ফাইল ছবি
বর্তমানে আধুনিক ফ্যাশনের অবিচ্ছেদ্য অংশ জিন্স প্যান্ট। প্রশ্ন হতে পারে জিন্সের রঙ কেন নীল হয়? এটি কিন্তু নিছক কাকতালীয় নয়; বরং ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং মনস্তাত্ত্বিক কারণের সংমিশ্রণের ফলাফল।
১৯ শতকে ডেনিম ফ্যাব্রিক তার স্থায়িত্ব এবং দৃঢ়তার জন্য ছিল বিখ্যাত। প্রথম ওয়ার্কওয়্যার পোশাক তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়েছিল এই কাপড়। ইন্ডিগোফেরা উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত নীল রঙ ছিল সেই সময়ের সবচেয়ে সহজলভ্য এবং টেকসই রঞ্জক। এই ডাইটি অন্যান্য রঙের বিকল্পগুলোর তুলনায় বেশ সুবিধাজনকও ছিল।
পেটের মেদ বাড়িয়ে দেয় যে ১০ অভ্যাস
কারণ এটি মোটা ডেনিম ফ্যাব্রিকের সঙ্গে ভালোভাবে লেগে থাকে। এমনকি অনেকবার ধোয়ার পরেও বিবর্ণ হয় না। এই ব্যবহারিকতা এবং স্থিতিস্থাপকতা দ্রুত নীল জিন্সকে শ্রমিক এবং খনি শ্রমিকদের মধ্যে একটি জনপ্রিয় পোশাকে পরিণত করে।
জিন্স ওয়ার্কওয়্যার থেকে ফ্যাশন স্টেটমেন্টে রূপান্তরিত হয়েছে, সাংস্কৃতিক কারণেও নীলের সাথে তরুণদের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে।
বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, নীল জিন্স বিদ্রোহ এবং যুব প্রতিকূলতার প্রতীক হয়ে ওঠে। 'রেবেল উইথআউট অ্যা কজ' এর মতো চলচ্চিত্র সেসময় ডেনিমের সাথে যুক্ত বিদ্রোহী চিত্রটিকে জনপ্রিয় করে তোলে, এই ধারণাটিকে আরও দৃঢ় করে যে নীল জিন্স তারুণ্যের স্বাধীনতার প্রতিনিধিত্ব করে। এই সাংস্কৃতিক পরিবর্তন জিন্সের রঙ হিসেবে নীলকে আরও পাকাপোক্ত করে।
নীলের একটি অনন্য মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব রয়েছে। নীল রঙ শান্ত, বিশ্বাস এবং নির্ভরযোগ্যতার প্রতীক।
এই রঙটি প্রশান্তি এবং স্থিতিশীলতার অনুভূতি জাগিয়ে তোলে, এটি জিন্সের মতো দৈনন্দিন পোশাকের জন্য একটি আদর্শ পছন্দ বলে অনেকেই মনে করেন তাই।
ফ্যাশন শিল্প বিশ্বব্যাপী প্রসারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নীল জিন্সের আধিপত্য আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। লেভিসের মতো বিখ্যাত ডেনিম ব্র্যান্ডগুলো দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য নীল জিন্সকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
এই ব্র্যান্ডিং নীল জিন্স এবং আধুনিকতার মধ্যে একটি শক্তিশালী সংযোগ তৈরি করেছে, যা তাদের বিশ্বায়নের প্রতীক করে তুলেছে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া