প্রতীকী ছবি
আমার চোখ-হাত-পা-মুখ-বুক অথবা হৃদয়
এবং অন্যান্য প্রত্যঙ্গাদির সু-সমন্বিত অবয়বে অনেকেই,
অজ্ঞতাবশত: আমায় মানব সন্তান হিসেবে ঠাওড় করে!
আমার বিশ্বাসের ঘাটতিজনিত কারণে-
ইচ্ছে করেই তাঁদের ভুল ভাঙাইনা আমি!
দৈনন্দিন জীবনে-
বৈষয়িক বিভাজনের বিষয়াবলী একে একে আসে সুমুখে,
অতি সুক্ষ তফাৎ দিবালোকের মতো স্পষ্টরূপে প্রতিভাত হয়-
সামাজিক বৈরিতায় অথবা অতি উৎসাহীর চলনে!
একটি আদর্শ মানুষের মানবিক ভঙ্গিমার খুঁজে-
আমি হেঁটে বেড়াই রাজপথে অলি-গলিতে। অন্নেষণে-
মাত্ৰাতিরিক্ত সময় অতিবাহিত হতে দেখে;
আমার সন্দেহ হয় আরও ঘনীভূত!
একটি প্রশ্নবোধক চিহ্নের সুউচ্চ প্রাচীর-
আমার অটুট বিশ্বাসে ধরায় চীড়!
'আদৌ কি মানুষ', আমি?
নয়টা-ছয়টা অফিসের হাজিরা খাতায়-
দস্তখত করা কেতা দুরস্ত কর্মী নই আমি।
কোনো গেজেটে মুদ্রিত নেই আমার নাম!
দুশ্চিন্তার জ্যামে আটকে থাকা অতিষ্ট জীবন,
গ্লানিময় যৌবনের শত শত ইচ্ছে বিসর্জন দেয়া-
নিভৃতচারী এক সাধারণ কর্মজীবী আমি।
নিছক NID উপস্থাপনার মাধ্যমে নিজেকে মানুষ দাবি-
করাকে মনে হয় মনুষ্যজীবনের চরম অবমাননা।
পৃথিবীর বৃহৎ ব-দ্বীপের বিষাক্ত হাওয়া, দূষিত জল-
কালোবাজারীর জিম্মায় থাকা তেল-নুন-চাল-
গ্যাস অথবা বিদ্যুৎ উপভোগ করি;
পকেটের প্রত্যক্ষ পয়সায়।
পরোক্ষ করের বোঝা কাঁধে নিয়ে-
মুখবুজে প্রদান করি-
অভিশপ্ত জীবনযাপনের কাড়ি কাড়ি আয়কর!
প্রকৃতপক্ষে, মানুষ নই আমি!
আমি বেঁচে আছি এই শহরে, NID'র ছবির মতো-
অস্থিরতার নাগরিক জীবন নিয়ে,
প্রাণের আকুতির প্রতি নতজানু হয়ে;
তোমার প্রতীক্ষার প্রহর গুনে।
মূলতঃ আমি মানুষ নই। আমি-
নগরের নিগড়ে স্থবির জীবন-খাঁচায় বন্দী-
অনন্যপায় নিছক এক নিরীহ নাগরিক।