দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার বলেছেন, ‘বাংলা সাহিত্যে ৬ জন শ্রেষ্ঠ কবি রয়েছেন। তারা হলেন- মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, জসীম উদ্দীন ও ফররুখ আহমদ। এদের মধ্যে মাইকেল মধুসূদন দত্ত ছিলেন খাঁটি বাংলাদেশি কবি।’ 

শনিবার রাতে সাগরদাঁড়ি মধুমঞ্চে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

যুগান্তর সম্পাদক বলেন, ‘মাইকেল মধুসূদন দত্ত খাঁটি দেশপ্রেমিক কবি ছিলেন। তিনি ছিলেন খাঁটি অসাম্প্রদায়িক মানুষ। বাংলা সাহিত্যে তিনিই প্রথম প্রথা ভেঙেছিলেন। কাজী নজরুল ইসলাম রেভুলেশন এনেছেন। মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রিয় ছিল ধূমকেতু। আর নজরুলের পত্রিকা ছিল ধূমকেতু। দুজনেরই প্রিয় ছিল ধূমকেতু।’

তিনি বলেন, ‘মাইকেল মধুসূদন মহাকবি, নজরুল জাতীয় কবি, রবীন্দ্রনাথ বিশ্বকবি। ধ্যানমগ্ন, উড়নচণ্ডী মাইকেল মধুসূদন আধুনিক সনেটের জনক।’

জুলাই বিপ্লবে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আবদুল হাই শিকদার বলেন, ২৪ সালের জুলাই রেভুলেশনে যারা শহিদ হয়েছেন, তারা বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন। 

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাগরদাঁড়িকে মাইকেল মধুসূদন সিটি হিসাবে গড়ে তোলা হোক। ঢাকার সঙ্গে সাগরদাঁড়ি, যশোরের সঙ্গে সাগরদাঁড়ি শাটল বাস চালু করা হোক। সাগরদাঁড়িকে পর্যটননগরী হিসাবে গড়ে তোলা হোক।’ একই সঙ্গে তিনি সাগরদাঁড়িতে মাইকেল মধুসূদন দত্তের নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সুজন সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তানভীর দুলাল, যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের মিজানুর রহমান খান, যশোর সরকারি সিটি কলেজের অধ্যাপক খোন্দকার কামরুল ইসলাম, প্রেসক্লাব যশোরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান কবীর, কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, উপজেলা জামায়াতের রাজনীতি ও আইন বিষয়ক সম্পাদক ওজিয়ার রহমান প্রমুখ। 

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপজেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা বিমল কুণ্ডু ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের যুগ্ম সদস্য সচিব সোহানুর রহমান সোহাগ।

শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে যশোর জেলা প্রশাসন আয়োজিত মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী ও মধুমেলা। সপ্তাহব্যাপী এ অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধন করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার। মধুসূদন দত্তকে স্মরণ ও মেলা ঘিরে কপোতাক্ষ পারের সাগরদাঁড়ি গ্রামে হাজার হাজার মানুষের পদচারণায় মুখরিত মহাকবির পুণ্যভূমি সাগরদাঁড়ি।