ঈদে বিভিন্ন ধরনের খাবারের আয়োজন করা হয়ে থাকে। তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ঈদের দিন সকালে মিষ্টিমুখ।
মিষ্টিমুখের কথা বলতে চাইলে প্রথমে খাবার তালিকায় রাখতে হয় সেমাই। ঈদে প্রিয়জনদের জন্য তৈরি করতে পারেন সেমাই, জর্দা, খাসির মাংসের রেজালা ও বোরহানি।
আসুন জেনে নিই কীভাবে তৈরি করবেন-
সেমাই
তৈরির উপকরণ: এক প্যাকেট সেমাই, ৪ টেবিল চামচ ঘি, দুই কাপ চিনি, ২ টেবিল চামচ কিশমিশ, ৩ টেবিল চামচ ভাজা চীনা বাদাম, এক কাপ কুরানো নারিকেল, দুটি তেজপাতা, ৩ টুকরো দারুচিনি, দুই কাপ পানি ও স্বাদমতো লবণ।
যেভাবে তৈরি করবেন-
প্রথমে কড়াইতে ঘি দিয়ে সামান্য গরম করে চিনি দিন। এবার প্যাকেট সেমাইয়ের অর্ধেকটা ঢেলে ১০-১৫ মিনিট নাড়তে থাকুন। যেন সেমাইটা ঘিয়ে ভাজা হয়। এর পর কুরানো নারিকেল দিয়ে নাড়ুন।
কিছুক্ষণ পর পানি দিয়ে আঁচ কমিয়ে নাড়তে থাকুন। পানি শুকিয়ে এলে বাদাম, কিশমিশ, তেজপাতা, দারুচিনি দিয়ে আরও ১০ মিনিট হালকা আঁচে দমে রাখুন। সেমাই ঝরঝরে হলে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
জর্দা
তৈরির উপকরণ: চিনিগুঁড়া চাল এক কেজি, কালিজিরা এক কাপ, চিনি এক কাপ, পানি পরিমাণমতো, কমলা বা আনারসের রস ১/৪ কাপ, এলাচ কয়েকটা, দারুচিনি এক টুকরো, তেজপাতা একটা, লং কয়েকটা, ঘি তিন-চার টেবিল চামচ, ফুড কালার সামান্য এক চিমটি লবণ, মোরব্বা কুচি, বাদাম কুচি, মালাই।
যেভাবে তৈরি করবেন-
চাল এক ঘণ্টা ভিজিয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। একটা চওড়া হাঁড়িতে চাল, পানি, ফুড কালার, আস্ত গরম মসলা, সামান্য এক চিমটি লবণ আর দেড় থেকে দুই টেবিল চামচ ঘি দিয়ে মাঝারি আঁচে ঢেকে রান্না করুন। বাকি ঘি পরে ব্যবহার করবেন।
১০ মিনিটের মধ্যে পানি প্রায় শুকিয়ে আসবে। এর মধ্যে আর চামচ দিয়ে নাড়ানাড়ি করবেন না, তাতে জর্দা আঠালো হয়ে যাবে। এখন চিনি আর আনারস বা কমলার রস দিয়ে, বাকি ঘি দিয়ে হালকা হাতে একবার নেড়ে দিন। পানি শুকিয়ে গেলে এখন আধা ঘণ্টার মতো দমে রাখুন। অনেক ঝরঝরে হয়ে যাবে এই দমে রাখার ফলে। একটা পাত্রে ছড়িয়ে পরিবেশন করুন। দু-তিন ঘণ্টা পরে আরো ঝরঝরে হয়ে যাবে। মোরব্বা, মালাই, কাটা বাদাম, ছোট ছোট লালমোহন দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।
খাসির মাংসের রেজালা
তৈরির উপকরণ: খাসির মাংস দুই কেজি, আদা বাটা দুই টেবিল চামচ, রসুন বাটা দুই চা চামচ, পেঁয়াজ বাটা এক কাপ, হলুদ গুঁড়া দুই চা চামচ, মরিচের গুঁড়া দুই চা চামচ, জিরার গুঁড়া দুই চা চামচ, ধনে গুঁড়া দুই চা চামচ, পোস্তদানা বাটা দুই টেবিল চামচ, তেল এক কাপ, ঘি দুই টেবিল চামচ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, কাঁচামরিচ আট/দশটি, তেজপাতা দুটি, দারুচিনি তিন টুকরা, এলাচ চারটি, পেঁয়াজ কুচি দুই কাপ, আলু ছয়টি, কেওড়া জল এক টেবিল চামচ।
যেভাবে তৈরি করবেন-
খাসির মাংস টুকরো করে কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। হাঁড়িতে তেল গরম করে দারুচিনি, এলাচ ও তেজপাতার ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ বাদামি করে ভাজুন। এবারে মাংস ও লবণ দিয়ে ১০-১৫ মিনিট ভেজে নিন।
মাংস ভাজা হলে পোস্তদানা বাটা ও জিরার গুঁড়া বাদে অন্যান্য বাটা মসলা দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে ঢেকে দিন। ১০-১৫ মিনিট পর ঢাকনা খুলে এক কাপ গরম পানি দিয়ে মাঝারি আঁচে কিছুক্ষণ রান্না করুন এবং ঢেকে দিন।
এবার আলু ছিলে লম্বালম্বি মাঝখান থেকে কেটে দুই টুকরা করে দিন। পানি শুকিয়ে এলে আরও এক থেকে দেড় কাপ গরম পানি দিয়ে আলু এবং কাঁচামরিচ দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিন। ১০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে জিরা গুঁড়া ও পোস্তদানা বাটা দিয়ে নেড়ে আবারও ঢেকে দিন। আলু সেদ্ধ হয়ে গেলে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা খুলে প্রয়োজন হলে আরো সামান্য পানি ও কেওড়া দিয়ে হালকা নেড়ে ঢেকে দিন। মাংস মজে তেল অল্প ছাড়লে এক টেবিল চামচ ঘি দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিন। ১০ মিনিট পর চুলা বন্ধ করে দমে রাখুন কিছুক্ষণ। রান্না শেষ, পরিবেশন করুন।
বোরহানি
তৈরির উপকরণ: মিষ্টি দই দুই কাপ, টক দই দুই কেজি, কাঁচামরিচ কাটা দুই চা চামচ, পুদিনা পাতা বাটা দুই চা চামচ, সরিষা বাটা দুই চা চামচ, বিট লবণ দুই চা চামচ, পানি পরিমাণমতো, চিনি দুই টেবিল চামচ, লবণ দুই চা চামচ, সাদা গোলমরিচের গুঁড়া দুই চা চামচ।
যেভাবে তৈরি করবেন-
কাঁচামরিচ, পুদিনা পাতা, একসঙ্গে বেটে নিন। বিট লবণ পাটায় গুঁড়া করে করে নিতে হবে। উপরের উপকরণগুলো একসঙ্গে অল্প পানি দিয়ে গুলে দইয়ের মধ্য দিতে হবে। এবার মিষ্টি দই, টক দইসহ সব উপকরণ ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করুন। এরপর বরফ কুচি ও পুদিনা পাতা দিয়ে ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করুন বোরহানি