অনিদ্রার ওষুধ লুকিয়ে আছে কুমড়া বীজে, জেনে নিন কীভাবে খাবেন

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:২৫ এএম

আপনার দিনভর পরিশ্রমের পর যেমন দুই চোখের পাতা দ্রুত ভারি হয়ে আসে, কারও আবার হয় এর উল্টোটা। আলো বন্ধ করে, দুই চোখ বুজে শুয়েও ঘুম আসতে চায় না। আবার কারও দেখা যায়, ঘুম এলেও মাঝরাতে ভেঙে যায়। জেগে জেগেই রাত কাটে।
ঠিকমতো ঘুম না হলে তার প্রভাব পড়ে শরীর ও মেজাজে। কাজে মন বসানো খুব কঠিন হয়ে পড়ে। এ নিয়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে গবেষণাও চলছে। তবে ঘুম আনতে অনেকে ঘরোয়া টোটকাও বেছে নেন। কেউ বলেন হলুদ-দুধ খেলে ভালো ঘুম হয়। আবার কেউ বলেন, আখরোট, কলাও এ ব্যাপারে সহায়ক হতে পারে। তবে এ সবকিছুর সমাধান দিতে পারে কুমড়ার বীজ। আপনার ঘুম আনতে খাদ্যতালিকায় রাখুন কুমড়ার বীজ।
কুমড়ার বীজ স্বাস্থ্যের জন্য ভালো বলেই অনেকে জানেন। পুষ্টিবিদের মতে, এতে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, জিংক ও ভিটামিন বির মতো উপাদানগুলো ঘুম আনতে সাহায্য করে। শরীরে এই উপাদানগুলোর অভাব হলে ঘুমের সমস্যা শুরু হয়। সেরোটোনিন ও মেলাটোনিনের মতো হরমোনের অভাবেও অনিদ্রার সমস্যা শুরু হয়।
পুষ্টিবিদ রিদ্ধিমা খামসেরা বলেছেন, কুমড়ার বীজে এমন বেশ কিছু উপাদান রয়েছে, যা আপনার ঘুম আনতে সাহায্য করে। আর কুমড়ায় রয়েছে গ্লাইসিন নামে এক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড, যেটি দ্রুত ঘুম আনার পাশাপাশি গভীর ঘুমের সহায়ক হয়। অতীতে গবেষণায় দেখা গেছে, গ্লাইসিন শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে ঘুমের ইঙ্গিত দেয়। উদ্বেগ কমাতেও সাহায্য করে এ উপাদান।
ম্যাগনেশিয়াম
স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত ও শিথিল করে ঘুম আনতে সাহায্য করে ম্যাগনেশিয়াম। শরীরের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ম্যাগনেশিয়ামের ৪০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব মাত্র ২৮ গ্রাম কুমড়ার বীজ থেকেই।
ট্রিপটোফ্যান
কুমড়ার বীজে রয়েছে ট্রিপটোফ্যান নামক একটি উপাদান, যেটি আসলে এক প্রকার অ্যামাইনো অ্যাসিড। ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণ করে সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন নামক দুটি হরমোন। ট্রিপটোফ্যান সেরোটোনিন ক্ষরণে সাহায্য করে। এই সেরোটোনিন রূপান্তরিত হয় মেলাটোনিনে। ঘুম আনতে মেলাটোনিনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
জিংক
এই খনিজ ট্রিপটোফ্যানকে সেরোটোনিনে রূপান্তরিত করে। সেরাটোনিন আবার মেলাটোনিনের উৎপাদনে সাহায্য করে। মেলাটোনিন ঘুম ও জাগরণের শারীরিক চক্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করে। সে কারণে শরীরে জিংকের ঘাটতি হলে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড
ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ কমাতে এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। ঘুমের সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগ গভীর। পরোক্ষে এ উপাদানও ঘুমের পক্ষে সহায়ক।
কীভাবে কুমড়া বীজ খাবেন?
কিডনি ও লিভারের সমস্যা না থাকলে একজন সুস্থ এবং প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ দিনে ২৮-৩০ গ্রাম কুমড়া বীজ খেতে পারেন। বীজ শুকনো কড়ায় নেড়েচেড়ে নিয়ে স্ন্যাক্স হিসাবে অথবা স্মুদিতে মিশিয়ে খাওয়া যায়। স্যুপে ছড়িয়ে বা কুমড়া বীজের মাখনও খেতে পারেন।