
প্রিন্ট: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০২ পিএম
সপ্তাহে ৫ দিন খিচুড়ি খান কারিনা, জানলে আপনিও খাবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম
-67f0faf3a05b7.jpg)
ছবি:সংগৃহীত
মেঘলা আকাশ আর ঝিরঝিরে বৃষ্টি পড়লেই যে খাবারটির জন্য মন উতলা হয়ে ওঠে, তা হলো খিচুড়ি। বাঙালি হেঁশেলে খিচুড়ি মানে কেবল ডাল দিয়ে রাঁধা চাল নয়, তার অনুষঙ্গেই এসে পড়ে লাবড়া, বেগুনি বা ভাজাভুজি। সেই খিচুড়ি তেলতেলে নরম হবে, না কি ভোগের খিচুড়ির মতো আঁটসাঁট, সে নিয়ে নানা মুনির নানা মত রয়েছে।
আবার বাসি খিচুড়ি স্বাদেও বাড়ে— এই মতও আছে। বাঙালির পূজাপার্বণেও এক থালা খিচুড়ি ছাড়া ঠিক জমে না। সেই খিচুড়িই এখন স্বাদে ও গন্ধে ভিন্নতা এনে তারকাদের হেঁশেলেও আলোড়ন তুলেছে। এই যেমন বলিউড অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খান সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, খিচুড়িতেই মন মজেছে তার। সপ্তাহে পাঁচ দিন খিচুড়ি ছাড়া চলেই না তার। সবচেয়ে আরামের খাবার যদি কিছু থেকে থাকে, তা হলে একমাত্র খিচুড়ি।
বাঙালির গোবিন্দভোগ চালের খিচুড়ি না হলেও ওট্স, ডালিয়া, কিনোয়া, সাবুদানা কিংবা বাজরার খিচুড়িকে এখন ‘কমফোর্ট ফুড’ বলছেন অধিকাংশ তারকাই। গাওয়া ঘিয়ের বদলে কোথাও তাতে পড়ছে অলিভ, আবার কোথাও গুচ্ছের শাকসবজি। নিরামিষের পাশাপাশি মাংসের খিচুড়িরই এখন চাহিদা বেশি। কেউ আবার আলাদা আলাদা পদ রাঁধার দিকে যাচ্ছেন না। চাল-ডাল-মাংস মিশিয়ে দিলেই হলো।
কারিনার হেঁশেলেও অনেকটা তেমনই হয়। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তার রাঁধুনিও রোজ একই প্রণালিতে খিচুড়ি রেঁধে চলেছেন। দিনভর শুটিংয়ের পর বাড়ি ফিরে অল্প ঘি ছড়িয়ে রাঁধা খিচুড়ির স্বাদ তার কাছে অমৃতের মতোই লাগে। এখন কথা হলো— কারিনা যে রোজ খিচুড়ি খাচ্ছেন, সেই অভ্যাস কি স্বাস্থ্যকর? এ বিষয়ে নানা মত আছে।
খিচুড়ির মধ্যে অনেক গুণ রয়েছে। সে কারণে চালের কার্বোহাইড্রেট ও ডালের প্রোটিন সবটাই শরীরে ঢোকে। এক থালা খিচুড়ি মানেই তার থেকে পাওয়া যাবে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইবার ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। সবজি মেশালে নানা রকম ভিটামিন ও খনিজ উপাদান।
খিচুড়িতে তেলের প্রয়োগ কম, তাই পেট ভালো রাখে অবশ্যই। শরীর খারাপ হলে বাড়ির বড়রা তো পাতলা খিচুড়িই খাওয়ান। অনেকেই গ্লুটেন খেতে চান না। সে ক্ষেত্রে খিচুড়ি ভালো বিকল্প হিসাবে খাওয়া যায়।
আর চাল আর ডালের মিশেলে তৈরি খিচুড়ি শরীরে পুষ্টি জোগায়। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা থাকলে সে ক্ষেত্রেও খিচুড়ি খাওয়া যেতে পারে। এই খাবার তাড়াতাড়ি হজমও হয়।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে—প্রতিদিন খিচুড়ি খাওয়া কি ঠিক? খিচুড়ি রোজ খেলে তার সঙ্গে আরও নানা জিনিসও খেতে হবে— এমনটাই মত পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর। তিনি বলেন, চালের সঙ্গে কতটা ডাল মেশাচ্ছেন, সেটি খেয়াল রাখা জরুরি। রোজ খুব বেশি পরিমাণে ডাল খেলে প্রোটিনের আধিক্য হবে। যাদের প্রোটিন কম খেতে বলা হয়, তাদের মেপেই খেতে হবে।
পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়িতে যদি সবজি মিশিয়ে খাওয়া যায় তা হলে খুব ভালো। না হলে কেবল কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনই ঢুকবে শরীরে। ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি হতে থাকবে। সে ক্ষেত্রে আলাদা করে সবজি দিয়ে তরকারি, পনির বা দই খেলে ভালো।
ডায়াবেটিস থাকলে রোজ রাতে চালের খিচুড়ি না খাওয়াই ভালো। সে ক্ষেত্রে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এর চেয়ে রাগি, কিনোয়া ও ওটসের খিচুড়ি খেলে উপকার বেশি হবে।