অবহেলা করলেই আক্রান্ত হবেন র্যাবিস ভাইরাসে

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৫, ১২:৩২ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
কুকুর বা বিড়াল কামড়ানোর পরও অনেকেই এখনও ভ্যাকসিন নেন না। এই কারণেই তারা প্রাণঘাতী র্যাবিসের ফাঁদে পড়েন। তাই চিকিৎসকেরা সকলকেই র্যাবিস ভাইরাস নিয়ে সাবধান হওয়ার পরামর্শ দেন। কুকুর আঁচড়ালে বা কামড়ে দিলে শুধু জলাতঙ্কের প্রতিষেধক বা অ্যান্টি-র্যাবিস টিকা নিলেই যে বিপদ কেটে যাবে, তা নয়। নিতে হবে আরও একটি প্রতিষেধক।
‘দ্য ল্যানসেট’ মেডিক্যাল জার্নাল জানিয়েছে, কুকুরের কামড়ে যদি গভীর ক্ষত তৈরি হয়, তা হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই প্রতিষেধক নিতে হবে। তবেই র্যাবিস ভাইরাসের থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
গবেষণাপত্রে গবেষকেরা জানান, প্রতি বছর পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় র্যাবিস ভাইরাসের কারণে। সংখ্যাটি আরও বাড়তে পারে। অনেকেই সময় মতো জলাতঙ্কের টিকাও নেন, কিন্তু তারপরেও শরীরে সংক্রমণ ঘটে। এর কারণ হল, কেবল অ্যান্টি-র্যাবিস টিকা ভাইরাস ধ্বংস করতে পারে না। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, যেমন শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে কুকুর কামড়ে দিলে কেবল ওই একটি টিকা নিয়ে ভাইরাস ঠেকানো যাবে না।
র্যাবিস ভাইরাস খুব দ্রুত দেহকোষের মধ্যে বিভাজিত হয়ে বংশবিস্তার করতে পারে। এই ভাইরাস শরীরের রোগ প্রতিরোধী কোষগুলিকে একের পর এক নষ্ট করতে থাকে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল, টিকা নেওয়ার ৭-১০ দিন পরে ধীরে ধীরে অ্যান্টিবডি তৈরি শুরু হয়। এর মধ্যেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে সারা শরীরে।
গবেষকেরা জানাচ্ছেন, জলাতঙ্কের টিকার পাশাপাশি আরও একটি প্রতিষেধক নিতে হবে, যার নাম র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিউলিন (আরআইজি)। এই প্রতিষেধকটি কৃত্রিম অ্যান্টিবডি দিয়েই তৈরি হয়েছে। ইঞ্জেকশন নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অ্যান্টিবডি রক্তে মিশে যাবে ও ভাইরাসগুলিকে ধ্বংস করতে শুরু করবে।
জলাতঙ্কের টিকার সঙ্গেই র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিউলিন প্রতিষেধক নিলে দ্বিস্তরীয় সুরক্ষাবলয় তৈরি হবে শরীরে। ফলে প্রাণসংশয়ের ঝুঁকি থাকবে না।
ইমিউনাইজ ইন্ডিয়া বলেছে, কুকুর, বিড়াল বা অন্য কোনও স্তন্যপ্রায়ী প্রাণী কামড়ানোর দিনই প্রথম টিকা নিতে হবে। এই টিকাকে বলা হয় জিরো ডে ভ্যাকসিনেশন। এরপর যথাক্রমে ৩, ৭, ১৪ ও ৩০ দিনের মাথায় ভ্যাকসিন নেওয়া জরুরি। এটাই হল র্যাবিস টিকার সূচি। এই নিয়ম মেনে টিকা নিলে প্রায় ১০০ ভাগ ক্ষেত্রে রোগকে হেলায় হারিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব।