কৈশোরে পা রাখা সন্তানের খাবার তালিকায় যা রাখবেন
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩২ এএম
ছবি : সংগৃহীত
সন্তানদের লেখাপড়া, স্বাস্থ্য, খাওয়া-দাওয়া নিয়ে বাবা-মায়ের চিন্তার যেন অন্ত থাকে না। বিশেষ করে সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া সন্তানদের নিয়ে তো বলাই বাহুল্য। কেননা, এই সময়টাতে তাদের খাওয়া-দাওয়ায় বিশেষ নজর দিতে হয়।
বয়ঃসন্ধির ছেলে-মেয়েদের বাইরের খাবারের প্রতি ঝোঁক একটু বেশিই থাকে। পিৎজা-বার্গার দেখলে আর বাড়ির খাবার মুখে তুলতে চায় না। তার ওপর এখন মেদ ঝরিয়ে রোগা হওয়ার হিড়িক উঠেছে। অনেকেই না জেনেবুঝে শুধুমাত্র সামাজিক মাধ্যম দেখেই চটজলদি রোগা হওয়ার জন্য বিভিন্ন রকম ডায়েট মেনে চলা শুরু করেছে। ফলে শরীরও দুর্বল হচ্ছে, আর অপুষ্টিজনিত কারণে নানা অসুখবিসুখ লেগেই থাকছে।
এই বিষয়ে ভারতীয় পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, ছোটরা ভালো-মন্দ খেতে চাইবেই। পছন্দের খাবার খেয়েও শরীর সুস্থ রাখা যায়। তার জন্য নিয়ম মেনে চলতে হবে। বাইরের খাবার না দিয়ে বরং বাড়িতেই তেমন খাবার বানিয়ে দিলে খুব ভাল হয়। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার বানিয়ে দিতে হবে। খাবার তালিকায় মিষ্টির পরিবর্তে রাখতে হবে বিভিন্ন রকম মৌসুমি ফল। ঘরের সাধারণ খাবারই যদি ভাল করে সাজিয়ে গুছিয়ে দেন, তা হলেই আগ্রহ করে খেয়ে নেবে সন্তানরা।
এই পুষ্টিবিদ বলছেন, বিভিন্ন রকম ডায়েট প্ল্যান বেরিয়েছে এখন। সেগুলো সকলের পক্ষে মেনে চলা সম্ভব নয়, আবার খরচসাপেক্ষও। অনেকেই বুঝতে পারেন না, বাড়িতে রান্না করা প্রতিদিনের খাবার পরিমিত খেয়েই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় আবার প্রয়োজনীয় পুষ্টিও পাওয়া যায়। বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েকে ঘরের সুষম খাবারই দিতে হবে। প্রথম থেকেই ডায়েট চার্ট ধরিয়ে দিলে তার পুষ্টিই ঠিকমতো হবে না। ফলে বুদ্ধির বিকাশও থমকে যাবে।
ছোট থেকেই বেশি চা বা কফিতে অভ্যস্ত করাবেন না তাদের। এর পরিবর্তে সকালে দুধ-কর্নফ্লেক্স বা দুধ-ওটস দিতে পারেন। যে কোনো মৌসুমি ফল দিনে একটি বা দুটি খেতেই হবে। ফলের মধ্যে আপেল, নাশপাতি, পেঁপে, আঙুর, জাম, আনারস খুব ভালো।
দুপুরের খাবারে ভাত, ডাল, শাকসবজি, মাছ, মাংস বা ডিমের মধ্যে যে কোনো একটি রাখতেই হবে। সবই থাকবে পরিমিত পরিমাণে। সবজি থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ ও ফাইবার পাওয়া যাবে, আর মাছ, মাংস বা ডিম থেকে প্রোটিন ও ফ্যাট। ওজন খুব বেশি হলে এক কাপ ভাতের সঙ্গে রুটি দিতে পারেন, অথবা ব্রাউন রাইস।
সন্ধ্যাবেলা ভাজাভুজির পরিবর্তে ছাতু, অথবা দই-খই বা দুধ-কর্নফ্লেক্স খেতে পারে। রাতের খেতে হবে সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে। হাতে বানানো দুটি রুটি, সঙ্গে এক বাটি চিকেন স্ট্যু, অথবা মাছের ঝোল খেতে পারেন। নিরামিষের মধ্যে পনির বা সয়াবিনের তরকারি অথবা সব সবজি মিশিয়ে তরকারি বানিয়ে দিতে পারেন। রুটি শুধু আটার না খেয়ে আটার সঙ্গে ওট্স মিশিয়ে নিলে ভাল হয়। কিন্তু ময়দা একেবারেই চলবে না।