
প্রিন্ট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২০ পিএম
হানি নাটস খাওয়ার উপকারিতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৮ পিএম

আরও পড়ুন
‘হানি নাটস’ নামটি অনেকের কাছে নতুন মনে হলেও, মধু ও বাদামের সংমিশ্রণ প্রাচীনকাল থেকেই পরিচিত ও জনপ্রিয়। ইতিহাস বলছে, প্রাচীন গ্রিক ও রোমান যুগেও খাবার ও ওষুধ হিসেবে বাদাম ব্যবহার হতো। ফলমূল, শাকসবজি ও মাংসের পাশাপাশি মধু ও বাদামের পুষ্টিগুণের জন্য এগুলোর চাহিদা ছিল বরাবরই বেশি। এছাড়া বাড়তি যত্ন ছাড়াই দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় বলেও এগুলোর কদর রয়েছে।
একটি হানি নাটস প্যাকেজে সাধারণত কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, পেস্তাবাদাম, আখরোট, অ্যাপ্রিকট, মাবরুম খেজুর, আজওয়া খেজুর ও কিশমিশের মতো উপাদান থাকে। চাহিদা ও দামের ওপর ভিত্তি করে অনেক সময় এতে আলুবোখারা, তিল, সূর্যমুখীর বীজ কিংবা চিয়া সিডের মতো পুষ্টিকর বীজও যোগ করা হয়। এসব উপাদানের সঙ্গে পরিমাণমতো মধু মেশানো হয়, যা স্বাদ ও পুষ্টিগুণে যোগ করে নতুন মাত্রা।
সাধারণত ১ কেজির একটি হানি নাটস প্যাকেজে প্রায় ৫০০-৬০০ গ্রাম বাদাম এবং ৪০০-৫০০ গ্রাম মধু ব্যবহার করা হয়। এই সংমিশ্রণ শুধু সুস্বাদুই নয়, বরং শরীরের জন্যও দারুণ উপকারী।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
আমাদের দেহ বিভিন্ন রোগের সাথে লড়াই করার শক্তি পায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার দ্বারা। আমরা নিয়মিত যে খাবার গ্রহণ করি তাতে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এই দিক বিবেচনা করলে দেখা যায় যে হানি নাটে প্রচুর পরিমাণ এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকে। বিশেষ করে মধু এই উপাদান সরবরাহ করার অনেক উৎকৃষ্ট মাধ্যম। তার সাথে বাদাম যোগ হলে এই পুষ্টি গুন আরও বৃদ্ধি পায়।
প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও শক্তি
শরীরের পুষ্টিগুণ নিশ্চিত করতে হলে আমাদের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পাশাপাশি, শর্করা, আমিষ, ফ্যাট, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি উপাদানের প্রয়োজন পড়ে। হানি নাট মিশ্রণ শরীরের পুষ্টি ও শক্তি সরবরাহ করার কারখানা হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ এখানে একই সাথে সকল ধরনের উপাদান পাওয়া যায়।
স্মৃতিশক্তি ও কার্যদক্ষতা বৃদ্ধি
স্মৃতিশক্তি ও কার্যদক্ষতা বৃদ্ধি হওয়ার জন্য আমাদের শরীরের সঠিক মাত্রায় উপকারী পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে হয়। সেদিক বিবেচনা করলে দেখা যায়, হানি নাট পর্যাপ্ত পরিমাণে সেই সকল উপাদান সরবরাহ করে। এ কারণে নিয়মিত হানি নাট গ্রহণ করলে অতি দ্রুত শরীরের দুর্বলতা কেটে যায় এবং মস্তিষ্কের নিউরন সক্রিয় হয়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করার পেছনে দায়ী থাকে এলডিএল কোলেস্টেরল। হানি নাটে থাকা উপাদান গুলো রক্তের এই দূষিত কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণ করে। এতে অতিরিক্ত শর্করা না জমার কারণে রক্ত চলাচল স্বাভাবিকভাবে হয়।
তারুণ্য ধরে রাখে
চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ার কারণ হল দুর্বলতা। হানি নাট এই দুর্বলতা দূর করতে সহায়তা করে। নিয়ম করে নিয়মিত এই মিশ্রণ গ্রহণ করলে শরীরে থাকা দুর্বলতা দ্রুত হ্রাস পায়। অন্যদিকে চেহারায় বয়সের ছাপ কমতে থাকে এবং তরুণতা প্রজ্বলিত হয়।
ঘুমের সমস্যা দূর করে
শরীর যখন দুর্বল বা ক্লান্ত থাকে তখন বেশি বেশি ঘুম পায়। হানি নাট শরীরের এই ক্লান্তিভাব দূর করে এবং মানসিকভাবে সুস্থ রাখে। এতে যেমন ঘুমের সমস্যা দূর হয়, তেমন অতিরিক্ত ঘুম কমে গিয়ে স্বাভাবিক হয়ে যায়।
দাঁতের গোড়া শক্ত করে
দাঁতের গোঁড়াসহ হাড় মজবুত করার জন্য হানি নাটের কোন জুড়ি নেই। এতে থাকা পুষ্টি উপাদান নড়বড়ে দাঁতের মাড়ি শক্ত করে এবং ব্যথা দূর করে। তাছাড়া দাঁতের সর্বাত্মক সুস্থতা নিশ্চিত করতে এই মিশ্রণ অনেক দ্রুত কাজ করে।
রক্ত স্বল্পতা দূর করে
রক্ত স্বল্পতা সমস্যা দেখা দিলে শরীর ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায়। নিয়মিত হানি নাট গ্রহণ করলে এই সমস্যা অনেক দ্রুত সমাধান হয়ে যায়।
কিডনি ও লিভার সুস্থ রাখে
কিডনি ও লিভার সুস্থ রাখা অতি জরুরি। হানি নাটে থাকা উপাদান কিডনি ও লিভার সমস্যা সমাধানে কাজ করে। অর্থাৎ নিয়মিত এই মিশ্রণ গ্রহণ করলে পেটের ও কিডনির সমস্যা থেকে অনেক দূরে থাকা সম্ভব হয়।