ছবি : সংগৃহীত
কলাগাছের প্রায় প্রতিটি অংশই কোনো না কোনোভাবে খাওয়া যায়। সুস্বাস্থ্যের জন্য কাঁচকলা যেমন উপকারী, সবজি হিসেবে তেমনি উপকারী কলার মোচা বা কলার ফুল। কলা গাছের ঘনক আকৃতির পেচানো ফুলসহ কাণ্ডকে বলা হয় কলার মোচা। বারমাসী এই সবজি যেমন উপকারী তেমনি সুস্বাদুও। যদিও গ্রামে গঞ্জে অনেকে কলার মোচাকে ফেলনা মনে করেন। অথচ প্রচুর আয়রনসমৃদ্ধ কলার মোচা মানবদেহে রক্ত তৈরি করে।
কলার মোচা সবজি হিসেবে কয়েকরকম ভাবে খাওয়া যায়। এর মধ্যে ভর্তা ও আলুসহ ভেজে খাওয়া খুবই জনপ্রিয়। অনেকে এটিকে চিংড়ি, ইলিশ বা অন্য ছোট মাছের সঙ্গে খেতে ভালোবাসেন।
কলার মোচা সিদ্ধ করে পেঁয়াজ, লবণ ও সরিষার তেল দিয়ে ভর্তা করে খেলে শরীর ঠাণ্ডা থাকে। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য কলার মোচা খুবই উপকারী। যাদের নাক দিয়ে রক্ত পড়ে, তারা কলার মোচা ভর্তা বা ডালনা খেলে উপকার পান।
আসুন জেনে নেওয়া যাক কলার মোচার আরও কিছু উপকারিতা সম্পর্কে:
শরীর গঠন করে
কলার মোচা কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন সমৃদ্ধ একটি সবজি। এটি দেহ গঠনের কাজে সরাসরি সাহায্য করে। বয়স্ক নারী-পুরুষ ও বাড়ন্ত শিশু, খোলায়াড় বা যারা শারীরিক পরিশ্রম বেশি করেন তাদের জন্য এই সবজি আশীর্বাদস্বরূপ।
হিমোগ্লোবিনের উৎস
রক্তের মূল উপাদান হিমোগ্লোবিনকে শক্তিশালী করতে কলার মোচার তুলনা হয় না। দেহে রক্তের পরিমান ঠিক রাখতে বা রক্তশূণ্যতায় ভোগা রোগীদের জন্য কলার মোচা খুব উপকারী। শরীরের রক্ত বাড়াতে সাহায্য করে কলার মোচা।
রক্তশূণ্যতায় কলার মোচা
শিশুর মস্তিষ্কের প্রায় ৭০ ভাগ গঠন মায়ের পেটে থাকাকালে হয়ে যায়। তাই যেসব মা কলার মোচা, কাঁচকলার তরকারি নিয়মিত খান, তাদের রক্তশূন্যতা সহজে আক্রমণ করে না। শুধু শিশুদের জন্য যেকোন বয়সী মানুষ রক্তশূণ্যতায় ভুগলে কলার মোচা খেতে পারেন।
চোখের জন্য উপকারি
কলার মোচায় ভিটামিন-এ থাকায় এটি রাতকানা রোগের বিরুদ্ধে দ্রুত কাজ করে। অকালে দৃষ্টিশক্তি হারানো থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত কলার মোচা খেতে পারেন।
ত্বক ও চুল ভালো রাখে
ত্বক, চুল ভালো রাখতে এই সবজির আয়রন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এতে থাকা ক্যালসিয়াম, আয়োডিন, ম্যাগনেশিয়াম দাঁতের গঠনেও রাখে অগ্রণী ভূমিকা।
সাবধানতা
অতিরিক্ত আয়রণ থাকায় কলার মোচা বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই কলার মোচা থেতে হবে পরিমিত পরিমাণে। তবে মোচা টাটকা খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা কলায় রয়েছে:
প্রোটিন১.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০ মিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৪.০ গ্রাম, ফসফরাস ২৯ মিগ্রাম, ভিটামিন ‘এ’ ৩০ আই. ইউ, লৌহ ৬.২৭ মিগ্রাম, ফ্যাট ০.২ গ্রাম, আঁশ ০.৭ গ্রাম, পটাশিয়াম ১৯৩ মিগ্রাম, অক্সালিক এসিড ৪৮০মিগ্রাম, ভিটামিন ‘সি’ ২৪ মিগ্রাম, রিবোফ্লেবিন .০২ গ্রাম, থায়ামিন .০৫ মিগ্রাম।