গবেষণায় নতুন তথ্যের সন্ধান
শ্বাস পড়া দেখেই ধরা যাবে অ্যালঝাইমার্স

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:৪০ পিএম

মানুষের গড় আয়ু যত বাড়ছে, ততই চার পাশে বাড়ছে এমন মানুষের সংখ্যা, যাদের স্মৃতি দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে। এর নিরাময়ের কোনও ওষুধ এখনও তৈরি হয়নি। তা হলে উপায়? সেই পথেরই সন্ধান করছেন ব্রিটেন ও স্লোভেনিয়ার বিজ্ঞানীরা। অ্যালঝাইমার্স রোগ চিহ্নিত করার নতুন উপায়ের খোঁজ দিয়েছেন তারা।
ব্রিটেনের ল্যাঙ্কাস্টার ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা একটি সমীক্ষা চালিয়েছেন।
তারা দাবি করছেন, শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি পরীক্ষা করলেই ধরা যাবে, কোনো ব্যক্তি অ্যালঝাইমার্সের আক্রান্ত হয়েছেন কি না বা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না। ১৯ জন অ্যালঝাইমার্সের রোগী ও ২০ জন সুস্থ ব্যক্তিকে নিয়ে তারা সমীক্ষাটা চালান।
তার পর দাবি করেন, অ্যালঝাইমার্সের রোগীদের শ্বাসের হার প্রতি মিনিটে ১৭ বার, যেখানে সুস্থ ব্যক্তিদের শ্বাসের হার প্রতি মিনিটে ১৩ বার।
বিজ্ঞানীরা জানান, অ্যালঝাইমার্সের মতো অসুখে শ্বাসপ্রশ্বাসের স্বাভাবিক হার অনেক বেড়ে যায়। এই রোগে মস্তিষ্কে যেহেতু অক্সিজেনের প্রবাহ কমতে থাকে, তাই শ্বাসের হার আর পাঁচজন সুস্থ ব্যক্তিদের থেকে আলাদাই হয়। কেবল শ্বাসের হার নয়, মস্তিষ্কে অক্সিজেনের মাত্রা, হৃৎস্পন্দনের হার, মস্তিষ্কে তরঙ্গের প্রবাহ— সবই পরীক্ষা করে দেখে অ্যালঝাইমার্স রোগ ধরা সম্ভব।
কেন শ্বাসপ্রশ্বাসের হারকেই চিহ্নিত করছেন গবেষকেরা? ব্রিটিশ নিউরোলজিস্ট অ্যানেটা স্টেফানোভাস্কার মতে, একজন সুস্থ ব্যক্তির মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ ও অক্সিজেনের চলাচল, একজন অ্যালঝাইমার্সের রোগীর থেকে অনেকটাই আলাদা।
দেখা গিয়েছে, মস্তিষ্কের রক্তজালক ও স্নায়ুকোষগুলির মধ্যে একটা যোগসূত্রও আছে, যার প্রভাব পড়ে অক্সিজেনের প্রবাহে। যখনই রক্ত চলাচলে বিঘ্ন ঘটে, স্নায়ুর কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখনই শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি অনেক বদলে যায়। এই বদলটা ধরতে মস্তিষ্কে ইলেক্ট্রিক্যাল বা অপটিক্যাল সেন্সর বসানোর প্রয়োজন নেই, অথবা রক্তের নমুনাও নেওয়ার দরকার নেই। অনেক সহজে ও যন্ত্রণাহীন পদ্ধতিতে কেবল শ্বাসের হার দেখেই তা সঠিক ভাবে ধরা সম্ভব কি না, সেই চেষ্টাই হচ্ছে। আরও অনেকের উপর পরীক্ষাটি করে নিশ্চিত ভাবে সেই তথ্য দেওয়া সম্ভব বলেও জানিয়েছেন তিনি।