইটির লেখক হেলাল মুহাম্মদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক সেনা অফিসার এবং বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাস্টিস অ্যান্ড পিস স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষকতা করছেন। 

বইটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে কবি হেলাল মুহাম্মদ বলেন, ২০০৯ এর ২৫ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারির সেই নারকীয় অন্তর্ঘাত, শাসনিক ব্যর্থতা, আর অপরাজনীতির স্বরূপ যাদের সামনে দৃশ্যমান হয়েছিল, তাদের অনেকের কাছেই হয়তো জীবনের পরিষ্কার দুইটি বিভাজন- পিলখানার আগে ও পরে। খুব কাছ থেকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের বেশ কিছুটা দেখা ও বোঝার সুযোগ আমার হয়েছিল, যার কিছুটা পর্যালোচনা এই কাব্যপ্রচেষ্টার মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাবে।২০১০ আর ২০১১ সালের বিভিন্ন সময়ে লেখা আমার এই পদ্যগুলো পিলখানায় আমাদের সামগ্রিক ব্যর্থতারই একটা ‘সৈনিক প্রতিক্রিয়া’ও বলা চলে। 

তিনি বলেন, সাহিত্যের বিচারে এদের কোনোটিকে শোকের অণুকাব্য বলা যাবে, আর কোনোটি হয়তো স্রেফ ক্ষোভ আর অন্তর্দহনের শাব্দিক প্রকাশ। এটাও হয়তো সত্যি যে, ঠিক পদ্যে নয়; সুকান্তের মতো কোমল-কঠোর গদ্যেই হানতে হবে সেই রক্তাক্ত ইতিহাস। তা সত্ত্বেও এই যাত্রায় কাব্যিক প্রচেষ্টাটা জারি থাকুক। পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে অনেকেই লিখছেন এবং আশা করি লিখে যাবেন, সেটাই কবির কাম্য।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি লেখক-সাংবাদিক ও দেশ-রুপান্তর পত্রিকার সাবেক সম্পাদক মোস্তফা মামুন বলেন, নিরস্ত্র পদাবলীর কবিতা কবি হেলাল মুহাম্মদ কলম বা কিবোর্ড দিয়ে লিখেননি, লিখেছেন রক্তভেজা হৃদয় দিয়ে। দুঃখময় দুর্দিন, রক্তাক্ত অভিজ্ঞতা আর হারানো বন্ধুদের প্রতি ভালোবাসার স্রোতে এটা ঠিক কবিতার বই নয়। অস্ত্র হিসেবে কবিতাকে এমন যুতসইভাবে খুব কম মানুষই ব্যবহার করতে পেরেছে।

অনুষ্ঠানে কবির বাবা সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা নিয়াজ মুহাম্মদ খান বলেন, এই কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার নির্মোহ তদন্তের দাবি আরও জোরালো হবে। পাশাপাশি জুলাই গণ-অভ্যুত্থান এরপর নতুন বাংলাদেশের নবযাত্রার যেই আহ্বান রেখেছেন কবি, আগামীর বাংলাদেশ সেই পথেই যাত্রা করবে সেটাই হোক এই বছরের ফেব্রুয়ারির অঙ্গীকার।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, নিরস্ত্র পদাবলীর কবিতাগুলো পিলখানার নির্মম হত্যাযজ্ঞ অথবা তার অবসানে নিদারুণ রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার বিচারের গণদাবিকে জোরেসোরে তুলে ধরতে পারবে। একই সঙ্গে ন্যায়ভিত্তিক ও সার্বভৌম স্বদেশ গড়তে বাংলাদেশ এবং তার সেনাবাহিনী তাদের অতীত ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য প্রকৃত উদ্যোগী হবে।  

এই কাব্যগ্রন্থটি বের করেছে অপেরা পাবলিকেশন এবং বইমেলার ভাষাচিত্র স্টলে পাওয়া যাবে বইটি। এই বইয়ের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কবিতা হচ্ছে- তোমাদের প্রস্থান, এপিটাফ, শোক দিবস চাই না, উদভ্রান্ত যুবকেরা শোনো, একটি পুরস্কারযোগ্য সফলতার গল্প, আশি ফুট ঘরে, শপথে স্বাধীনতা, কিশোর তোমার জন্যে বিজয়ের গান, যাত্রা শুরু হোক প্রভৃতি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম