শহিদ নাফিজকে নিয়ে লেখা বই মেলায় আসছে আগামীকাল

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫৩ পিএম

শহিদ নাফিজ। পুরো নাম গোলাম নাফিজ। বনানী বিদ্যা নিকেতন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে সবেমাত্র এসএসসি পাশ করে বাংলাদেশ নৌ বাহিনী কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন। দেশে শুরু হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
কোটা আন্দোলন থেকে এক দফার আন্দোলন শুরু হলে ১৮ জুলাই থেকে জুলাই আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন নাফিজ। ৪ আগস্ট রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় ছাত্রদের সঙ্গে মিছিলে যোগ দেন তিনি। ওই দিন দুপুরে নাফিজ কারওয়ান বাজারে পুলিশের লাঠিপেটা খেয়ে ফার্মগেট এলাকার দিকে দৌড়ে যাচ্ছিলেন।
সেসময় ফ্যাসিস্ট পুলিশের একটি শক্তিধর টিম নাফিজকে ঘিরে এলোপাথারি গুলি করতে থাকে। তার বুকে পিঠে গুলি করে ঝাঝড়া করে দেয়। মৃত্য নিশ্চিত করার জন্য বুট জুতা দিয়ে বুকে মুখে লাথি মারে পুলিশ। এভাবে ভয়ংকরভাবে নাফিজকে হত্যা করে উল্লাস করে পুলিশ।
৫ আগস্ট দ্বিতীয় স্বাধীনতা আসে নাফিজদের রক্তের ওপর দিয়ে। আল জাজিরাসহ দেশ বিদেশের সকল গণমাধ্যমে তার হত্যাকান্ডের মর্মস্পর্শী ঘটনা তুলে ধরা হয়। সর্বশেষ জুলাই গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনেও নাফিজের সেই ছবিটি প্রচ্ছদ করা হয়। রিকশায় ঝুলছে শহিদের দেহ।
সেই নাফিজকে নিয়ে এবার একুশে বই মেলায় বই নিয়ে আসলেন লেখিকা আফরোজা আক্তার সীমা। বইটির নাম করণ করা হয়েছে ‘মুক্তির দ্বারপ্রান্তে যে ছবি কথা বলে’। জলধি প্রকাশনী থেকে বইটি মেলায় আসছে রোববার। মেলা প্রাঙ্গণে সন্ধ্যা ৬ টায় বইটির মোড়ক উন্মোছন করবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, যুগান্তরের নগর সম্পাদক মিজান মালিকসহ গণ্যমান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
সাংবাদিক মিজান মালিক বলেন, পৃথিবীই ভালোভাবে চেনার সুযোগ হলো না এই কিশোর শহিদের। বাবা মায়ের চোখ ফাকি দিয়ে তিনি দেশের জন্য নিজেকে গোটা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন।
নাফিজের ইমিডিয়েট বড় ভাই রাসেল জানান, আন্দোলনের শুরুর দিকে পুলিশের রাবার বুলেট আর হেলমেট পড়া অস্ত্রধারী ছাত্রলীগের হাতে মার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে মা তাকে সুশ্রুষা দিয়ে সুস্থ করে তোলেন। ৪ আগস্ট আন্দোলনকারী ছাত্রদের সঙ্গে নাফিজ গিয়েছিলেন রাজপথে।
পুলিশের উপর্যপুরি গুলিতে রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে নাফিজের মৃতদেহ একটি ফলের ঝুরিতে ভরে ময়লার ড্রেনে ফেলে দেওয়ার জন্য উদ্যত হয় পুলিশ। পাশ থেকে এক রিকশা চালক তা দেখে গুলির মুখে নাফিজের নিথর দেহ নিজের রিকশায় তুলে শহিদ সোহরাওয়ার্দি হাসপাতালে নিয়ে যান। শহিদ নাফিজ বিজয়ের একদিন আগে দেশের জন্য নিজের জীবন দিয়ে আমাদের জন্য নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন।