Logo
Logo
×

সাহিত্য

সন্ধ্যার পরে জমে উঠছে বইমেলা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৯ পিএম

সন্ধ্যার পরে জমে উঠছে বইমেলা

অমর একুশে বইমেলায় বিকাল থেকে পাঠক-ক্রেতা আসা শুরু করলেও মূলত জমে উঠছে সন্ধ্যার পরে। কেউ অফিস শেষ করে, আবার কেউ শেষ বিকালে মেলায় প্রবেশ করছেন। এছাড়া মেট্রোরেলে উত্তরা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে পৌঁছাতে সময় লাগছে মাত্র ২৫ মিনিট। বিকালের পর থেকে যাত্রীদের বড় একটা অংশ স্টেশনে নেমে বইমেলায় ঢুকছেন। মঙ্গলবারও সন্ধ্যার পর মেলায় প্রবেশমুখে ভিড় বাড়তে থাকে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অনেক পাঠক ও দর্শনার্থীকে মেলায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে।

এদিকে দিন গড়াচ্ছে আর মেলায় ভিড় বাড়ছে। আর একদিন পর অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা। এদিন মেলায় বইপ্রেমী পাঠক, লেখক, দর্শনার্থীদের মাঝে অন্যরকম আবেগ লক্ষ করা যায়। দিবসটি উপলক্ষ্যে মেলায় মানুষের সর্বোচ্চ উপস্থিতি থাকবে বলে আশা করছেন বইমেলাসংশ্লিষ্টরা। অন্য প্রকাশের এক বিক্রয়কর্মী বলেন, এখন যারা বইমেলায় আসছেন তারা ঘুরতে আসার চেয়ে বইয়ের টানেই আসছেন। তারা দেখেশুনে বই কিনছেনও। মঙ্গলবার অমর একুশে বইমেলার ১৮তম দিন ছিল। মেলা শুরু হয় বিকাল ৩টায়, খোলা ছিল রাত ৯টা পর্যন্ত। এদিন নতুন বই এসেছে ৭৯টি। এ নিয়ে এই পর্যন্ত মেলায় মোট নতুন বই এসেছে এক হাজার ৭২৩টি। এর মধ্যে উপন্যাসের বই সবচেয়ে বেশি।

এবারের বইমেলায় কাকাতুয়া প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে আবদুল হাই শিকদারের ছড়ার বই ‘রোজ ফুটি লালকুঠি’। বইটি মেলায় ৮৪২নং স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। সৃজন থেকে প্রকাশিত হয়েছে ড. সফিকুল ইসলামের প্রবন্ধের বই ‘বিতর্কিত বিষয়ে বাতেনি বাতচিত’। এটি মেলায় ২৮৫নং স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। সৃজন থেকে প্রকাশিত হয়েছে কলামিস্ট একেএম শামসুদ্দিনের প্রবন্ধগ্রন্থ ‘ভারত কি কখনো বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র ছিল?’ বইটি সৃজনের ২৮৫নং স্টলে পাওয়া যচ্ছে। তরুণ ইউসুফের কারফিউ দিনের কবিতাও এবারের বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে।

বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘বেলাশেষের শহীদ কাদরী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তারানা নূপুর। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শামস আল মমীন এবং আহমাদ মাযহার। সভাপতিত্ব করেন কবি হাসান হাফিজ।

প্রাবন্ধিক বলেন, বাংলা কবিতায় শহীদ কাদরী সমকালতাড়িত, সংবেদন শাসিত, স্বল্পপ্রজ এবং সত্যসন্ধিৎসু একজন কবি। জীবন ও শিল্পে তিনি অবৈষয়িক, আপাদমস্তক নাগরিক এবং শেষপর্বে বিশ্বনাগরিক। পূর্বাপর সমকাল-সচেতনতা ছিল তার মর্মগত। উন্মেষ-পর্বে কোনো দর্শন, মতবাদ বা নির্দিষ্ট কাব্যাদর্শে তিনি বিশ্বাসী ছিলেন না, তবে শেষপর্বে তিনি মতাদর্শী না হলেও সাম্যবাদের প্রতি গভীরভাবে আস্থাবান ছিলেন।

আলোচকদ্বয় বলেন, প্রবাসে অবস্থানকালে স্বদেশের চিন্তা কবি শহীদ কাদরীকে তাড়িত করেছে। স্বদেশ তার মানসজগতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে ছিল। তিনি ছিলেন পরিশীলনবাদী এবং ব্যক্তি মানুষ হিসেবে মননশীল। শব্দের ইশারা ও প্রতীকের মধ্য দিয়ে তার কাব্য প্রতিভার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। সভাপতির বক্তব্যে হাসান হাফিজ বলেন, বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল ও প্রতিভাবান কবি শহীদ কাদরী স্বতন্ত্র কাব্যভাষা নির্মাণের ক্ষেত্রে একজন পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছেন। তার কবিতার বিষয় ও আঙ্গিক উভয়ই সমান গুরুত্বপূর্ণ। বাংলা কাব্যজগতে তার কবিতা নিঃসন্দেহে চিরস্থায়ী আসনে অধিষ্ঠিত থাকবে।

লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি হাসান হাফিজ এবং গবেষক খান মাহবুব। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি মো. ফজলুল হক এবং কবি আশিকুল কাদির। মঙ্গলবার ছিল মো. মিজানুর রহমানের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা’ এবং সবুজ শামীম আহসানের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কৃষ্টিবন্ধন’-এর পরিবেশনা। এতে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী নোশিন তাবাসসুম স্মরণ, মমিনুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, আলতাফ হোসেন, রুশিয়া খানম, আজিজুল হক খান। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন মো. আব্দুস সাত্তার খান (তবলা), এ কে আজাদ মিন্টু (কী-বোর্ড), মো. হাসান আলী (বাঁশি) এবং মো. ফারুক (অক্টোপ্যাড)।  

আজ বুধবার অমর একুশে বইমেলার ১৯তম দিন। মেলা শুরু হবে বিকাল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘জন্মশতবর্ষ : রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জুলফিকার শাহাদাৎ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন শাহাবুদ্দীন নাগরী। সভাপতিত্ব করবেন সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম