মশার বংশ বিস্তার রোধ করার পাশাপাশি আক্রমণের পরিমাণ কমানো এবং প্রাকৃতিক উপাদান আর কিছু সাবধানতা অবলম্বন করে মশার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। মশার কামড় থেকে কীভাবে রক্ষা যায় এবং এর করণীয় কী কী তা জেনে নিই।
মূলত গ্রীষ্ম, বর্ষা আর শীত— এ সময় মশার আক্রমণ থেকে বাঁচতে রাসায়নিক যুক্ত নানান ধরনের স্প্রে বা কয়েল ব্যবহার করতে হয়। বাসার কাছে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করতে হবে। মশা নিধনের ক্ষেত্রে সবসময়ই জমে থাকা পানি অপসারণ অপরিহার্য।
এ ছাড়া গরমের সময় ভারি কাপড় পরে থাকা সম্ভব না। তারপরও যতটা সম্ভব পাতলা কাপড়ের ঢিলেঢালা ফুল হাতা জামা ও প্যান্ট পরে দেহের অধিকাংশ অংশ ঢেকে রাখা উচিত। তা হলে মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। কীটপতঙ্গ সাধারণত গাঢ় রঙে আকৃষ্ট হয়। তাই পোশাকের রঙ হতে হবে হালকা বা সাদা। এতে গরমের মধ্যেও স্বস্তি কাজ করবে আর মশাকে আকর্ষণ করবে কম।
এ ছাড়া ফ্যানের বাতাসেও মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। কারণ মশা ওড়ার ক্ষেত্রে তেমন শক্তিশালী না। জোরে বাতাস বইলে তাই এরা স্থির থাকতে পারে না, চলে যায়। আর ঘর, বারান্দা বা উঠানে বসলে স্ট্যান্ড ফ্যানের জোরালো বাতাসে মশার আক্রমণ থেকে কিছুটা নিজেকে রক্ষা করা যায়।
এদিকে ‘রাটগার্স ইউনিভার্সিটি’র কীটবিজ্ঞান বিভাগের পতঙ্গবিশেষজ্ঞ ড. ডিনা ফনসেকা রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেছেন, ‘প্রতি তিন দিন পরপর যে কোনো জমে থাকা পানি পরিষ্কার করতে হবে। কারণ মশার ‘লার্ভা’ বা শূককীট কয়েক দিনের মধ্যেই এসব পানিতে জন্মাতে পারে। তাই বাগানে টবের মধ্যে, যে কোনো গর্ত কিংবা বারান্দায় রাখা পাখির পানির বাটি, ভাঙা পাত্র, নষ্ট টায়ার আর আবর্জনার মাঝে কোনো পানি জমে থাকলে পরিষ্কার করতে হবে নিয়মিত।‘
নেট ব্যবহার করেও মশা দূর করা সম্ভব। কারণ দরজা-জানালায় নেট লাগানোর মাধ্যমে ঘরে মশা ঢোকার রাস্তা বন্ধ করে মশার পরিমাণ কমানো যায়। দিনের শেষে দরজা-জানালা কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা বা অল্প খোলা রাখলে বাসার মশার পরিমাণ কমানো যায়।
এ ছাড়া ধুপের মাধ্যমেও মশা তাড়ানো সম্ভব। যে কোনো ধরনের ধোঁয়া দিয়ে মশা তাড়ানোর পাশাপাশি ধুপের ধোঁয়া দেওয়ারও প্রচলন প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে।
মশা কামড়লে যে অস্বস্তি হয় তার হাত থেকে রেহাই পেতে নানান রকম টোটকা ব্যবহার করা যায়। যেমন—
১. বেকিং সোডার পেস্ট বা মিশ্রণ। অল্প পানি বেকিং সোডায় মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মশা কামড়ানোর জায়গায় লাগানো। ২. ঠান্ডা-ভাপ বা বরফ দিয়ে ঘষা। ৩. গরম ভাপ দেওয়া। ৪. সমপরিমাণ ওটস ও পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে লাগানো। ৫. অ্যালোভেরা জেল।